লকডাউনের খবরে বাড়তি পণ্য কিনতে ক্রেতারা বাজারে হুমড়ি খেয়ে পড়ায় রোববার সকাল হতেই রাজধানীর বাজারগুলোতে পেঁয়াজের দাম বেড়ে গেছে। কেজিতে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে পাঁচ টাকা।
Advertisement
এর আগে গতকাল শনিবার সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানান, করোনাভাইরাসের প্রকোপ উদ্বেগজনক হারে বাড়ায় আগামী সোমবার (৫ এপ্রিল) থেকে এক সপ্তাহের জন্য লকডাউন দিতে যাচ্ছে সরকার।
লকডাউনের এই সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে শনিবার দুপুর থেকে রাজধানীর বাজারগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় বেড়ে যায়। পেঁয়াজ, রসুন, আদা, আলুসহ বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে দোকানে দোকানে ভিড় করেন ক্রেতারা।
ক্রেতারা বাড়তি পণ্য কেনার কারণে সন্ধ্যার পরপরই কোনো কোনো খুচরা দোকানে পেঁয়াজ শেষ হয়ে যায়। রোববার সকালে পাইকারি বাজারে গিয়ে তারা দেখেন পেঁয়াজের দাম কেজিতে পাঁচ টাকা বেড়ে গেছে।
Advertisement
এ বিষয়ে মালিবাগ হাজীপাড়ার ব্যবসায়ী মো. জাহাঙ্গীর বলেন, লকডাউনের খবর গতকাল দুপুর থেকেই বাজারে ক্রেতাদের ভিড় বেড়ে যায়। সবাই অতিরিক্ত পেঁয়াজ কিনতে শুরু করেন। গতকাল রাত পর্যন্ত পেঁয়াজ ৩০ টাকা কেজি বিক্রি করেছি। আজ যে দামে কেনা পড়েছে তাতে ৩৫ টাকা কেজি বিক্রি করছি। তবে আলু, রসুন ও আদার দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
খিলগাঁওয়ের ব্যবসায়ী আসাদ আলী বলেন, সবাই বাড়তি পেঁয়াজ কেনার জন্য যেভাবে হুমড়ি খেয়ে পড়েছে, তাতে দাম তো বাড়বেই। গতকালের তুলনায় আজ পেঁয়াজের দাম কেজিতে পাঁচ টাকা বেড়ে গেছে। তবে আমাদের ধারণা কয়েকদিনের মধ্যে পেঁয়াজের দাম কমে যাবে। কারণ একদিকে বাজারে নতুন পেঁয়াজ আসছে, অন্যদিকে বাড়তি কেনার কারণে বাজারে পেঁয়াজের চাহিদা কমে যাবে।
শ্যামবাজারের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাজী মোহাম্মদ মাজেদ জাগো নিউজকে বলেন, পেঁয়াজের দাম বাড়বে এটা স্বাভাবিক বিষয়। কারণে বাজারে মাল নেই। আমাদের ধারণা সামনে দাম আরও বাড়বে। পাইকারিতে গতকাল ২৩-২৪ টাকা কেজি বিক্রি করা পেঁয়াজ আজ ৩১-৩২ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
এর আগে তো আপনি জানিয়েছিলেন বাজারে হালি পেঁয়াজ (ভালো মানের দেশি পেঁয়াজ) আসলে রোজার ভেতরে দাম কমতে পারে। তাহলে এখন দাম বাড়তে পারে এমন কথা বলছেন কেন? এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, হালি পেঁয়াজ বাজারে আসা শুরু হয়ে গেছে। এখন দাম বাড়লে সমস্যা কী? দাম বাড়লে চাষি তো কিছু টাকা পাবেন।
Advertisement
গতকাল এই ব্যবসায়ী জাগো নিউজকে বলেন, লকডাউনের সংবাদ আমরা শুনেছি। এ নিয়ে আমরা গভীর উদ্বেগের মধ্যে আছি। গতবছর আমরা যে লোকসান খেয়েছি তার ধাক্কাই এখনও সামলে উঠতে পারিনি। এখন আবার লকডাউন দেয়ায় কী হবে বলতে পারছি না।
তিনি বলেন, এখনও আমাদের কাছে পেঁয়াজের ভালো মজুত রয়েছে। আজ পেঁয়াজের দাম বাড়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি। গতকালের মতো আজও পেঁয়াজের কেজি ২৩-২৪ টাকা বিক্রি হচ্ছে। ক্রেতারা অস্বাভাবিক আচরণ না করলে এখান থেকে দাম বাড়ার সম্ভাবনা কম। কিন্তু বাজারে মালের সংকট হলে তখন স্বাভাবিকভাবেই দাম বেড়ে যাবে।
এমএএস/বিএ/এমএস