কাছ থেকে আগ্নেয়গিরির উত্তাপ ও সৌন্দর্য উভয়ই উপভোগ করতে পর্যটকরা ভিড় জমাচ্ছেন বিভিন্ন সক্রিয় আগ্নেয়গিরিতে। যে কোনো সময় এসব আগ্নেয়গিরি ধ্বংস হয়ে এর লাভা ছড়িয়ে পড়তে পারে দিগ্বিদিক।
Advertisement
তবুও ভ্রুক্ষেপ নেই পর্যটকদের। ঝুঁকিপূর্ণ হওয়া স্বত্ত্বেও অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমীরা ভিড় করছেন আগ্নেয়গিরির আশেপাশে। সম্প্রতি ন্যাশনাল জিওগ্রাফির এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, ২০২০ সালের শেষের দিক থেকে চলতি বছরে আগ্নেয়গিরিগুলোতে জ্বলন্ত লাভা দেখতে পর্যটক সমাগম বেড়েছে। যা হতে পারে মৃত্যুঝুঁকির কারণ।
প্রায় ২০০০ সালের পর থেকে এবারই প্রথম আইসল্যান্ডের ফাগ্রাদালসফজাল আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুত্পাত দেখতে কয়েক হাজার মানুষ ভিড় জমিয়েছেন গিল্ডিংডালুর উপত্যকায়। ফটোগ্রাফার ক্রিস বার্কার্ড সেখানকার কিছু ছবি ক্যামেরাবন্দি করেছেন।
‘ভয়ঙ্কর সুন্দর’ বলে অভিহিত করেছেন তিনি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আগ্নেয়গিরির ভয়ঙ্কর সুন্দর রূপের ছবি ছড়িয়ে পড়েছে। তিনি নিজের অভিজ্ঞতা জানাতে গিয়ে শুধু বলেছেন, ‘এটি মন্ত্রমুগ্ধকর ছিল’।
Advertisement
গত দশক থেকেই আগ্নেয়গিরি পর্যটন বিকাশ লাভ করেছে। সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে মানুষ আরও উৎসাহিত হচ্ছেন জ্বলন্ত আগ্নেয়গিরি দেখার। মাউন্ট ভেসুভিয়াসের মতো কিংবদন্তি আগ্নেয়গিরিসহ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কয়েকটি সক্রিয় আগ্নেয়গিরিতে সবসময় পর্যটকদের ভিড় লেগেই থাকছে।
যার মধ্যে ওয়াশিংটন রাজ্যের মাউন্ট রেইনিয়ার, ক্যালিফোর্নিয়ায় লাসেন পিক এবং ওয়াইমিংয়ের ইয়েলোস্টোন ক্যালডেরা অন্যতম।
যে কারণে ঝুঁকিপূর্ণ আগ্নেয়গিরি পরিদর্শন-
আগ্নেয়গিরির ওই স্থানে গিয়ে কোনো দর্শনার্থীই কিন্তু চুপ করে এক স্থানে বসে থাকেন না। সবাই হাঁটাহাঁটি করেন কিংবা লাভা হ্রদের কিনারায়ও হাঁটতে পারেন। যা মৃত্যুঝুঁকির কারণ হতে পারে।
Advertisement
আগ্নেয়গিরির আশেপাশে প্রায়শই বিষাক্ত গ্যাস উৎপাদন করে যেমন- সালফার ডাই অক্সাইড। যা আপনার ফুসফুসকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত ঘটলে ম্যাগমা-স্ট্যাটিক চাপ বৃদ্ধি হয় বা টেকটোনিক প্লেটগুলোর পরিবর্তন ঘটায় ভূমিকম্পও হতে পারে। ১৯৮৭ সালে যখন ইতালির মাউন্ট এটনা ফেটেছিল, তখন দুজন পর্যটক নিহত হয়েছিল। যেকোনো সময় বিস্ফোরণ ঘটতে পারে।
জানা গেছে, ২০১০ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে আগ্নেয়গিরি বিস্ফোরণে কমপক্ষে ১ হাজার ১৪৩ জন নিহত হয়েছেন। ৯ ডিসেম্বর ২০১৯, নিউজিল্যান্ডের ওয়াখারি/হোয়াইট আইল্যান্ডের আগ্নেয়গিরি হঠাৎ বিস্ফোরিত হয়ে ২২ পর্যটক নিহত এবং ২৫ জন আহত হন।
সূত্র: ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক
জেএমএস/এএসএম