করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা আবারও বেড়েই চলেছে। এ সময় ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য সুরক্ষা বজায় রাখার বিকল্প নেই। সচেতন থাকার মাধ্যমেই করোনার সংক্রমণ থেকে রেহাই মিলবে।
Advertisement
কর্মজীবীরা প্রতিদিনই গণপরিহন ব্যবহার করে নির্দিষ্ট গন্তব্যে আসা-যাওয়া করে থাকেন। সামান্য অসচেতনতা এবং ব্যক্তিগত সুরক্ষা বজায় না রাখলে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়তে পারে।
যদিও এখন করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় বাসে অর্ধেক আসন ফাঁকা রেখে যাত্রী পরিবহনের নির্দেশনা দিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়।
তবুও ভিড়ের মধ্যে বাসে ওঠা, বাসের ভেতরের হ্যান্ডেল বা রেলিং ধরে দাঁড়িয়ে থাকা কিংবা অপরিষ্কার সিটে দীর্ঘক্ষণ বসে যাতায়াতের মাধ্যমেও আপনি কিন্তু আক্রান্ত হতে পারেন। এজন্য বিশেষ কিছু স্বাস্থ্যবিধি এ সময় মেনে না চললে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যাবে। জেনে নিন সেগুলো-
Advertisement
>> ঘর থেকে বের হওয়ার সময় মাস্ক পরতে ভুলবেন না। রাস্তায় বা গণপরিবহনে উঠে অযথা হাতে স্যানিটাইজার না ব্যবহার করে মাস্ক মুখ থেকে খুলবেন না কিংবা বারবার গলায় ঝুলিয়ে রাখবেন না। এতে সংক্রমণের আশঙ্কা বেড়ে যায়।
>> কোন মাস্ক ব্যবহার করছেন সেদিকেও নজর দিন। বাজারে এখন বিভিন্ন ধরনের মাস্ক পাওয়া যায়। তবে যেগুলো আপনাকে সুরক্ষা দেবে; সেগুলোই ব্যবহার করুন। মাস্ক পরার পর সামনে হাত রেখে জোরে ফু দিলে যদি বাতাস হাতে লাগে, তবে বুঝবেন সে মাস্কটি আপনাকে সুরক্ষা দেবে না।
>> সুরক্ষিত থাকতে অনেকেই হ্যান্ড গ্লাভস ব্যবহার করে থাকেন। তবে একই হ্যান্ড গ্লাভস যদি আপনি বারবার পরেন, সেক্ষেত্রে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়বে। এজন্য একবার ব্যবহারের পর ওই হ্যান্ড গ্লাভসটি আর ব্যবহার করা যাবে না। অবশ্যই খোলার সময় গ্লাভস উপরে থেকে টান দিয়ে উল্টো করে খুলে, সেভাবেই ডাস্টবিনে ফেলতে হবে।
>> সবসময় সঙ্গে হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখবেন। এটিই এখন বিপদের সঙ্গী। বারবার হাত পরিষ্কারের মাধ্যমে জীবাণু ধ্বংস করা সম্ভব। কারণ করোনাভাইরাস হাত থেকে নাক, মুখ ও চোখের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করে। আর সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার উপায় থাকলে বারবার হাত ধুতে হবে।
Advertisement
>> যারা ব্যাগ ব্যবহার করে থাকেন; তাদেরকে বিশেষভাবে ব্যাগটি পরিষ্কার করে নিতে হবে নিয়মিত। এতেও জীবাণু ১-২ দিন জীবিত থাকতে পারে। চামড়ার ব্যাগ ব্যবহার করবেন না, এতে জীবাণু দীর্ঘক্ষণ জীবিত থাকে।
>> খোলামেলা পোশাকের পরিবর্তে শরীর পুরো ঢাকা থাকবে এমন পোশাক পরুন। বড় হাতা দেওয়া জামা বা শার্ট এগুলো পরতে হবে, মাথা ঢেকে রাখার চেষ্টা করুন। যদি মাস্ক, গ্লাভস ও চোখে চশমা থাকে; তাহলে অনেক সুরক্ষা পাওয়া যাবে। বাড়ি গিয়ে পোশাক খুলে ধুয়ে নিতে হবে।
>> রাস্তায় বা গণপরিবহনে উঠে মাস্ক খুলে কোনো কিছু খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। এ সময় বাইরের খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। কারণ যে ওই খাবারটি তৈরি করেছেন, তিনিও হতে পারেন করোনায় আক্রান্ত। এ ছাড়াও খাবারের প্যাকেটেও জীবাণু লেগে থাকতে পারে।
>> টিস্যু ব্যবহার করলে, সেটি কখনো যেখানে সেখানে ফেলবেন না। সেই সঙ্গে যত্রতত্র কফ বা থুতু ফেলবেন না। আপনার যদি হাঁচি বা কাশির মতো উপসর্গ থাকে তাহলে গণপরিবহন ব্যবহার করবেন না।
>> রাস্তায় যেহেতু অনেকেই কফ ও থুথু ফেলে থাকে, জুতোর নিচে সেগুলো লাগতেই পারে। এজন্য বাড়িতে পৌঁছে জুতোর নিচের অংশ ব্লিচিং পাউডার ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রাখবেন।
>> সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখার জন্য ৩ ফুট দুরত্ব গণপরিবহনে মেনে চলা যায় না। এজন্য বিশেষজ্ঞদের মতে, যতটা সম্ভব মানুষের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলতে হবে। আর সেজন্যেই দূরত্ব বজায় রাখা দরকার। আশপাশের কেউ যদি হাঁচি ও কাশি দিতে থাকে; তার কাছ থেকে দূরে থাকুন।
জেএমএস/এএসএম