জাতীয়

শিল্প স্থাপনে সরকারের নতুন পরিকল্পনা

যত্রতত্র শিল্পকারখানা নির্মাণের প্রবণতা বন্ধে নতুন পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। এ জন্য নগর উন্নয়ন অধিদফতরকে (ইউডিডি) নতুন প্রকল্পের ছক তৈরির নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী ইতোমধ্যে ‘বাংলাদেশের যত্রতত্র শিল্প প্রতিষ্ঠান স্থাপনের সমস্যা, উপায় নিরূপণ এবং শিল্প এলাকা সুনির্দিষ্টকরণ সংক্রান্ত সমীক্ষা’ শীর্ষক একটি পরিকল্পনা গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।শিল্প প্রতিষ্ঠান স্থাপনের জন্য সরকার বিভিন্ন সময় নানা ধরনের পরিকল্পনা নিয়ে থাকে। তবে বাংলাদেশ এখনও শিল্প উন্নয়নে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জন করতে সক্ষম হয়নি। সরকার নতুন যে পরিকল্পনা নিতে যাচ্ছে সে ক্ষেত্রে পূর্বের পরিকল্পনাগুলো কেন কাজে আসেনি, সে বিষয়টিকে গুরুত্বের সাথে দেখা দরকার।বাংলাদেশের পরে অনেক রাষ্ট্রই শিল্প বিপ্লব সাধনে সক্ষম হলেও বাংলাদেশ এখনও রয়েছে অনেকটাই প্রাথমিক পর্যায়ে। এর কারণ সঠিকভাবে মূল্যায়ন না হলে আগামী দিনের জন্য নেওয়া কোনো পরিকল্পনাই কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাবে না। অন্যদিকে, অপরিকল্পিত শিল্প স্থাপনের ফলে দেশ যেমন দায়গ্রস্ত হয়েছে, তেমনি কৃষিপ্রধান এই দেশের উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ভূমি কৃষকের হাত ছাড়া হয়েছে। সরকার যদি এ ব্যাপারে আন্তরিক হয়ে থাকে, তাহলে শিল্পকে সুনির্দিষ্ট অবকাঠামোর আওতায় আনা হবে, প্রথম শর্ত। এর মাধ্যমে সরকার কোথায় ভারী শিল্প বা মৌলিক শিল্প স্থাপন করবে আর কোথায় হালকা বা ক্ষুদ্র শিল্প স্থাপন করবে সে ব্যাপারেও সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা থাকতে হবে এবং এই পরিকল্পনার আওতায় প্রয়োজনীয় যোগাযোগ ব্যবস্থাও গড়ে তুলতে হবে। পাশাপাশি শিল্পের কাঁচামাল এবং দক্ষ জনশক্তির যোগানও নিশ্চিত করতে হবে। এ ছাড়া উৎপাদিত পণ্যের অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বাজারের নিশ্চিয়তাও সুনির্দিষ্টভাবে যাচাই-বাছাই করতে হবে। শুধুমাত্র একটি পরিকল্পনা নিলেই কোনো দেশ শিল্পায়িত হবে আজকের বিশ্বে তেমনটা সম্ভব নয়। কারণ, গ্লোবালের এই যুগে প্রতিটি শিল্পকে টিকে থাকতে হলে তাকে বিশ্বের তাবৎ সমশিল্পের সাথে প্রতিযোগিতা করতে হয়। এ ছাড়া পুঁজির যোগানের নিশ্চয়তা না থাকলে কোনো পরিকল্পনাই শেষ পর্যন্ত কাজে আসবে না। সে জন্য প্রথম দরকার পুঁজি, আকৃষ্ট করার মতো সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় স্থিতিশীলতা। শুধুমাত্র পরিকল্পনার জন্য পরিকল্পনা নিলে তাতে কিছু ব্যক্তি লাভবান হবে মাত্র। দেশের উন্নয়নে তেমন কোনো কাজে আসবে না।

Advertisement