তফসিল ঘোষণার পর যশোরের কেশবপুর পৌরসভায় সম্ভাব্য মেয়র ও কাউন্সিলরদের প্রচারণায় জমজমাট হয়ে উঠেছে নির্বাচনী পরিবেশ। এখানে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি (এরশাদ) ও জামায়াতের একজন করে মোট ৪ জন প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে। তফসিল ঘোষণা হওয়ায় প্রার্থীরা এখন দলীয় মনোনয়ন ও দলের অবস্থান কি হবে তা নিয়ে তৎপর রয়েছে। কেশবপুর পৌর এলাকা ঘুরে এবং প্রার্থী ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য উঠে এসেছে। কেশবপুর পৌরসভায় আলোচনায় থাকা চার প্রার্থী হলেন- বর্তমান মেয়র ও কেশবপুর পৌর বিএনপির সভাপতি আব্দুস সামাদ বিশ্বাস, উপজেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম মোড়ল, জাতীয় পার্টির (এরশাদ) নেতা ডা. গোলাম মোস্তফা ও জামায়াতে ইসলামীর অ্যাডভোকেট ওজিয়ুর রহমান। স্থানীয় নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৮ সালে প্রতিষ্ঠিত কেশবপুর পৌরসভার মোট ভোটারের সংখ্যা ১৮ হাজার ১৫১ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৯ হাজার ১ জন ও নারী ৯ হাজার ১৫০ জন। স্থানীয়রা জানান, যশোর শহর থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরের কেশবপুর পৌরসভায় নির্বাচনী প্রচারণা জমে উঠেছে। ইতোমধ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ মেয়র পদে দলীয় প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে। উপজেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম মোড়লকে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেছেন দলীয় নেতৃবৃন্দ। রফিকুল ইসলাম ইতোমধ্যে কোমর কষে প্রচার প্রচারণায় নেমে পড়েছেন। বিভিন্ন উন্নয়ন প্রতিশ্রুতির পাশাপাশি বিগত সময়ে পৌরবাসীর নানা বঞ্চনার কথা তুলে ধরে ভোট চাইছেন তিনি। এবারের নির্বাচনে বিজয় ছিনিয়ে আনতে প্রার্থী রফিকুল ইসলাম ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ধরনা দিচ্ছেন। কারণ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ইতোপূর্বে কেশবপুর পৌর মেয়রের চেয়ারটি দখলে নিতে পারেনি। এজন্য এই নির্বাচন আওয়ামী লীগের জন্য প্রেস্টিজ ইস্যু।অন্যদিকে, বিএনপির পক্ষ থেকে এখনও কোনো প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়নি। স্থানীয় নেতৃবৃন্দ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ব্যাপারে হাইকমান্ডের দিকে তাকিয়ে আছেন। তবে প্রার্থী ঘোষণা না হলেও গণসংযোগে রয়েছেন পৌরসভা গঠনের পর থেকে দু’বার নির্বাচিত বর্তমান মেয়র কেশবপুর পৌর বিএনপির সভাপতি আব্দুস সামাদ বিশ্বাস। প্রাথমিকভাবে তিনি বিএনপির একক প্রার্থী বলে দলীয় একাধিক সূত্র জানিয়েছে। তবে নির্বাচন নিয়ে দলের অবস্থান স্পষ্ট না হওয়ায় তারা বিষয়টি নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে মুখ খুলতে রাজী নন। তবে কেশবপুর পৌরসভা প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর মেয়র পদটি বিএনপির দখলে রয়েছে। এ কারণে এবারের নির্বাচনেও বিএনপি মেয়র পদটি ধরে রাখতে মরিয়া হয়ে উঠেছে।আওয়ামী লীগ, বিএনপির বাইরে নির্বাচনী মাঠে রয়েছেন আরেক মেয়র প্রার্থী জাতীয় পার্টির (এরশাদ) নেতা ডা. গোলাম মোস্তফা। তিনিও দলের সমর্থন নিয়ে প্রচার প্রচারণা শুরু করেছেন। আর অ্যাডভোকেট ওজিয়ুর রহমানকে জামায়াতে ইসলামী তাদের দলীয় প্রার্থী করতে পারেন বলে জোর আলোচনা রয়েছে। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, এখানে জামায়াত নির্বাচনে গেলে আনুষ্ঠানিকভাবে নাম ঘোষণা করে তারা মাঠে নামবেন। যদিও ওজিয়ুর রহমান নিজস্ব পরিমণ্ডলে প্রচার প্রচারণা শুরু করেছেন বলেও সূত্র জানিয়েছে। সূত্র আরও জানিয়েছে, কেশবপুর পৌরসভার মেয়র পদে চার দল থেকে ৪ প্রার্থীর নাম শোনা গেলেও দলগুলোর ভিতরে প্রার্থী নিয়ে বড় ধরনের কোনো দ্বন্দ্ব বা কোন্দলের খবর পাওয়া যায়নি। তাই প্রত্যেকেই দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যাচ্ছেন। মেয়র প্রার্থীরা এখন কেশবপুর পৌরসভাকে মডেল পৌরসভা, আধুনিকায়ন, রাস্তাঘাট নির্মাণ ও সংস্কার, ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন, জলাবদ্ধতা নিরসনসহ মাদক সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অঙ্গীকার করছেন। মেয়র প্রার্থীদের পাশাপাশি ওয়ার্ডভিত্তিক কাউন্সিলর প্রার্থীরা প্রচারণা ও গণসংযোগে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এসএস/আরআইপি
Advertisement