দিনে দুই একবার হাঁচি তো সবাই কমবেশি দিয়ে থাকেন। তবে শুধু ঠান্ডা লাগলেই যে বেশি হাঁচি হয়ে থাকে, তা কিন্তু নয়! বিভিন্ন কারণেই হাঁচি হতে পারে। অনেকের ক্ষেত্রে দেখা যায়, একের পর এক হাঁচি দিতে গিয়ে তারা অসুস্থ হয়ে পড়ছেন! এর কারণ কি? আর এমনটি হলেই বা কী করণীয়?
Advertisement
হাঁচি একটি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া, যা নাকের প্রদাহ বা জ্বালা দূর করতে সহায়তা করে। যখনই বাতাসের সঙ্গে মিশে থাকা পদার্থ যেমন- ময়লা, পরাগ, ধোঁয়া বা ধূলা-বালি নাকে প্রবেশ করে; তখনই আমাদের নাকের সংবেদনশীল আস্তরণে অস্বস্তি বা সুড়সুড়ি শুরু হতে পারে।
হাঁচির ফলে আমাদের নাসারন্ধ্র পরিষ্কার হয়। সহজ কথায়, নাক দিয়ে ক্ষতিকর জীবাণু বা পদার্থ ঢুকলেই শরীরের প্রাথমিক প্রতিরক্ষা হিসেবে হাঁচি হয়ে থাকে। এর ফলে ক্ষতিকর ওই পদার্থ নাক থেকে বেরিয়ে আসে।
যদিও এমন ক্ষেত্রে হাঁচি ২-৩ বার হয়ে বন্ধ হয়ে থায়। তবে কারো কারো ক্ষেত্রে লাগাতার হাঁচি হয়ে থাকে, যার ফলে তারা নিঃশ্বাস নিতেও কষ্ট পান।
Advertisement
যেসব কারণে হাঁচি হতে পারে- প্রথমেই আপনার সনাক্ত করা দরকার, কোন সময় আপনার হাঁচি বেশি হয়ে থাকে। যেমন- ময়লা, ধুলা-বালি, ফুলের পরাগ, পোষা প্রাণীকে স্পর্শ করলে, উজ্জ্বল আলো, সুগন্ধি, মশলাদার খাবার, কালো মরিচ কিংবা সাধারণ সর্দিতে।
এসব কারণেই মূলত হাঁচির সমস্যা হয়ে থাকে। এসব কারণে যদি আপনার ক্রমাগত হাঁচি হয়ে থাকে; তাহলে কয়েকটি ঘরোয়া উপায়ের মাধ্যমেই আপনি এ সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন-
মধু: বেশ কয়েকটি গবেষণায় বলা হয়েছে, মধু সর্দি এবং ফ্লুর ক্ষেত্রে হাঁচি প্রতিরোধে সহায়তা করতে পারে। অ্যালার্জি প্রতিক্রিয়ার ক্ষেত্রে মধু একটি আদর্শ বিকল্প হতে পারে। এর কোনো পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া নেই।
মধু শরীরে উপস্থিত অ্যালার্জেনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পারে। তাই হাঁচি হওয়ার সময় এক চা চামচ মধু খেলে আপনি তাৎক্ষণিক আরাম বোধ করবেন।
Advertisement
ভাঁপ: গরম পানির ভাঁপ নিলে হাঁচির ফলে হওয়া শ্বাসগত সমস্যা কমে যাবে দ্রুত। এজন্য একটি পাত্রে কিছুটা গরম পানি নিয়ে মাথা নিচু করে শ্বাস নিন।
মাথার উপরে একটি তোয়ালে দিয়ে ঢেকে নিন। হাঁচির পরে এভাবে বাস্প নিলে দ্রুত নাসারন্ধ্র পরিষ্কার হয়ে যাবে। আপনি তাৎক্ষণিক স্বাভাবিকভাবে শ্বাস নিতে পারবেন।
আলোর দিকে তাকাবেন না: হঠাৎ উজ্জ্বল আলোর সংস্পর্শে আসলে অনেকেরই হাঁচি হতে পারে। সূর্যের আলোতেই বেশিরভাগ সময় এমনটি হয়ে থাকে।
প্রায় এক তৃতীয়াংশ লোক এ ধরনের অ্যালার্জিতে ভুগে থাকেন। এজন্য সরাসরি কখনো আলোর দিকে তাকাবেন না। বাইরে যাওয়ার সময় ছাতা ও পোলারাইজড সানগ্লাস ব্যবহার করুন।
ভিটামিন সি গ্রহণ করুন: ক্রমাগত হাঁচি হলে ভিটামিন সি জাতীয় খাবার বা এর গন্ধ নাকে নেওয়ার চেষ্টা করুন। এজন্য কমলা এবং লেবু জাতীয় কিছু ভিটামিন সি’জাতীয় ফল নিন। এতে শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিডেন্টস থাকে।
এ ছাড়াও এতে থাকা ফ্ল্যাভোনয়েড ঠান্ডা এবং অন্যান্য অ্যালার্জিজাতীয় সমস্যা সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করে। হাঁচির সময় একটি আমলকি খেয়ে নিতে পারেন। এতেও ভিটামিন সি এবং এতে শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রয়েছে।
নাকে চিমটি কাটুন: আপনার যদি একাধারে হাঁচি হওয়ার সমস্যা থাকে, সেক্ষেত্রে যখন মনে হবে হাঁচি আসছে; ঠিক তখনই চিমটি কাটুন নাকে। এ কৌশলটি তাৎক্ষণিক কাজে দেয়। এজন্য হাঁচি আসার সময় হাত দিয়ে নাক চেপে ধরুন।
কোনো দুর্গন্ধ পেলে যেভাবে আমরা নাক বন্ধ করি; ঠিক সেভাবে। তারপরে আরেক হাত দিয়ে ভ্রু’র নিচে নাক বরাবর কিছুক্ষণ চেপে ধরে রাখলেই হাঁচি বন্ধ হয়ে যাবে।
ঘরোয়া এসব উপায়েও যদি হাঁচি বন্ধ না হয়; সেক্ষেত্রে দ্রুত চিকিৎসকের শরনাপন্ন হওয়া উচিত।
টাইমস অব ইন্ডিয়া/জেএমএস/জিকেএস