দেশজুড়ে চলমান লকডাউনে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে যাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এছাড়া সন্ধ্যা ৬টার পর নিত্য পণ্যের দোকানও বন্ধ রাখার কথা থাকলেও সিলেটে রাতে অবৈধভাবে পণ্য বিক্রি করছে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) -এর ট্রাকগুলো।
Advertisement
লকডাউনের প্রথম দিন সোমবার (৫ এপ্রিল) রাত ৯টায় সিলেট নগরের বন্দরবাজার এলাকায় ট্রাকে করে টিসিবির পণ্য বিক্রি করতে দেখা যায়। এ সময় ক্রেতাদের একজন আরেকজনের সঙ্গে গা ঘেঁষে, গাদাগাদি করে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে পণ্য কিনতে দেখা গেছে। কাউকেই স্বাস্থ্যবিধি মানতে দেখা যায়নি। তাদের ট্রাকসেল কর্তৃপক্ষের কেউও দূরত্ব বজায় রেখে লাইনে দাঁড়াতে বলেননি।
সিলেট বিভাগের চার জেলায় রমজান মাস উপলক্ষে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) এর কার্যক্রম চলতি মাসের ১ তারিখ থেকে শুরু হয়। চার জেলার ২৭ টি পয়েন্টে প্রতিদিন ট্রাকে করে টিসিবি থেকে তেল, ডাল, চিনি, ছোলা, পেঁয়াজ ও খেজুর বিক্রি করা হচ্ছে। আর সিলেট নগরের ৮টি পয়েন্টে প্রতিদিন ট্রাকে করে টিসিবির পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে।
নগরের বাগবাড়ি পিডিবি মসজিদ মোড়, মদিনা মার্কেট, আলিয়া মাদ্রাসা মাঠ, রিকাবীবাজার, টিলাগড় পয়েন্ট, আম্বরখানা পয়েন্ট, রেজিস্টারি মাঠ ও শাহী ইদগাহ পয়েন্টে টিসিবির পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে। তবে এসব পয়েন্টে দিনের বেলা আড়াইটার আগে কোথাও ট্রাকসেল করতে দেখা যায়নি। বেলা শেষে নগরের আটটি পয়েন্টের অনন্ত চারটিতে ট্রাক নিয়ে পণ্য বিক্রি করতে দেখা যায়। ফলে সারাদিন অপেক্ষায় থাকা লোকজন লাইনে দাঁড়ালে দীর্ঘ লাইনের সৃষ্টি হয়। এছাড়া রাতে অপর চার পয়েন্টে ট্রাকসেল করতে দেখা গেছে।
Advertisement
লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা রহমত আলী নামের এক ব্যক্তি বলেন, টিসিবির বিক্রেতাদের দিনে পাইনি। রাতে পণ্য বিক্রি করছে শুনে এসেছি। লকডাউনে রাতে স্বাস্থ্য বিধি না মেনে লাইনে দাঁড়ানো প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সকাল থেকে বিক্রি শুরু হলে এ অবস্থা হতো না। এখন লকডাউন মানলে তো না খেয়ে মরতে হবে। তাই ঝুঁকি নিয়ে হলেও কম দামে টিসিবি পণ্য ক্রয় করছি।
এদিকে টিসিবির ট্রাকসেলের বিক্রেতার নাম জিজ্ঞেস করলে তিনি তা বলতে রাজি হননি। এত রাতে পণ্য বিক্রির বিষয়ে তিনি বলেন, দিনের বেলায় নগরের অন্যত্র গিয়েছিলেন পণ্য বিক্রি করতে। সেখানে সব বিক্রি করতে পারেননি। এজন্য রাতে বন্দরবাজারে এসে পণ্য বিক্রি করছেন।
বাগবাড়ি পিডিবি মোড়ে গভীর রাতে টিসিবির ট্রাকসেল করা প্রসঙ্গে টিসিবির ডিলার মারুফ আহমদ বলেন, জিনিসপত্র দিনের বেলা বিক্রি না হওয়ায় রাতে বিক্রি করছি। এতে দোষের কিছু নেই। আমরা সচ্ছতার ভিত্তিতে বিক্রি করছি।
এ বিষয়ে সিলেট বিভাগের টিসিবি আঞ্চলিক কার্যালয়ের প্রধান মো. ইসমাইল মজুমদারের বক্তব্য জানতে তাঁর মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
Advertisement
লকডাউনে রাতে টিসিবির পণ্য বিক্রি প্রসঙ্গে সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (গণমাধ্যম) বিএম আশরাফ উল্যাহ তাহের বলেন, এই বিষয়টি আমাদের জানা ছিল না। আমরা এটি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেব।
প্রসঙ্গত, সিলেট বিভাগে ১৬১ জন টিসিবি ডিলার রয়েছেন। তারা পর্যায়ক্রমে প্রতিদিন ২৭ জন করে পণ্য বিক্রি করছেন। তবে পণ্য মজুদের উপর ভিত্তি করে ট্রাকসেল বাড়ানো বা কমানো হতে পারে। রমজানে যেসব পণ্যের বেশি চাহিদা থাকে, সেগুলোর ১০ থেকে ১২ শতাংশ টিসিবির মজুত রয়েছে।
ছামির মাহমুদ/এমএইচআর/এমকেএইচ