জাতীয়

সংক্রমণ বাড়ায় উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা, স্বাধীনতা দিবসেও নেই উচ্ছ্বাস

মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি ও মৃত্যুভীতি মানুষের স্বাভাবিক হাসি, আনন্দ ও উচ্ছ্বাস কেড়ে নিয়েছে। যেকোনো জাতীয় দিবস কিংবা ছুটির দিন পেলেই জাতি, ধর্ম ও বর্ণ নির্বিশেষে বাঙালি জাতি উৎসব ও আনন্দে মেতে ওঠে। রাজধানীজুড়ে লাখো মানুষের ঢল নামে। পরিবার-পরিজন নিয়ে নগরবাসীরা রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে মুক্ত বিহঙ্গের মতো ঘুরে বেড়ান। কিন্তু করোনার কারণে থমকে গেছে মানুষ। মুখের হাসি ও উচ্ছ্বাস কোথায় যেন হারিয়ে গেছে।

Advertisement

শুক্রবার (২৬মার্চ) স্বাধীনতার রজতজয়ন্তী ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপিত হলেও মানুষের মধ্যে সেই আনন্দ ও উচ্ছ্বাস দেখা যায়নি।

বিকেলে সরেজমিন রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সর্বত্রই মানুষের উপস্থিতি অনেক কম। রাস্তাঘাটে গণপরিবহনের সংখ্যাও কম। স্বাধীনতা দিবসে প্রধানত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এবং শহীদ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানসহ আশেপাশের এলাকায় অগণিত মানুষের ঢল নামে। কিন্তু করোনার কারণে এ বছর এসব এলাকায় মানুষের তেমন ভিড় দেখা যায়নি।

অন্যান্য বছর মানুষের ঢল সামলাতে বাংলামোটর, পলাশী, নীলক্ষেত ও বকশিবাজারের প্রবেশপথে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। মানুষকে পায়ে হেঁটে ভিড় ঠেলে টিএসসি কিংবা সোহরওয়ার্দী উদ্যানে যেতে হয়। কিন্তু এবার করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যু বেড়ে যাওয়ার কারণে মানুষের উপস্থিতি কম হওয়ায় সব প্রবেশপথই খোলা দেখা যায়। যারা বেরিয়েছেন তাদের মধ্যেও এক ধরনের জড়তা চোখে পড়ছে।

Advertisement

শাহজাহানপুরের বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন সস্ত্রীক সোহরোওয়ার্দী উদ্যানে অমর একুশের বইমেলায় এসেছেন। বিকেলে এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, প্রতি বছরই ২৬ মার্চে পরিবার নিয়ে ঘুরতে আসেন। অন্যান্য বছর অনেকটা পথ পায়ে হেঁটে যানজট ঠেলে আসতে হলেও আজ কোনো ভোগান্তিই পোহাতে হয়নি। কিন্তু তবুও কেন জানি ভাল লাগেনি। মানুষজন কম। সবার মধ্যে কেমন একটা ভীতি লক্ষ্য করেছেন।

হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে পুলিশ বক্সে বসে মোবাইলে গেম খেলছিলেন একজন ট্রাফিক পুলিশ। আলাপকালে তিনি বলেন, একে তো করোনা, তার উপর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগমনের কারণে যানবাহন চলাচলে আগে থেকেই সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হয়। এ কারণে রাস্তাঘাট ফাঁকা। মানুষের উপস্থিতিও কম। এ কারণে বসে থাকার সুযোগ পাচ্ছেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে এমনটা ভাবতেই পারতেন না বলে জানান তিনি।

এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সারাদেশে ৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৮ হাজার ৮৩০ জনে। একই সময়ে নতুন তিন হাজার ৭৩৭ জন রোগী শনাক্ত হয়। এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার ২৪ ঘণ্টায় ৩৪ জনের মৃত্যু এবং নতুন তিন হাজার ৫৮৭ জন রোগী শনাক্ত হয়।

এমইউ/এএএইচ/এএসএম

Advertisement