ক্যাম্পাস

করোনায় হুমকিতে ক্যাম্পাস থিয়েটার

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) করোনাকালে ক্যাম্পাস বন্ধ হওয়ার পর স্থবির হয়ে পড়েছে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের কার্যক্রম। সঙ্গে ঢিমেতালে চলছে ক্যাম্পাসের দু’টি নাট্য সংগঠনের কার্যক্রমও।

Advertisement

শাবিপ্রবির সাংস্কৃতিক অঙ্গনের অন্যতম সদস্য ‘থিয়েটার সাস্ট’ ও ‘দিক থিয়েটার’। বছরব্যাপী উৎসব-আমেজে ক্যাম্পাস মাতিয়ে রাখা এ দু’টি নাট্য সংগঠনের কাজ।

নাট্যকর্মীদের নিয়মিত গান, আড্ডা, অনুশীলন ও নাট্যোৎসবে ক্যাম্পাসে বিরাজ করতো উৎসবমুখর এক পরিবেশ। কিন্তু করোনার থাবায় থমকে গেছে সবকিছু।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউনিভার্সিটি সেন্টার, কেন্দ্রীয় মিলনায়তন ও মিনি অডিটোরিয়ামকে কেন্দ্র করে পথনাটক, মঞ্চনাটক, নৃত্য, গান, আবৃত্তি, রোড পেইন্টিং, অভিনয়সহ বিভিন্ন কর্মশালা করে থাকে এ দু’টি সংগঠন।

Advertisement

‘নাটক নির্মাণ করে যৌবন, নাটক আনবেই অবিনাশী প্লাবন’ এই স্লোগানে ১৯৯৭ সালের ৮ ডিসেম্বর যাত্রা শুরু করে ‘থিয়েটার সাস্ট’। প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ পর্যন্ত ৩৫টি নাটকের মোট ১২৬টি প্রদর্শনীসহ সাতটি নাট্যোৎসব করেছে সংগঠনটি।

তবে করোনাকালে একটি অনলাইন চ্যারিটি প্রদর্শনী করেছে সংগঠনটি। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী সুদীপ্ত চৌধুরীর চিকিৎসার সাহায্যার্থে ‘সুদীপ্তর জন্য থিয়েটার সাস্ট’ শিরোনামে গত বছরের ২৪-২৬ সেপ্টেম্বর তিন দিনব্যাপী এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

অন্যদিকে ‘নাটকে সাম্যের আন্দোলন, জীবনের ভাষায় মুক্তি অন্বেষণ’ এই স্লোগানে ১৯৯৯ সালের ১৮ আগস্ট ‘দিক থিয়েটার’ যাত্রা শুরু করে দিক নাট্য সংঘ নামে। দীর্ঘ ২১ বছরে ৩০টি নাটকের মোট ৯৮টি প্রদর্শনী ও ছয়টি নাট্যোৎসব করেছে সংগঠনটি।

করোনাকালে দিক থিয়েটার অনলাইনে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল। সংগঠনের ২১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে গত বছরের ৯-১০ অক্টোবর ‘দ্বাবিংশের আবাহন’ শিরোনামে অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সংগঠনটি।

Advertisement

থিয়েটার সাস্টের সভাপতি অরুপ সরকার জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমাদের কার্যক্রম ক্যাম্পাস কেন্দ্রিক। বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় আমাদের কাজকর্মও বন্ধ। ক্যাম্পাস খোলার পর দুই-তিনটা ব্যাচ একসঙ্গে বের হয়ে গেলে একটি গ্যাপ তৈরি হবে। এতে করে জ্ঞান বিতরণ ও শেখার পরিবেশ পরবর্তী প্রজন্মে ছড়িয়ে দিতে সমস্যা হবে। এতে ক্যাম্পাস থিয়েটার হুমকির মুখে পড়বে।’

দিক থিয়েটারের সাধারণ সম্পাদক পাপ্পু রায় বলেন, ‘এতদিন কার্যক্রম না থাকায় আমরা হুমকির মুখে পড়েছি। অনলাইনে কাজ করা চ্যালেঞ্জের বিষয়। বিশেষ করে সবার সঙ্গে যোগাযোগ ধরে রাখা কঠিন। ক্যাম্পাসে বাইরে অনুশীলনের সুযোগ থাকলেও সিলেটে এখন কেউ নেই। এ সংকট কাটিয়ে উঠতে একবছরের বেশি সময় লেগে যেতে পারে’।

সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের শাবিপ্রবির শাখার সমন্বয়ক অনিক সাহা জাগো নিউজকে বলেন, ‘ক্যাম্পাস খোলার পর সবার পরীক্ষা থাকবে। এতে পড়ালেখার চাপ বাড়বে। সংগঠনের কাজে এত সময় দিতে পারবে না। সাধারণত ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠান করতে গেলে কিছু জটিলতা থাকে। সামনে এটি আরো বাড়বে এমন শঙ্কা থেকেই যায়’।

মোয়াজ্জেম আফরান/এসএমএম/জেআইএম