ধর্ম

হজরত দাউদ (আ.)-এর রোজা

রোজা ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের একটি। যুগে যুগে নবি রাসুলগণ রোজার বিধান পালন করেছেন। পৃথিবীর শুরু থেকে যুগে যুগে নবি-রাসুলগণ রোজা পালন করেছেন। হজরত মুসা আলাইহিস সালামের পর তারই কিতাবের অনুসারী নবি ও শাসক হজরত দাউদ আলাইহিস সালাম রোজা পালন করেছেন। তাঁর রোজা পালন ছিল আল্লাহর কাছে অধিক পছন্দনীয়। কেমন ছিল তাঁর রোজা পালন? কেন তাঁর রোজা পালন ছিল আল্লাহর কাছে সর্বাধিক পছন্দের?

Advertisement

হজরত দাউদ আলাইহিস সালাম সবচেয়ে বেশি রোজা পালনকারী নবি ছিলেন। যুগে যুগে যত নবি-রাসুল রোজা পালন করেছেন, তাদের মধ্যে হজরত দাউদ আলাইহিস সালাম অন্যতম। আর সব যুগেই নবি-পয়গম্বরদের রোজা পালনের কথা কুরআনুল কারিমে সুস্পষ্ট ভাষায় ওঠে এসেছে-

‘হে ঈমামদারগণ! তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে। যেভাবে ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের আগের লোকদের (নবি-রাসুল ও তাদের উম্মত) ওপর। যাতে তোমরা পরহেজগার হতে পার।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ১৮৩)

হজরত দাউদ আলাইহিস সালামের রোজা

Advertisement

হজরত মুসা আলাইহিস সালামের শরিয়তকে নতুন জীবন দান করেছিলেন হজরত দাউদ আলাইহিস সালাম। তিনি একাধারে নবি ও শাসক ছিলেন। কেননা হজরত দাউদ আলাইহিস সালামের নবুয়তের আগে বনি ইসরাইলের এক বংশের কাছে থাকত নবুয়তের দায়িত্ব আর অন্য বংশ পালন করত রাজত্ব। হজরত দাউদ আলাইহিস সালামই একমাত্র নবি; যিনি সর্বপ্রথম একসঙ্গে নবুয়ত ও রাজত্ব লাভ করেছিলেন।

হজরত দাউদ আলাইহিস সালামের রোজা আল্লাহর কাছে সবচেয়ে বেশি পছন্দনীয় ছিল। তাঁর কণ্ঠে ছিল সুরের জাদু। তাঁর কণ্ঠে আসমানি কিতাবের তেলাওয়াত ছিল চমৎকার। তার রোজা পালন সম্পর্কে হাদিসে পাকে সুস্পষ্ট বর্ণনা ওঠে এসেছে-

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলার কাছে সবচেয়ে প্রিয় রোজা হজরত দাউদ আলাইহিস সালামের রোজা। তিনি একদিন রোজা রাখতেন এবং একদিন বিনা রোজায় থাকতেন।’ (নাসাঈ, বুখারি, মুসলিম, মিশকাত)

অর্থাৎ হজরত দাউদ আলাইহিস সালাম সবচেয়ে বেশি রোজা পালন করতেন। তিনি বছরের অর্ধেক দিন রোজা রাখতেন। একদিন পর একদিন তিনি রোজা পালন করতেন। এ জন্য আল্লাহর কাছে হজরত দাউদ আলাইহিস সালামের রোজা সবচেয়ে বেশি প্রিয় ছিল বলে উল্লেখ করেছেন স্বয়ং বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।

Advertisement

যুগে যুগে রোজার বিধানের ধারাবাহিকতায় উম্মতে মুসলিমদের ওপর একটানা এক মাস রোজা পালন ফরজ করেছেন মহান আল্লাহ। যে মাসে তাদের হেদায়েত পাওয়ার জন্য দান করেছেন কুরআন। কুরআনের অনুসারী প্রাপ্ত বয়স্ক মুমিন মুসলমান এ মাসটি পেলেই রোজা রাখতে হবে মর্মে ঘোষণা এসেছে এভাবে-

‘রমজান মাসই হলো সে মাস, যাতে নাজিল করা হয়েছে কুরআন, যা মানুষের জন্য হেদায়েত এবং সত্যপথ যাত্রীদের জন্য সুস্পষ্ট পথ নির্দেশ আর ন্যায় ও অন্যায়ের মাঝে পার্থক্য বিধানকারী। কাজেই তোমাদের মধ্যে যে লোক এ মাসটি পাবে, সে এ মাসব্যাপী রোজা রাখবে।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ১৮৫)

সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, রমজানের রোজার প্রস্তুতি এখন থেকেই নেয়া। বিশেষ করে এ শাবান মাসের রোজা রাখার মাধ্যমেই সে প্রস্তুতি শুরু করা উত্তম।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে নবুয়ত ও রেসালাতের অন্যতম আদর্শ রোজা পালনে নিজেদের প্রস্তুতি গ্রহণের তাওফিক দান করুন। রমজানজুড়ে রহমত বরকত মাগফেরাত ও নাজাত পাওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/জেআইএম