জাতীয়

মাস্ক পরায় আগ্রহ নেই কারওয়ান বাজারের বিক্রেতাদের

দেশে ফের করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যু বেড়েছে। কিন্তু এখনও এ বিষয়ে মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরি হতে দেখা যায়নি। এ অবস্থায় রাজধানীর সবচেয়ে বড় কাঁচাবাজার কারওয়ান বাজারেও স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই। ইচ্ছা থাকলে মাস্ক পরা যায়, সেই মাস্কের ব্যবহারও কারওয়ান বাজারে কম। ক্রেতাদের মুখে অল্পবিস্তর মাস্ক থাকলেও বিক্রেতারা মাস্ক প্রায় একদমই ব্যবহার করছেন না। অথচ করোনার উচ্চঝুঁকি রয়েছে এই বৃহৎ বাজারটিতে।

Advertisement

সোমবার (২৯ মার্চ) দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, হেফাজতের হরতালের কারণে রোববার কারওয়ান বাজার এলাকায় ভিড় ছিল না। স্বাভাবিকভাবেই জনসমাগমও কম ছিল কারওয়ান বাজারে। আজ প্রচুর গাড়ি রাস্তায়। বাজারের বিভিন্ন গলিও গাড়িতে ভর্তি। এই কাঁচাবাজারেও মানুষের সংখ্যা বেশি। তবে ক্রেতাদের মধ্যে মাস্ক পরার প্রবণতা রয়েছে। বিক্রেতাদের মধ্যে সেই প্রবণতা একদমই কম।

কারওয়ান বাজারের শবজি বিক্রেতা আবদুল কাদের জাগো নিউজকে জানান, বাজারের শবজি বিক্রেতাদের গরমের মধ্যে বসে বিক্রি করতে হয়। এই প্রচণ্ড গরমে মুখে মাস্ক পরে থাকা কষ্ট। এছাড়া মুখ ঘেমে যায়, মাস্কের মধ্য দিয়ে সেগুলো মুখের মধ্যে যায়। এসব কারণে তিনি মাস্ক পরেন না। তার ধারণা, অন্যরাও গরমের কারণে মাস্ক পরতে পারে বেশিক্ষণ থাকতে পারেন না।

এদিকে করোনা সংক্রমণ বাড়ায় উদ্বিগ্ন সরকারও। তাই সরকার ফের করোনা সংক্রমণ রোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে ১৮ দফা নির্দেশনা জারি করেছে।

Advertisement

নির্দেশনাগুলো হলো-

১. সব ধরনের জনসমাগম (সামাজিক/রাজনৈতিক/ধর্মীয়/অন্যান্য) সীমিত করতে হবে। উচ্চ সংক্রমণযুক্ত এলাকায় সব ধরনের জনসমাগম নিষিদ্ধ করা হলো। বিয়ে/জন্মদিনসহ যেকোনো সামাজিক অনুষ্ঠান উপলক্ষে জনসমাগম নিরুৎসাহিত করতে হবে।

২. মসজিদসহ সব ধর্মীয় উপাসনালয়ে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি পরিপালন নিশ্চিত করতে হবে।

৩. পর্যটন/বিনোদন কেন্দ্র সিনেমা হল/থিয়েটার হলে জনসমাগম সীমিত করতে হবে এবং সব ধরনের মেলা আয়োজন নিরুৎসাহিত করতে হবে।

Advertisement

৪. গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে এবং ধারণ ক্ষমতার ৫০ ভাগের বেশি যাত্রী পরিবহন করা যাবে না।

৫. সংক্রমণের উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাতে আন্তঃজেলা যান চলাচল সীমিত করতে হবে; প্রয়োজনে বন্ধ রাখতে হবে।

৬. বিদেশ হতে আগত যাত্রীদের ১৪ দিন পর্যন্ত প্রাতিষ্ঠানিক (হোটেলে নিজ খরচে) কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করতে হবে।

৭. নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী খোলা/উন্মুক্ত স্থানে স্বাস্থ্যবিধি পরিপালনপূর্বক ক্রয়-বিক্রয়ের ব্যবস্থা করতে হবে; ওষুধের দোকানে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা নিশ্চিত করতে হবে।

৮. স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলো মাস্ক পরিধানসহ যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি পরিপালন নিশ্চিত করতে হবে।

৯. শপিং মলে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়েরই যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা নিশ্চিত করতে হবে।

১০. সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (প্রাক-প্রাথমিক, প্রাথমিক, মাদরাসা, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বিশ্ববিদ্যালয়) ও কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকবে।

১১. অপ্রয়োজনীয় ঘোরাফেরা/আড্ডা বন্ধ করতে হবে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া রাত ১০টার পর বাইরে বের হওয়া নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।

১২. প্রয়োজনে বাইরে গেলে মাস্ক পরিধানসহ সব ধরনের স্বাস্থ্যবিধি পরিপালন নিশ্চিত করতে হবে। মাস্ক পরিধান না করলে কিংবা স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘিত হলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

১৩. করোনায় আক্রান্ত/করোনার লক্ষণযুক্ত ব্যক্তির আইসোলেশন নিশ্চিত করতে হবে। করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তির ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে আসা অন্যদেরও কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করতে হবে।

১৪. জরুরি সেবায় নিয়োজিত প্রতিষ্ঠান ছাড়া সব সরকারি-বেসরকারি অফিস/প্রতিষ্ঠান শিল্প কারখানাগুলো ৫০ ভাগ জনবল দ্বারা পরিচালনা করতে হবে। গর্ভবতী/অসুস্থ/বয়স ৫৫-ঊর্ধ্ব কর্মকর্তা/কর্মচারীর বাড়িতে অবস্থান করে কর্মসম্পাদনের ব্যবস্থা নিতে হবে।

১৫. সভা, সেমিনার, প্রশিক্ষণ, কর্মশালা যথাসম্ভব অনলাইনে আয়োজনের ব্যবস্থা করতে হবে।

১৬. সশরীরে উপস্থিত হতে হয় এমন যেকোনো ধরনের গণপরীক্ষার ক্ষেত্রে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি পরিপালন নিশ্চিত করতে হবে।

১৭. হোটেল-রেস্তোরাঁগুলোতে ধারণক্ষমতার ৫০ ভাগের বেশি মানুষের প্রবেশ বন্ধ করতে হবে।

১৮. কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ এবং অবস্থানকালীন সর্বদা বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক পরিধানসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি পরিপালন নিশ্চিত করতে হবে।

পিডি/বিএ/জিকেএস