দেশজুড়ে

কিছুতেই স্বাস্থ্যবিধি মানছে না মানুষ

গাজীপুরের কালীগঞ্জে জ্যামিতিক হারে বাড়ছে করোনা রোগী। উপজেলায় একদিনে ২৮ রোগীর সমুনা সংগ্রহে ১৪ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হলেও স্থানীয়দের মাঝে কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই। মানুষ কোনোভাবেই স্বাস্থ্যবিধি মানছে না।

Advertisement

খোদ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেই মানছে না স্বাস্থ্যবিধি। বহির্বিভাগে রোগীদের উপচেপড়া ভীড় হলেও তাদের মাঝে নেই সামাজিক বা শারীরিক দূরত্ব। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে জনশক্তির অভাবে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বহির্বিভাগে সামাজিক বা শারীরিক দূরত্ব কার্যকর করা সম্ভব হচ্ছে না।

রোববার (০৪ এপ্রিল) দুপুরে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বহির্বিভাগে পুরুষ ও মহিলা কাউন্টারে দুইজন লোক রোগীদের নাম, ঠিকানা, বয়স ও রোগ সম্পর্কিত তথ্য নিয়ে কম্পিউটারে এন্ট্রি দিয়ে তারপর রোগীদের টিকেট দিচ্ছে। এতে করে একজন রোগীর জন্য প্রায় ৪/৫ মিনিট সময় লেগে যাচ্ছে। যে কারণে অন্য রোগীদের ভীড় চোখে পড়ার মতো। একজনের গা ঘেঁষে অন্যজন দাঁড়িয়ে আছে। অনেকের মুখেই মাস্ক নেই। অনেকে আবার সঙ্গে শিশুও এনেছেন।

কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিসংখ্যান বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৪শ থেকে সাড়ে ৪শ রোগী হয়। ওই পরিমাণ রোগীদের জন্য হাসপাতালের বহির্বিভাগে মাত্র ৩টি কাউন্ডার রয়েছে। যেখানে ৩ জন মাত্র লোক রয়েছে ৪০০-৪৫০ রোগীর টিকিট দেয়ার জন্য।

Advertisement

এরমধ্যে শিশু কাউন্টারটি বন্ধ থাকায় নির্দিষ্ট জেন্ডার অনুযায়ী পুরুষ-মহিলা কাউন্টারে কাজ হচ্ছে। আর ওই কাউন্টার বন্ধের কারণ সেখানে যিনি সেবা দিতেন তিনি কর্তমানে করোনায় আক্রান্ত।

কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. মিনহাজ উদ্দিন মিয়া জানান, সর্বশেষ এ উপজেলা থেকে ২৮ জনের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। এতে ১৪ জন রোগীর শরীরে করোনা রোগের ভাইরাস পাওয়া গেছে। এরমধ্যে কালীগঞ্জ পৌরসভায় ৪, নাগরী ইউনিয়নে ৩, তুমলিয়া ইউনিয়নে ৪ ও বাড়ীয়া ইউনিয়নে ৩ জন রোগী। এ পর্যন্ত এ উপজেলায় করোনায় ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। মোট ৪ হাজার ৮৬৮ নমুনা সংগ্রহ করে ৬৩১ জন রোগীর শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। তবে মোট শনাক্তের মধ্যে ৫৩১ জন রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ী ফিরেছেন।

হাসপাতালে সামাজিক দূরত্বের ব্যাপারে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা জানান, ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণির ৩৬ জন কর্মচারী সংকট রয়েছে। যে কারণে রোগীদের সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না। এ কাজ করতে জনবল দরকার। এছাড়াও ১৫ জন চিকিৎসকের পদ এখনও শূন্য। যদি তা পূরণ করা যেত তাহলে চিকিৎসা সেবা আরও দ্রুত দেয়ার পাশাপাশি সেবার মানও উন্নত হত। তাছাড়া শত সমস্যাতেও কোনো রোগী চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে এলে তাকে ফেরত দেয়া হয় না। আব্দুর রহমান আরমান/এফএ/এমএস

Advertisement