নাবিহা শরিফ
Advertisement
২৯ মার্চ ২০২১, পবিত্র শবে বরাত। অনলাইনে ক্লাস করছিলাম। দুপুর আড়াইটার দিকে হঠাৎ খবর পেলাম আমাদের প্রিয় রোমানা ম্যাডাম আমাদের সবাইকে ছেড়ে চিরদিনের জন্য চলে গেছেন।
সঙ্গে সঙ্গে আমার প্রতিবেশী ও সহপাঠী বন্ধুসহ আরও কয়েকজনকে বিষয়টি জানাই। আমরা কেউই বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। এটা কীভাবে সম্ভব? আমাদের সবারই চোখ ভিজে গেল।
এই তো সেদিন ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে স্কুলে তার সঙ্গে দেখা হলো। সেই অনুষ্ঠানে আমরা কয়েকজন গান গেয়েছিলাম। চোখের সামনে ভেসে ওঠে তার হাসিমুখ। মনে হয়, তিনি রেগে গেলেও হাসতেন।
Advertisement
রোমানা পারভীন ম্যাডাম আমাদের ওয়াইডব্লিউসিএ উচ্চ মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে ‘সহকারী শিক্ষক’ হিসেবে ২০১৪ সালে যোগ দেন। তার বয়স হয়েছিল মাত্র ৩৫ বছর। করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। তার ছেলে সাদমান আমাদের স্কুলেই নার্সারিতে পড়ে। সে না-কি বাসায় থেকে মায়ের জন্য দোয়া করত। মা যেন সুস্থ হয়ে বাসায় ফেরে। আহা রে! এমন মায়ের আদর থেকে সাদমান বঞ্চিত হবে।
ষষ্ঠ শ্রেণিতে তিনি আমাদের শ্রেণি শিক্ষক ছিলেন। সেটা ছিল করোনার বছর। আমরা ঘরবন্দি থাকলেও তিনি আমাদের নানাভাবে সহায়তা করেছেন। কোনো পড়া না বুঝলে ধৈর্যের সঙ্গে বুঝিয়ে দিতেন। খুব সুন্দর করে পড়াতেন। তিনি আমাকে পছন্দ করতেন। আমিও তাকে খুব শ্রদ্ধা করতাম।
ভালো মানুষ বলতে যা বোঝায়, তা-ই ছিলেন রোমানা ম্যাডাম। তার অসংখ্য গুণাবলী আমাদের মুগ্ধ করত। তার সম্পর্কে লিখে শেষ করা যাবে না। তার হাসিমুখ মনে হলে বুকের ভেতর শূন্যতা অনুভব করি। তার ছোট্ট ও দুষ্টু ছেলেটার কথা মনে হলে চোখে পানি আসে।
পবিত্র শবে বরাতের দিন আল্লাহ তাকে নিয়ে গেলেন। ম্যাডাম বেঁচে থাকলে আমরা তার কাছ থেকে অনেক কিছু শিখতে পারতাম।
Advertisement
হে সৃষ্টিকর্তা, তুমি সব জানো। কেন রোমানা ম্যাডামকে নিয়ে গেলে? তা তুমিই ভালো জানো। তার জন্য বেহেশত চাই। ম্যাডাম বেঁচে থাকবেন আমাদের স্মৃতিতে। পরপারে ভালো থাকবেন।
লেখক: সপ্তম শ্রেণি, ওয়াইডব্লিউসিএ উচ্চ মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়, গ্রীন রোড, ঢাকা।
এসইউ/জিকেএস