বগুড়ার সারিয়াকান্দির যমুনার চরে শেফালী বেগম (২৪) ও তার ছয়মাস বয়সী মেয়ের রুমানা হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ। পারিবারিক কলহের জের ধরে গলাটিপে প্রথমে নিজ সন্তান ও পরে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে স্ত্রীকে হত্যা করেন আল আমিন (২৮)। বৃহস্পতিবার (২৫ মার্চ) বগুড়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ওমর ফারুকের আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন আল আমিন।
Advertisement
শুক্রবার (২৬ মার্চ) দুপুর ১২টায় জেলা পুলিশের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
এর আগে গত ২৮ ফেবরুয়ারি সারিয়াকান্দির বোহাইল ইউনিয়নের দক্ষিণ শংকরপুর গ্রামে ভুট্টাক্ষেত থেকে শেফালী বেগম ও তার ছয়মাস বয়সী মেয়ে রুমানার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় শেফালী বেগমের বাবা ওসমান মণ্ডল বাদী হয়ে পরের দিন সারিয়াকান্দি থানায় অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে তদন্তের স্বার্থে ২১ মার্চ শেফালীর স্বামী আল আমিনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
Advertisement
পুলিশের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আল আমিন চরাঞ্চলে মোটরসাইকেল চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। তার অভাবের সংসার ছিল। টাকা-পয়সার জন্য প্রায়ই স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া-বিবাদ লেগে থাকত। আট বছর তিনি প্রেম করে শেফালী বেগমকে বিয়ে করেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আল আমিন হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতা সম্পূর্ণরূপে অস্বীকার করেন। পরে তাকে পাঁচদিনের রিমান্ডে নেয়া হয়।
রিমান্ডে আল আমিনকে ব্যাপকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় এবং হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে পুলিশের উদ্ধারকৃত তথ্য-প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়। এক পর্যায়ে তিনি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতা স্বীকার করেন।
জবানবন্দিতে তিনি জানায়, পারিবারিক কলহের জের ধরে গত ২৭ ফেবরুয়ারি রাতে আল আমিন প্রথমে তার ছয়মাস বয়সী কন্যা সন্তান রোমানাকে গলা টিপে হত্যা করেন। এরপর স্ত্রী শেফালী বেগমকে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে হত্যা করে। হত্যাকাণ্ডের পরদিন তিনি নিজেই অন্যান্য আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে ভুট্টাক্ষেতে লাশ খুঁজতে যান এবং এ সম্পর্কে কিছুই জানেন না এমন অভিনয় করতে থাকেন।
আল আমিন আরও জানান, তিনি নিয়মিত গাঁজা সেবন করতেন এবং হত্যাকাণ্ডের দিন একটু বেশি গাঁজা সেবন করেছিলেন।
Advertisement
সারিয়াকান্দি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান জানান, গ্রেফতার আল আমিন আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। পরে তাকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।
এসআর/এএসএম