দেশজুড়ে

দলীয় মনোনয়ন পেতে মরিয়া গোপালগঞ্জের মেয়র প্রার্থীরা

গোপালগঞ্জে আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনকে ঘিরে জোড়ালোভাবে জনসংযোগ ও মনোনয়ন দৌড়ে নেমে পড়েছেন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থীরা।পোস্টার, লিফলেট ছেপে ও ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে এবং বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠান ও সমাবেশে যোগ দিয়ে তারা তাদের প্রার্থীতার পক্ষে জনসমর্থন আদায়ে ব্যস্ত রয়েছেন। এ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পেতে নিজেদের সাংগঠনিক ভিত, যোগ্যতা ও জনপ্রিয়তা প্রমাণে ব্যাপকভাবে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা আলাদা আলাদাভাবে মনোনয়ন পাওয়ার লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় নেতাদের দ্বারস্থ হচ্ছেন ও লবিং চালিয়ে যাচ্ছেন। তারা ভোটারদের কাছে দোয়া ও আশির্বাদ কামনা করছেন। গোপালগঞ্জ আওয়ামী লীগের দুর্গ হওয়ায় এখানে দলীয় প্রার্থীর সংখ্যা বেশি।সম্ভাব্য সকল প্রার্থীই গোপালগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য ও গোপালগঞ্জ-২ আসনের বরাবর নির্বাচিত সংসদ সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিমের আশির্বাদ পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন।দলের এসব নেতারা প্রত্যেকে দলীয় মনোনয়নে প্রার্থী হিসেবে নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করতে আগ্রহী। তবে দলীয় মনোনয়ন না পেলে কেউ কেউ আবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করবেন বলে শোনা যাচ্ছে। অবশ্য বিএনপি, জাতীয় পার্টি, জামায়াত, জাসদ, সিপিবিসহ অন্যান্য দলের মেয়র পদে নির্বাচনে আগ্রহী প্রর্থীদের এখনো মাঠে দেখা যাচ্ছে না। বর্তমানে যারা নির্বাচনের মাঠে আছেন সকলেই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িত। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে যারা তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা হলেন, শ্রমিক লীগের জেলা আহ্বায়ক ও বর্তমান মেয়র রেজাউল হক সিকদার রাজু, সাবেক মেয়র ও শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি হাসমত আলী সিকদার চুন্নু, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী লিয়াকত আলী লেকু, জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক বদরুল আলম বদর, ত্রাণ ও পুনর্বাসন সম্পাদক মুশফিকুর রহমান লিটন, শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক কালা চাঁদ সাহা, জেলা যুবলীগের সভাপতি জিএম সাহবুদ্দিন আজম, সাধারণ সম্পাদক এম বি সাইফ বি মোল্লা এবং বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে যোগদানকারী নেতা আশরারুল হক লিটু। এছাড়া কাউন্সিলর আব্দুল জলিল খান, স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা বিএম আলম সিদ্দিকী, শেখ মুরাদ হোসেনের নাম শোনা গেলেও তাদের তৎপরতা এখন লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, কে মনোনয়ন পাবেন তা বলা মুশকিল। সবকিছু নির্ভর করছে আমাদের প্রাণ প্রিয় নেতা সেলিম ভাইয়ের উপর।আওয়ামী লীগের মনোনয়নে মেয়র পদে নির্বাচন করতে আগ্রহীদের মধ্যে ইতোমধ্যে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে গতবারের নির্বাচনে দুই-একজন বাদে অন্যসবাই অংশগ্রহণ করেছিলেন। ওই নির্বাচনে বিপুল ভোটে রেজাউল হক সিকদার রাজু মেয়র পদে নির্বাচিত হন। ভোটযুদ্ধে জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক বদরুল আলম বদর, ত্রাণ বিষয়ক সম্পাদক মুশফিকুর রহমান লিটন ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান সভাপতি কাজী লিয়াকত আলী লেকুর মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়। নির্বাচনে ওই তিন প্রার্থী প্রায় সম পরিমাণ ভোট পান। এবারের নির্বাচনের দৌড়েও এ তিনজন রয়েছেন। গোপালগঞ্জ জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, পৌরসভায় প্রায় ৩৫ হাজার ভোটার রয়েছে। এরমধ্যে পুরুষ ভোটাররে চেয়ে নারী ভোটারের সংখ্যা বেশি। সংখ্যালঘু ভোটার রয়েছে প্রায় ১৩ হাজার।মেয়র পদে দলের মনোনয়ন লড়াইয়ে যারা মাঠে আছেন তারা সবাই অতি পরিচিত মুখ। সক্রিয়ভাবে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকায় শহরের ভোটারদের মধ্যে সবার কমবেশি গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। তবে ভোটারদের একটি বৃহৎ অংশ রয়েছে সংখ্যালঘু। যা বিগত নির্বাচনগুলোতে প্রার্থীকে বিজয়ী করতে ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করে।সরেজমিনে পৌরসভার কয়েকজন ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এবারের নির্বাচনে কে মেয়র প্রার্থী হবেন সেটা বিষয় নয়, নৌকা প্রতীক নিয়ে যিনি নির্বাচন করবেন বেশিরভাগ ভোটাররা তাকেই ভোট দিয়ে বিজয়ী করবেন।    অপরদিকে, জাসদের (ইনু) পক্ষ থেকে জেলা জাসদের সহ-সভাপতি শংকর কুমার দাস দলীয় মনোনয়নে মেয়র প্রার্থী হতে পারেন বলে তিনি জানিয়েছেন। এছাড়া, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির (এরশাদ) পক্ষ থেকে দলীয় মনোনয়নে মেয়র নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কথা শোনা যাচ্ছে। তবে এসব দলের মনোনয়ন প্রত্যাশি কেউ মাঠে নেই। ভোটারদের সঙ্গে যোগাযোগ ও জনসংযোগ করতে কাউকে দেখা যাচ্ছে না।    পৌর নির্বাচনে বিএনপির প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চাইলে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এম মনসুর আলী জাগো নিউজকে বলেন, এ বিষয়ে দলের হাইকমান্ডের নির্দেশ না আসা পর্যন্ত আমরা  কিছুই বলতে পারছি না। নির্দেশের অপেক্ষায় আছি। দলীয় মনোনয়ন হতে পারে বলে সম্ভাবনা আছে। সিপিবির সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ আবু হোসেন জাগো নিউজকে জানান, দল পৌর নির্বাচনে অংশ নেয়ার সিদ্ধান্ত নিলেও আমরা গোপালগঞ্জে কোনো প্রার্থী দিচ্ছি না।এমজেড/আরআইপি

Advertisement