হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগরীর মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হকের দাবি করা দ্বিতীয় স্ত্রী জান্নাত আরা জান্নাত ওরফে ঝরনার পরিচয় মিলেছে। তার গ্রামের বাড়ি ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের কামারগ্রাম-কুলধর গ্রামে। তার বাবার নাম ওয়ালিয়ার রহমান। তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও কামারগ্রাম ৪ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি।
Advertisement
আলফাডাঙ্গা উপজেলাজুড়ে এখন ঝরনাকে নিয়েই চলছে আলোচনার ঝড়। তবে জান্নাতের আগে বিয়ে হয়েছে ও দুটি সন্তান আছে। এ কথা সবাই জানলেও দ্বিতীয় বিয়ের কোনো খবরই জানে না এলাকাবাসী।
মামুনুল হকের দাবি মতে, সঙ্গে থাকা ওই নারী তার দ্বিতীয় স্ত্রী। তার নাম আমেনা তৈয়াবা। ইসলামি শরিয়ত মোতাবেক ওই নারীকে তিনি বিয়ে করেছেন। তবে ওই নারী নিজেকে জান্নাত আরা জান্নাত বলে পরিচয় দেন।
এ খবর ফেসবুক ও গণমাধ্যমে প্রচারের পর জান্নাত আরা ঝরনার গ্রামের বাড়ি আলফাডাঙ্গায় ছড়িয়ে পড়লে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। সংবাদ পেয়ে শনিবার রাতে ঝরনার গ্রামের বাড়িতে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার বাবা-মায়ের মোবাইল ফোনগুলো বন্ধ পাওয়া যায়। রাত সোয়া ১২টার দিকে বাড়িতে গিয়েও যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরা।
Advertisement
কামারগ্রামের বাসিন্দা ও আলফাডাঙ্গা থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক ‘আমাদের আলফাডাঙ্গা’ পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক সেকেন্দার আলম জানান, এ ঘটনা প্রচারের পর অনেকেই জানার জন্য মোবাইলে ফোন করেন। জান্নাত আরা নাম হলেও আমাদের এলাকায় তিনি ঝরনা নামে পরিচিত। বিয়ে হয়েছে খুলনায়। দুটি ছেলেও আছে। তবে পরের বিয়ের খবর জানা নেই। আজ শুনলাম ও খবরে দেখলাম।
গোপালপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মনিরুজ্জামান ইকু জানান, ঝরনার বাবা ওয়ালিয়ার রহমান একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি আমার সময়ের কমিটির কামারগ্রাম ৪ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ছিলেন। পরে তাকে সভাপতি করা হয়। বর্তমান কমিটিতে উনি সভাপতির দায়িত্বে আছেন।
তবে তিনিও বিয়ের কথা শুনে আশ্চর্য হয়ে বলেন, ‘আবার বিয়ে হইছে তাতো শুনিনি। গ্রামবাসী কেন পরিবার জানে কিনা সন্দেহ।’
ওয়ালিয়ার রহমানের (ঝরনার বাবা) বাড়ির পাশের বাসিন্দা কামারগ্রাম আদর্শ ডিগ্রি কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আতাউর রহমান সাইক্লোন বলেন, ঝরনার বাবা ওয়ালিয়ার ভাই একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। সহজ সরল মানুষ। তার মেয়ের আগে বিয়ে হয়েছে। তার দুই ছেলেও আছে। পরে বিয়ে হয়েছে কি-না জানি না। তবে তার পরিবারও সম্ভবত জানে না। জানলে গ্রামবাসী অন্তত জানতো।
Advertisement
উল্লেখ্য, হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগরীর মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক শনিবার (৩ এপ্রিল) এক নারীকে নিয়ে সোনারগাঁয়ের রয়েল রিসোর্টের ৫০১ নম্বর কক্ষে ওঠেন। পরে স্থানীয়রা খবর পেয়ে ওই রিসোর্টে ঘেরাও করে।
এ ঘটনায় ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে বলতে শোনা যায়, মামুনুল এক নারীসহ আটক হয়েছেন। যদিও ওই নারীকে নিজের স্ত্রী বলে দাবি করেছেন মামুনুল হক। আর পুলিশ বলেছে, মামুনুলকে ঘেরাওয়ের খবরে তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে নিরাপত্তা দিয়ে রেখেছে। শনিবার সন্ধ্যায় রিসোর্ট থেকে মামুনুল হককে স্থানীয় একটি মসজিদে নিয়ে যান হেফাজত নেতাকর্মীরা।
মামুনুল হক দাবি করেন, সঙ্গে থাকা ওই নারী তার দ্বিতীয় স্ত্রী। তার নাম আমেনা তৈয়াবা। ইসলামি শরিয়ত মোতাবেক ওই নারীকে তিনি বিয়ে করেছেন। যদিও ওই নারী নিজেকে জান্নাত আরা জান্নাত বলে পরিচয় দেন।
এফএ/বিএ/এমএস