দেশজুড়ে

সালথায় সংঘর্ষে নিহত যুবকের দাফন সম্পন্ন

করোনা মোকাবিলায় বিধিনিষেধ কার্যকর করতে ফরিদপুরের সালথায় লোকজনকে পেটানো হয়েছে এমন অভিযোগে সোমবার (৫ এপ্রিল) রাতে থানা ও উপজেলা কমপ্লেক্স ঘেরাও করেন স্থানীয় লোকজন। এ সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও সহকারী কমিশনারের (ভূমি–এসি ল্যান্ড) গাড়িতে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে লোকজনের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কয়েক দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

Advertisement

এসব ঘটনায় একজন নিহত হন বলে পুলিশের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে। নিহত যুবকের নাম জুবায়ের (১৯)। তিনি রামকান্তপুর ইউনিয়নের রামকান্তপুর গ্রামের মৃত আশরাফ আলীর ছেলে।

এছাড়াও ৫ ঘণ্টাব্যাপী এ সংঘর্ষের সময় র‌্যাব-পুলিশের ৭ সদস্যসহ প্রায় শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন।

ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. আলীমুজ্জামান বলেন, পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে আছে। পুলিশ লাশটি উদ্ধার করতে পারেনি। লাশটি পরিবারের কাছে আছে বলে পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে।

Advertisement

তিনি আরও বলেন, লকডাউনের প্রথম দিনে সরকারি নির্দেশনা পালন করতে গিয়ে স্থানীয় জনতার সঙ্গে কর্মকর্তাদের ভুল বোঝাবুঝি হয়। রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষার্থে পুলিশ টিয়ার গ্যাস ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

তিনি আরও জানান, পরিস্থিতি এখন তাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আর কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে সেজন্য অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে। তাছাড়া কয়েক প্লাটুন বিজিবি চাওয়া হয়েছে। এ ঘটনার সাথে জড়িতদের দ্রুতই আটকের চেষ্টা চালানো হচ্ছে।

তিনি বলেন, হামলার সময় র‌্যাব ও পুলিশের আটজন সদস্য আহত হয়েছেন। ঘটনার সাথে জড়িতদের চিহ্নিত করতে সিআইডির ক্রাইম টিম কাজ শুরু করেছে। এছাড়া হামলার ঘটনায় অংশ নিয়েও অনেকে গুলিবিদ্ধ ও আহত হয়েছেন যাদের পরিচয় জানা যায়নি।

এদিকে সংঘর্ষে নিহত জুবায়েরের লাশ মঙ্গলবার সকালে বাড়ির আঙিনায় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।

Advertisement

সোমবার সারারাতের তাণ্ডবের পর মঙ্গলবার(৬ এপ্রিল) সকালে সালথা উপজেলা সদরে গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় ভবনের বিভিন্ন সরকারি অফিস ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে উপজেলা ত্রাণের গুদাম ও কৃষি অফিস।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসভবন ও উপজেলা চেয়ারম্যানের বাসভবনেও ভাংচুর করা হয়েছে।দুটি বিলাসবহুল সরকারি ও দুটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। সাতটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়েছে। দুটি মোটরসাইকেল হামলাকারীরা নিয়ে গেছে।

উল্লেখ্য, সোমবার(৫ এপ্রিল) ফরিদপুরের সালথায় লকডাউন চলাকালে বাজারের একটি দোকন বন্ধ করা নিয়ে ও সালথা উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) সঙ্গে থাকা এক সরকারী কর্মচারীর লাঠিপেটায় এক ব্যক্তির গুরুতর আহত হওয়াকে কেন্দ্র করে উপজেলা পরিষদ, থানা ও সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কার্যালয়সহ বিভিন্ন অফিস ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে স্থানীয় বিক্ষুব্ধ জনতা।

এফএ/এমকেএইচ