কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) বন্ধ ক্যাম্পাসে দিন দিন চুরি-ছিনতাইয়ের ঘটনা বেড়েই চলেছে। ঢিলেঢালা নিরাপত্তা ব্যবস্থায় অরক্ষিত ক্যাম্পাসে পরিণত হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। সম্প্রতি কয়েকটি চুরির ঘটনা ঘটে গেলেও ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে দুষ্কৃতকারীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে বহিরাগত প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও লকডাউনের মধ্যেই অবাধে ঘোরাফেরা করছে বহিরাগত। ফলে ক্যাম্পাসে ছিনতাইয়ের মতোও ঘটনা ঘটছে।
Advertisement
বুধবার (৭ এপ্রিল) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ৭০ বছরের এক বৃদ্ধকে মারধর করে তার উপার্জনের একমাত্র বাহন ভ্যান ছিনতাইয়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের পাশের মেহগনি বাগানে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী বৃদ্ধ কালু মণ্ডল বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী শীতলীডাঙ্গা গ্রামের মৃত আজগর মণ্ডলের ছেলে। এ ঘটনায় তিনি ইবি থানায় লিখিতভাবে অভিযোগ দায়ের করেছেন।
ইবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
Advertisement
তিনি বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শনে পুলিশ পাঠিয়েছি। আগামীকাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সহায়তায় সিসিটিভি ফুটেজ দেখে ছিনতাইকারীকে শনাক্ত করা হবে।’ ভুক্তভোগী ওই বৃদ্ধ বলেন, ‘অজ্ঞাত এক ব্যক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের থানা গেট থেকে যাত্রী বেশে আমার ভ্যানে উঠে ক্যাম্পাসের দিকে যেতে বলেন। তিনি ক্যাম্পাসের কোথায় যাবেন এটা আমাকে নির্দিষ্ট করে বলেননি। আমি সরল মনে তাকে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করি। তিনি আমাকে পুরো বিশ্ববিদ্যালয় ঘুরতে বললে আমি ক্যাম্পাসে কয়েকবার চক্কর দেই। একপর্যায়ে মেডিকেলের সামনে ভ্যান নিয়ে থামি। এসময় তিনি আমাকে স্কুলের দিকে যেতে বললে সেখানে নিয়ে যাই। স্কুলের পাশে ভ্যান থামালে লোকটি মেহগনি বাগানের দিকে যান। এসময় তিনি ১০০ টাকার নোট দিয়ে বলেন, এক প্যাকেট সিগারেট এনে দিয়ে বাকি টাকাটা নিয়ে নিতে। আমি সিগারেট আনার জন্য রওনা দিলে পেছন থেকে এসে আমাকে মারধর শুরু করেন। আমি অজ্ঞান হয়ে পড়ে যাই।’
‘জ্ঞান ফিরলে দেখি ওই লোকটি নেই এবং আমার ভ্যানটিও নেই। এ ভ্যানই আমার একমাত্র সম্বল ছিল। ভ্যানটি না পেলে আমাকে না খেয়েই দিন কাটাতে হবে।’
ওই বৃদ্ধের প্রতিবেশী ফারুক আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, ‘তিনি খুবই গরিব। ভ্যান চালিয়ে পরিবার চালান। ভ্যানটি হারিয়ে তিনি খুবই ভেঙে পড়েছেন। ভ্যানটি ফিরে পেতে আমরা পুলিশ প্রশাসনের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারে বহিরাগত প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছি। লকডাউনে ভ্যানচালকরা আবাসিক এলাকায় মালামাল নিয়ে প্রবেশ করতে পারবে। কিন্তু তিনি কাকে নিয়ে প্রবেশ করেছেন তা বলতে পারছেন না। নিরাপত্তাকর্মীরা না বুঝে তাকে প্রবেশের অনুমতি দিয়েছেন। আগামীকাল সিসিটিভি ফুটেজ চেক করে জড়িত ব্যক্তিকে শনাক্ত করা হবে।’
Advertisement
রায়হান মাহবুব/এসআর/এমএস