ধর্ম

হজরত নূহ আলাইহিস সালামের রোজা পালন

রোজা ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের একটি। যুগে যুগে নবি রাসুলগণ রোজার বিধান পালন করেছেন। পৃথিবীর প্রথম রোজা পালন করেছেন আদি মানব হজরত আদম আলাইহিস সালাম। এ ছাড়া মুসলিম উম্মাহকে লক্ষ্য করে আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারিমে রোজার বিধানের কথা তুলে ধরেছেন। প্রথম রাসুল হজরত নুহ আলাইহিস সালামও রোজা পালন করেছেন। কেমন ছিল তাঁর রোজা পালন?

Advertisement

যুগে যুগে নবি-পয়গম্বরদের রোজা পালনের কথা সুস্পষ্ট ভাষায় কুরআনে ওঠে এসেছে এভাবে-

‘হে ঈমাদারগণ! তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে। যেভাবে ফরজ করা হয়েছিল তোমারে আগের লোকদের (নবি-রাসুল ও তাদের উম্মত) ওপর। যাতে তোমরা পরহেজগার হতে পার।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ১৮৩)

এ আয়াতে বিষয়টি সুস্পষ্ট যে, রোজা শুধু উম্মতে মুহাম্মাদির জন্য ফরজ নয়; বরং আগের অনেক নবি-রাসুল ও তাদের অনুসারীদের জন্যও ফরজ ছিল।

Advertisement

হজরত নূহ আলাইহিস সালামের রোজা

আদম আলাইহিস সালামের পর নবুয়ত ও রেসালাতের মহান দায়িত্ব নিয়ে পৃথিবীতে আসেন হজরত নুহ আলাইহিস সালাম। তিনি দুনিয়ার প্রথম রাসুল ছিলেন। তাঁকে দ্বিতীয় আদমও বলা হয়। তাঁর ওপরও রোজার বিধান ছিল।

মুসলিম উম্মাহর জন্য শুধু রমজান মাস রোজা পালন করা ফরজ। অথচ হাদিসের বর্ণনা থেকে জানা যায়, নুহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম বছরে ২ দিন ছাড়া সারা বছর রোজা পালন করতেন। হাদিসে এসেছে-

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘হজরত নূহ আলাইহিস সালাম শাওয়াল মাসের ১ তারিখ (ইয়াওমুল ফিতর) এবং জিলহজ মাসের ১০ তারিখ (ইয়ামুল আজহা) ছাড়া গোটা বছর রোজা রাখতেন।’ (ইবনে মাজাহ)

Advertisement

হজরত নুহ আলাইহিস সালামের সময় রোজার বিধান সম্পর্কে তাফসিরে ইবনে কাসিরে একটি তথ্য এসেছে-

হজরত মুয়াজ, ইবনে মাসউদ, ইবনে আব্বাস, আতা, কাতাদাহ ও যাহহাক রাদিয়াল্লাহু আনহুম বর্ণনা করেন, নুহ আলাইহিস সালামের যুগে প্রত্যেক মাসে ৩টি রোজা রাখা ফরজ ছিল। পরে আল্লাহ তাআলা রমজানের এক মাস রোজার বিধান দেয়ার মাধ্যমে তা (প্রত্যেক মাসের ৩ দিনের রোজা) রহিত করে দেন।’ (ইবনে কাছির)

অন্য বর্ণনায় এসেছে-

হজরত নুহ আলাইহিস সালামের যুগ থেকে হজরত মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের যুগ পর্যন্ত রমজানের রোজা ফরজ হওয়ার আগে কমপক্ষে ৩টি করে রোজা ফরজ ছিল।’ (ইবনে কাছির)

কুরআন-সুন্নাহর বর্ণনায় এ কথা সুস্পষ্ট যে, রোজা শুধু উম্মতে মুহাম্মাদির ওপরই ফরজ হয়নি বরং আগের নবি-রাসুলদের ওপরও রোজার বিধান ছিল।

উল্লেখ্য, রহমত বরকত মাগফেরাত ও নাজাতের মাস রমজান আসতে আর একমাসও বাকি নেই। তাই রমজানের রোজার প্রস্তুতি এখন থেকেই নেয়া জরুরি। বিশেষ করে এ শাবান মাসের রোজা রাখার মাধ্যমেই সে প্রস্তুতি শুরু করা উত্তম।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে নবুয়ত ও রেসালাতের অন্যতম আদর্শ রোজা পালনে নিজেদের প্রস্তুতি গ্রহণের তাওফিক দান করুন। রমজানজুড়ে  রহমত বরকত মাগফেরাত ও নাজাত পাওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/জিকেএস