একুশে বইমেলা

দর্শনার্থীরা প্যাভিলিয়নে, স্টলে হাহাকার

করোনা মহামারিতে এবারের বইমেলা হওয়া নিয়েই ছিল সংশয়। নানা জল্পনা কল্পনার মধ্য দিয়ে বইমেলা শুরু হলেও করোনার প্রভাবে সংকটের মধ্য দিয়েই যাচ্ছে বইমেলা। কিছু পাঠক এলেও তারা প্যাভিলিয়নে ভিড় জমাচ্ছেন। ফলে নিস্তব্ধতায় রয়েছে স্টলগুলো।

Advertisement

সরেজমিনে দেখা যায়, প্যাভিলিয়নগুলোতে দর্শনার্থী-ক্রেতারা রয়েছে। প্রকাশক আর বিক্রয়কর্মীরাও সেখানে রয়েছেন ব্যস্ততায়। কিন্ত হাহাকার রয়েছে স্টলে। ক্রেতা না থাকায় অলস সময় কাটাচ্ছেন স্টল মালিক ও বিক্রয়কর্মীরা। ফলে হতাশা প্রকাশা করছেন স্টল মালিকরা। চরম ক্ষতির আশঙ্কাও করছেন তারা।

বেহুলা বাংলা স্টলের ম্যানেজার বলেন, শুরু থেকেই আমাদের বিক্রি নেই। তার মাঝে হঠাৎ লকডাউন পড়ায় রাজধানীতে মানুষ নেই। পাঠক আসবে কিভাবে? কিছু পাঠক আসলেও তারা প্যাভিলিয়নগুলোতে ভিড় জমাচ্ছেন। এমতাবস্থায় আমাদের ব্যয় উঠানো অসম্ভব হয়ে পড়েছে। তার মাঝে স্টলের কর্মীদের বেতন দেব কিভাবে, সেটা নিয়েই চিন্তায় আছি।’

তিনি আরো জানান, ‘প্যাভিলিয়নগুলো বিভিন্ন কারুকার্যে তৈরি করায় মানুষ সেখানে যায়। প্যাভিলিয়নগুলোর মতো বই আমরাও রাখি, কিন্তু আমাদের এখানে ক্রেতা নেই।’

Advertisement

ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটের পাশেই একটি স্টল ‘সুবর্ণ’। এ স্টলের কর্মীরা অলস সময় কাটাচ্ছেন। তারা জানান, আমাদের এখানে ক্রেতারা খুবই কম আসেন। কিন্ত আমরা ভালো বই রেখেছি। তাছাড়া মেলায় লোকজন আসে চারটার সময়, এই এক ঘণ্টায় কিছু পাঠক আসলেও তারা প্যাভিলিয়নে ভিড় জমাচ্ছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ক্ষুদে প্রকাশক জানান, এবারের মেলায় স্টল ও প্যাভিলিয়ন ম্যানেজমেন্টে অনেক বৈষম্য হয়েছে। প্যাভিলিয়নগুলো মেলা চত্বরের মাঝখানে না রেখে গোটা চত্বরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখা হতো, তাহলে এমন সমস্যা হতো না। বইপ্রেমীরা গোটা মেলার সমস্ত স্টলগুলোই দেখার সুযোগ পেত। স্টল বিন্যাসের ক্ষেত্রে সবদিক বিবেচনায় আনা উচিত ছিল আয়োজকদের।

বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান জুড়ে একই চিত্র দেখা যায় বই মেলার স্টল ও প্যাভিলিয়নগুলোতে। কিছু কিছু স্টল মেলা এক ঘন্টা বাকি থাকতেই বন্ধ করে চলে যাচ্ছে।

বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রায় ১৫ লাখ বর্গফুট জায়গা জুড়ে ১৮ মার্চ শুরু হয়েছে এবারের অমর একুশে গ্রন্থমেলা। একাডেমি প্রাঙ্গণে ১০৭টি প্রতিষ্ঠানের ১৫৪টি স্টল রয়েছে। আর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের অংশে ৫৪০টি প্রতিষ্ঠানকে ৮৩৪টি ইউনিট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মূল পয়েন্টে প্যাভিলিয়ন রয়েছে ৩৩টি। এবারই প্রথম সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মূল মেলা প্রাঙ্গণে এসেছে লিটলম্যাগ চত্বর। ১৩৫টি লিটলম্যাগকে ৫টি উন্মুক্তসহ ১৪০ স্টল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

Advertisement

রায়হান আহমেদ/এমএইচআর/জেআইএম