সুনামগঞ্জের শাল্লার নোয়াগাঁও গ্রামে সংখ্যালঘুদের বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় সরকারি দলের লোকজনই দায়ী বলে অভিযোগ করেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ড. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
Advertisement
বৃহস্পতিবার (২৫ মার্চ) দুপুরে গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালের মেজর হায়দার বীর উত্তম মিলনায়তনে সুনামগঞ্জের নোয়াগাঁওয়ে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা, নির্যাতন ও লুটপাটের প্রতিবাদ এবং দুষ্কৃতিকারীদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে সুনামগঞ্জের নোয়াগাঁও পরিদর্শনের প্রত্যক্ষ বিবরণ তুলে ধরেন- ভাসানী অনুসারী পরিষদের চেয়ারম্যান ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, সংগঠনের মহাসচিব শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, প্রেসিডিয়াম সদস্য নঈম জাহাঙ্গীর, সদস্য জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, রাষ্ট্রচিন্তার চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম, প্রাণী গবেষক ম এনাম আল হক, ব্যারিস্টার সাদিয়া আমিন প্রমুখ।
জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘ওই গ্রাম আওয়ামী লীগ অধ্যুষিত, ওই গ্রামে শুধু সজল সরকার নামে একজন বিএনপির লোক আছেন। আমাকে স্থানীয় এবং আওয়ামী লীগের লোকজন বলেছেন, ঝুনু দাস বিএনপি করে, এমন কথা স্থানীয়রা জানেন না,তারা নাকি প্রথম এই কথা পত্রিকা মারফত শুনেছেন।’
Advertisement
তিনি আরও অভিযোগ করেন, ‘প্রশাসনও হামলার সব জানতো। প্রশাসন তাদের আশ্বস্ত করে বলেছিল হামলা হবে না। তাই গ্রামবাসী পালিয়ে যায়নি। তবু হামলা হয়েছে। এই ঘটনা আমি খোঁজ নেয়ার চেষ্টা করেছি। এই কাজে মসজিদের তিনটি মাইক ব্যবহার করা হয়েছে। মসজিদের ওপর কর্তৃত্ব কাদের থাকে? সরকারি দলের থাকে।’
‘এই এলাকা খুবই প্রত্যন্ত। আমরা সেখানে গিয়েছি। সেখানের মানুষকে দেখে বুঝেছি দারিদ্র্য কতো কঠিন। এক-দেড় রুমের খুপড়িতে তারা বাস করে। স্বাধীনতার ৫০ বছরে যা অকল্পনীয়। আমরা ভেবেছিলাম রামু নাসিরনগরই শেষ ঘটনা। এত দিন থাকতে ১৭ মার্চ কেন তারা বেছে নিলো? বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনকে কেন বেছে নিয়েছে? কারা বেছে নিয়েছে? সরকার দলের কর্মীরা। বেছে বেছে এই দিনটাকেই তারা এই কাজটি করেছে।’
ওই হামলার বিষয়ে সরকারের প্রশাসন নির্লিপ্ত থাকার অভিযোগ করে তিনি আরও বলেন, ‘সেখানের ১১ জন মুক্তিযোদ্ধার সাক্ষাৎকার পেয়েছি। যাদের মধ্যে ১০ জন সংখ্যালঘু এবং একজন মুসলিম মুক্তিযোদ্ধা। স্থানীয় এই ১১ জন মুক্তিযোদ্ধা আমার কাছে অভিযোগ করেছেন, হামলার বহু আগে তারা ইউএনওকে জানিয়েছেন এবং সাহায্য চেয়েছেন,কিন্তু তাদের ইউএনও সাহায্য তো করেইনি বরং ফোনে ওই সময় দুর্ব্যবহার করেছেন।’
হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত ১৫০ পরিবারের বাড়ি নির্মাণ, একজন বিচারপতি, সাবেক আইজিপি নুর মোহাম্মদ ও সাবেক সেনা কর্মকর্তা এম করিমের নেতৃত্বে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন, শেখ রেহানাকে প্রধান করে সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় গঠন এবং মসজিদের মাইক ধর্মীয় কাজ ছাড়া কোনো রাজনৈতিক কাজে ব্যবহার না করারও দাবিও জানান জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
Advertisement
তিনি আরও বলেন, ‘এই জাতীয় ঘটনা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী খুব পছন্দ করে। তাতে ৭ জন হয় মূল আসামি ৫০০ জন হয় অজ্ঞাতনামা পুরুষ আসামি। এখন ধান কাটার সময়। কিন্তু তারা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। আর পুলিশের দর-দাম বাড়ছে।’
কেএইচ/এসএস/জেআইএম