কিশোরগঞ্জের বর্তমান সিভিল সার্জন ডা. মোখলেছুর রহমান। কিন্তু জেলা তথ্য বাতায়নে লেখা আছে ডা. মৃণাল কান্তি পণ্ডিতের নাম। অথচ ওই কর্মকর্তা বদলি হয়ে গেছেন এক বছর আগে। জেলায় এক সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ছিলেন লিটন কুমার সাহা। বর্তমানে তিনি পাবনা জেলায় কর্মরত। কিন্তু তথ্য বাতায়নের বদৌলতে এখনও তিনি আছেন কিশোরগঞ্জ জেলা পুলিশে!জেলা তথ্য বাতায়ন থেকে মোবাইল নম্বর নিয়ে ফোন করা হলো জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের পরিদর্শক মো. নজরুল ইসলামের কাছে। জানতে চাওয়া হয় জেলায় চলতি মাসে কি পরিমাণ মাদকদ্রব্য উদ্ধার করা হয়েছে? এমন প্রশ্নে অবাক হয়ে তিনি জানতে চান, ‘আপনি কার কাছে ফোন করেছেন’? জানা গেল তিনি কর্মরত আছেন ময়মনসিংহে। দীর্ঘ চাকরি জীবনে তিনি কখনই কিশোরগঞ্জে কর্মরত ছিলেন না। জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে লেখা আছে মোহাম্মদ মাহাবুবুর রহমানের নাম। কিন্তু অধিদফতরের এক কর্মকর্তা জানালেন, জেলা পর্যায়ে তত্ত্বাবধায়কের পদটি বিলুপ্ত করে অনেক আগেই সহকারী পরিচালক করা হয়েছে। কিন্তু জেলা তথ্য বাতায়নে এর কোনো আপডেট নেই। এই কর্মকর্তার নাম ও ছবি আছে দুইবার।এই হচ্ছে কিশোরগঞ্জ জেলা তথ্য বাতায়নের চিত্র। সরকারি সেবা সাধারণ মানুষের দৌড়গোড়ায় পৌঁছে দিতে কয়েক বছর আগে ডিজিটাল সেবার মাধ্যম জেলা তথ্য বাতায়ন চালু করে সরকার। কিন্তু সময় মতো হালনাগাদ না করায় এবং প্রয়োজনীয় তথ্য সংযোজন না করায় নাগরিক সেবা ব্যাহত হচ্ছে।কিশোরগঞ্জ জেলা তথ্য বাতায়ন ভিজিট করে (www.kishoreganj.gov.bd) এমন নানা অসঙ্গতি আর অসম্পূর্ণ তথ্য দেখা গেছে। জেলা প্রশাসন বিভাগের কর্মকর্তাদের তথ্য হালনাগাদ থাকলেও আইন-শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা, খাদ্য ও কৃষি বিষয়ক, প্রকৌশল, মানবসম্পদ উন্নয়ন, শিক্ষা ও সংস্কৃতি এবং স্বাস্থ্য বিষয়ক সরকারি অফিস সমূহের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নাম ও তাদের মোবাইল নম্বর অনেক ক্ষেত্রেই হালনাগাদ করা হয়নি।খোদ জেলা প্রশাসনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিতব্য গুরুত্বপূর্ণ সভাসমূহের সময়সূচিই হালনাগাদ করা হয় না। তথ্য বাতায়নে জেলার মুক্তিযোদ্ধাদের নামের তালিকা দেয়া হয়েছে। কিন্তু এ তালিকায় নেই সবার পূর্ণাঙ্গ ঠিকানা। এতে জেলায় কর্মরত সাংবাদিকদের নাম ও তাদের মোবাইল নম্বর সংযোজন করা হয়নি। জেলায় ১২টি কলেজের মধ্যে ৮টির শিক্ষার্থী সংখ্যা নেই। জেলা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপ- সহকারী পরিচালক প্রাণনাথ সাহা অনেক আগেই কিশোরগঞ্জ থেকে বদলি হয়েছেন। বর্তমানে তিনি নেত্রকোনা জেলায় কর্মরত। কিন্তু বাতায়নে এখনও রয়ে গেছে তার নাম ও মোবাইল নম্বর।এমন নানা অসঙ্গতি প্রতিটি বিভাগেই রয়েছে। সঠিক তথ্য না পাওয়ায় বিভ্রান্তিতে পড়তে হয় সেবাগ্রহীতাদের। ফলে সম্ভব হচ্ছে না সরকারের কাঙ্খিত উদ্দেশ্য।জেলা তথ্য বাতায়নের নানা ভুল-ভ্রান্তির কথা স্বীকার করে কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক জিএসএম জাফরউল্লাহ জাগো নিউজকে বলেন, আগামীকালের মধ্যে তথ্য বাতায়নের সব তথ্য হালনাগাদ করা হবে। এরপর আর কোনো ভুল বা অসঙ্গতি থাকবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।এসএস/এমএস
Advertisement