জাতীয়

আজিমপুর কবরস্থানে চুক্তিভিত্তিক মৌসুমি ভিক্ষুকদের ভিড়

চাঁদপুরের হাজীগঞ্জের মৃত আবদুল আজিজের ছেলে পঞ্চাশোর্ধ্ব আবদুল হামিদ একজন প্রতিবন্ধী। সারাবছর গ্রামে থাকলেও আজ (২৮ মার্চ) পবিত্র শবে বরাতের দিনে বাড়তি উপার্জনের আশায় স্ত্রী ও সন্তানসহ রাজধানীর আজিমপুর কবরস্থান এলাকায় এসেছেন। সকাল সকাল আসতে না পারায় কবরস্থানের গেটের কাছাকাছি জায়গা পাননি। তাই মেয়র হানিফ মসজিদের অদূরে রাস্তার বসে জায়গা নিয়ে বসে আছেন।

Advertisement

দুপুরে এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে আবদুল হামিদ বলেন, তিনি একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী। কিছুদিন আগে সরকারি কার্ড পেয়েছেন। তবে ভাতা এখনও পাননি। স্ত্রী ও তিন সন্তান নিয়ে চলতে কষ্ট হয়। বাড়তি উপার্জনের আশায় শবে বরাত উপলক্ষে ঢাকায় এসেছেন।

আবদুল হামিদ জানান, গতবছর করোনার কারণে আসতে পারেননি। এর আগের বছর একরাতে তিন হাজার টাকা সাহায্য পেয়েছিলেন। আজও বাড়তি আয়ের আশায় ছুটে এসেছেন।

আজ পবিত্র শবে বরাত। মহিমান্বিত এ রজনীতে রাজধানীর আজিমপুর কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত মানুষগুলোর কবর জিয়ারত করতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজারও স্বজনরা ছুটে আসেন। কবর জিয়ারত করে যাওয়া আসার সময় তারা হতদরিদ্র ও ভিক্ষুকদের মুক্তহস্তে দান করেন।

Advertisement

আজিমপুর কবরস্থানে নিয়মিত ভিক্ষুকরা ছাড়াও শবে বরাতসহ বিভিন্ন মুসলিম উৎসবের দিনে মৌসুমি ভিক্ষুকদের ভিড় বাড়ে। নিয়মিত ভিক্ষা করেন এমন কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, তারা দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে চুক্তিভিত্তিতে মৌসুমি ভিক্ষুকদের নিয়ে আসেন। শবে বরাতের দিন সকাল থেকে পরদিন ভোর পর্যন্ত যা রোজগার হয় সেখান থেকে অর্ধেক টাকা মৌসুমি ভিক্ষুককে দিয়ে বাকি অর্ধেক নিয়মিত ভিক্ষুকরা নিয়ে থাকেন।

কবরস্থানের গেটের আশেপাশে নিয়মিত ভিক্ষুকরা অপরিচিত ভিক্ষুকদের ঘেঁষতেও দেন না। শবে বরাতের কয়েকদিন আগে থেকেই নিয়মিত ভিক্ষুকরা নিজেরা আলোচনা করে কবরস্থানের উত্তর ও দক্ষিণ গেটের কে কোন জায়গায় বসবে তা নির্ধারণ করেন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, আজিমপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে আজিমপুর পুরাতন ও নতুন কবরস্থানের গেট, নিউমার্কেটের অদূরে কবরস্থানের গেটের আশপাশে বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে অবস্থান নিয়েছেন নিয়মিত ও চুক্তিভিত্তিক ভিক্ষুকরা। বেলা গড়ানোর সাথে সাথে ভিক্ষুকদের ভিড় ক্রমেই বাড়তে দেখা যায়।

এমইউ/বিএ/এমএস

Advertisement