দেশজুড়ে

সালথা উপজেলা পরিষদ-থানা-ভূমি অফিসে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ, আহত ৩০

ফরিদপুরের সালথায় উপজেলা পরিষদ, থানা ও সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কার্যালয়সহ বিভিন্ন অফিসে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ করেছে স্থানীয় বিক্ষুব্ধ জনতা। এ ঘটনায় পুলিশসহ ৩০ জন আহত হয়েছেন।

Advertisement

সোমবার (৫ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১০টায় এ ঘটনা ঘটে।

পরে ফরিদপুর, ভাঙ্গা ও পার্শ্ববর্তী থানার অতিরিক্ত পুলিশ, গোয়েন্দা পুলিশ ও র‍্যাব ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশিকুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

Advertisement

এছাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বাসভবন, উপজেলা কৃষি অফিস, সাব-রেজিস্ট্রি অফিস, উপজেলা চেয়ারম্যানের বাসভবনেও ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। এসময় ইউএনও এবং সহকারী কমিশনারের (ভূমি) গাড়িও পুড়িয়ে দেয়া হয়। এতে সালথা উপজেলা সদর এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।

জানা যায়, সোমবার (৫ এপ্রিল) বিকেলে সালথা বাজারে একটি দোকান বন্ধ করা নিয়ে সালথা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) হীরা মনির সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হয় এক দোকান মালিকের। এসময় সহকারী কমিশনার (ভূমি) পুলিশ ডেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালালে দোকানদাররা পুলিশের ওপর হামলা চালায়।

এছাড়া একইদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় সালথা উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের ফুকরা বাজারে চা খেয়ে ওই ইউনিয়নের নটাখোলা গ্রামের মৃত মোসলেম মোল্যার ছেলে মো. জাকির হোসেন মোল্যা বাড়ি ফিরছিলেন। এসময় সেখানে লকডাউনের কার্যকারিতা পরিদর্শনে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মারুফা সুলতানা খান হিরামণি উপস্থিত হন।

জাকির হোসেনের অভিযোগ, কিছু বুঝে ওঠার আগেই সহকারী কমিশনারের গাড়ি থেকে নেমে এক ব্যক্তি তার কোমরে লাঠি দিয়ে আঘাত করেন। এতে তার কোমর ভেঙে যায়।

Advertisement

আহত জাকির হোসেনকে উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এদিকে জাকির হোসেনকে আহত করার খবরে সেখানে উপস্থিত জনতা উত্তেজিত হয়ে ওঠে। কিছুক্ষণের মধ্যে সেখানে আরও গ্রামবাসী জড়ো হয়।

পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেখানে সালথা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে একদল পুলিশ পৌঁছালে উত্তেজিত জনতা হামলা করে। এতে মিজানুর রহমানের মাথা ফেটে যায়। এরপর তারা সালথা থানা অভিমুখে রওনা হয়ে থানা ঘেরাও করে।

প্রত্যক্ষদর্শী নুরুল ইসলাম বলেন, আমি অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গেছি। সন্ধ্যায় উপজেলা পরিষদে গিয়ে আটকে যাই। চারদিকে শুধু ধোঁয়া দেখতে পাই। কোনোরকমে দোতলা থেকে লাফ দিয়ে নেমে পালিয়ে বের হয়ে আসি।

সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশিকুজ্জামান বলেন, সহকারী কমিশনারের কাছ থেকে খবর পেয়ে ফুকরা বাজারে পুলিশ পৌঁছায়। সেখানে পুলিশের ওপর হামলা করা হয়। এতে এসআই মিজানুর রহমানের মাথা ফেটে যায়। তাকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

সালথা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ওয়াদুদ মাতুব্বর বলেন, আমার বাসভবনসহ বিভিন্ন অফিসে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে।

ফরিদপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আলিমুজ্জামান বিপিএম বলেন, লকডাউনের প্রথম দিনে সরকারি নির্দেশনা পালন করতে গিয়ে স্থানীয় জনতার সঙ্গে কর্মকর্তাদের ভুল বোঝাবুঝি হয়। পরে স্থানীয়রা ক্ষুব্ধ হয়ে উপজেলা পরিষদ, থানা ও উপজেলা চেয়ারম্যানের বাসভবনসহ বিভিন্ন অফিস ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষার্থে পুলিশ টিয়ার গ্যাস ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

সহকারী কমিশনার (ভূমি) মারুফা সুলতানা খান হিরামণিকে ফোন দিলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

এমআরএম/এসএমএম/জিকেএস