তাইওয়ানের হুয়ালিয়েন শহরে টানেলের মধ্যে ট্রেন দুর্ঘটনায় এক নির্মাণ প্রকৌশলীর গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন প্রসিকিউটররা। নির্মাণ কাজে ব্যহৃত লরির কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি তাদের। শুক্রবার (২ এপ্রিল) তাইওয়ানে গত ৪০ বছরের মধ্যে ভয়াবহতম ট্রেন দুর্ঘটনায় ইতোমধ্যে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০ জনে।
Advertisement
বিবিসি জানিয়েছে, বহু পর্যটক ও লম্বা ছুটিতে ঘরমুখো মানুষদের নিয়ে ট্রেনটি তাইপেই থেকে তাইতুং যাচ্ছিল। পথিমধ্যে হুয়ালিয়েন এলাকার কাছাকাছি একটি টানেলের মধ্যে লাইনচ্যুত হয় সেটি।
ট্রেনটিতে অন্তত ৫০০ আরোহী ছিলেন। ট্রেনটি পরিপূর্ণ থাকায় ভেতরে অনেক যাত্রী দাঁড়িয়ে ছিলেন। দুর্ঘটনার সময় তারা ছিটকে পড়েন। শনিবার (৩ এপ্রিল) উদ্ধারকারীরা ট্রেনটির পেছনের বগিগুলো উদ্ধার করেন। টানেলের বাইরে থাকায় এগুলো প্রায় অক্ষত রয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। টানেলের ভেতরে থাকা বগিগুলো ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
দুর্ঘটনার পর ট্রেনের পেছনের বগিগুলো থেকে অনেকেই বের হয়ে আসেন। চারটি বগি থেকে প্রায় ১০০ জনকে উদ্ধার করা হয়। আর দুর্ঘটনায় দুমড়ে-মুচড়ে যাওয়া চারটি বগিতে বহু হতাহতের ঘটনা ঘটে এবং অনেকে টানেলের ভেতর আটকা পড়েন।
Advertisement
দুর্ঘটনার কবলে পড়া এক নারী বলেন, ‘হঠাৎ করে ভয়াবহ ধাক্কা খেলাম এবং নিজেকে আবিষ্কার করলাম মেঝেতে পড়ে যাচ্ছি। পরে আমরা জানালা ভেঙে ট্রেনের ছাদে উঠে বাইরে বের হয়ে আসি।’
আরেক নারী বলেন, ‘আমি মেঝেতে পরে মাথায় আঘাত পাই এবং রক্ত ঝরতে থাকে।’ আরেকজন বলেন, ‘অনেকেই সিটের নিচে আটকা পড়েন। আমি যখন বের হয়ে আসি তখন যেখানে সেখানে অনেক মানুষের দেহ পড়ে থাকতে দেখি।’
স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, দুর্ঘটনায় ট্রেনের চালকও প্রাণ হারিয়েছেন। এদিকে, শনিবার প্রেসিডেন্ট সাই ইং ওয়েন দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করবেন বলে জানা গেছে।
তাইওয়ানের পূর্ব উপকূলীয় পবর্তময় এলাকা একটি জনপ্রিয় ট্যুরিস্ট স্পট। ১৯৭৯ সালে চালু হওয়া তাইপেই-হুলিয়ান রেলপথে বেশ কয়েকটি টানেল রয়েছে।
Advertisement
২০১৮ সালে দ্বীপটির উত্তর-পূর্বাঞ্চলে একটি ট্রেন লাইনচ্যুত হয়ে অন্তত ১৮ জন নিহত এবং ১৭৫ জন আহত হয়েছিলেন। এর আগে, ১৯৮১ সালে উত্তর তাইওয়ানে ট্রেন দুর্ঘটনায় ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
ইএ/এএসএম