বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) কেবিন ব্লকের প্রবেশদ্বারের বাইরে রিকশার সিটে বসে আছেন তরুণ এক রিকশাচালক। মাথার ওপর কড়া রোদের তাপে ঘামছেন তিনি। রঙিন একটি গামছা মাথায় বাঁধার পাশাপাশি মুখেও পেঁচিয়ে রেখেছেন।
Advertisement
মুখে মাস্ক কেন পরেননি এ প্রশ্ন করতেই হকচকিত হয়ে রিকশাচালক বলেন, মুখে মাস্ক পরে বেশিক্ষণ রিকশা চালালে দম বন্ধ হয়ে আসে। তাছাড়া গরমে মাস্ক ভিজে যায়।
করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধিতে তিনি নিজেও উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, গামছা দিয়ে মাস্ক বানিয়ে মুখে পেঁচিয়ে রাখেন। মাঝে মাঝে খুলে ঘামও মোছেন। এতে কোনো সমস্যা আছে কি না তা জানতে চান।
শুধু তরুণ এই রিকশাচালকই নন, রাজধানীর বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মধ্যে মাস্ক পরিধানের ব্যাপারে সচেতনতা অনেক বেড়েছে। লকডাউনের আগেও অধিকাংশ মানুষ মাস্কবিহীন ঘোরাফেরা করলেও গত দুদিনে এ পরিস্থিতি পাল্টে গেছে। জীবন-জীবিকার তাগিদে যারা ঘরের বাইরে বের হচ্ছেন, তাদের প্রায় সবাই মুখে মাস্ক পরিধান করছেন।
Advertisement
বুধবার (৭ এপ্রিল) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সরেজমিনে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, শ্রেণি-পেশা নির্বিশেষে সবার মধ্যেই মাস্ক পরিধানের প্রবণতা বেড়েছে। সরকার ঘোষিত লকডাউনের আজ তৃতীয় দিন চলছে। লকডাউন পালনে মানুষের মধ্যে নেতিবাচক প্রবণতা লক্ষ্য করা গেলেও মাস্ক ব্যবহারে সব শ্রেণি-পেশার মানুষের মধ্যেই মাস্ক পরিধানের ইতিবাচক প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে।
বর্তমানে দেশে করোনার সংক্রমণ বেড়েই চলছে। মঙ্গলবার দেশে একদিনে সর্বোচ্চ সংক্রমণ ও মৃত্যুর নতুন রেকর্ড হয়। এর আগে ৫ থেকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত সাতদিনের লকডাউন ঘোষণা করা হলেও আজ থেকে আবার সিটি করপোরেশন এলাকায় গণপরিবহন চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হয়।
লকডাউনের তৃতীয় দিনে আজ বুধবার থেকে রাজধানীতে গণপরিবহন চলাচল শুরু হয়। সকালের দিকে গণপরিবহনে যাত্রীর চাপ থাকলেও দুপুরে যাত্রী একেবারেই কমে যায়। লকডাউনে দোকানপাট খুলে দেয়ার দাবিতে বঙ্গবাজার, ইস্টার্ন প্লাজা ও বসুন্ধরা মার্কেটের মালিক-কর্মচারীরা মানববন্ধন করেন।
তারা বলেন, সব ধরনের স্বাস্থ্যবিধি মেনে দোকান খুলতে চান তারা। তারা আশা করছেন আগামীকাল বৃহস্পতিবার এ ব্যাপারে সরকারের কাছ থেকে ভালো কোনো খবর পাবেন।
Advertisement
লকডাউনের সময়সীমা বাড়বে নাকি লকডাউন প্রত্যাহার হবে, তা আগামীকাল জানানো হবে বলে জানান সেতুমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
সরেজমিনে দেখা গেছে, রাজধানীর নীলক্ষেত ও কাঁটাবনের বিভিন্ন দোকানের বিক্রেতাদের কেউ কেউ সরকারের নির্দেশনার অপেক্ষা না করে দোকান খুলে বসেছেন। পুলিশ এলে তারা দোকান বন্ধ করেন, আবার চলে গেলে খুলে দেন বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
পুলিশকেও গত বছরের মতো এবার লকডাউনে কঠোর হতে দেখা যায়নি।
এমইউ/এমএইচআর/জিকেএস