জাতীয়

গরমে তৃষ্ণা মেটাতে চাহিদা বেড়েছে শরবত ও ফলের জুসের

রাজধানীর শাহবাগের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) প্রশাসনিক ব্লকের দক্ষিণ দিকের প্রবেশ গেটের সামনে দাঁড়িয়ে এক যুবক ও এক বৃদ্ধা। বৃদ্ধার বয়স আনুমানিক ষাট বছর। ছেলেটির এক হাতে পরীক্ষা-নিরীক্ষার ফাইল। তিনি বৃদ্ধাকে অদূরে গাছের ছায়ায় দাঁড়াতে বলেন।

Advertisement

এ সময় বৃদ্ধা বলেন, ‘বাবারে গরমে ভীষণ তেষ্টায় (তৃষ্ণায়) বুক ফেটে যাচ্ছে। আমারে একটু কচি শসা কিনে খাওয়ারে, বাবা।’ ছেলেটি তখন দৌঁড়ে ফুটপাতের দোকান থেকে ফালি করা শসা কিনে এনে দেন। বৃদ্ধা তৃপ্তি করে শসা খেতে থাকেন।

পাশেই এক তরুণ-তরুণীকে দুটি ডাবে চুমুক দিতে দেখা গেল। এক রিকশাচালককে দেখা গেল এক ঢোকে বরফ মিশ্রিত শরবত খেয়ে গামছা হাতে মুখের ঘাম মুছতে।

মঙ্গলবার (২৩ মার্চ) দুপুর ১২টায় জাগো নিউজের এ প্রতিবেদকের চোখে এমন দৃশ্য ধরা পড়ে।

Advertisement

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বিভিন্ন দোকানে লেবু ও আখের শরবত, ঠান্ডা লাচ্ছি, কাঁচা আম, তরমুজ, পেপের জুস ও ডাবের চাহিদা বেড়েছে। এছাড়া ফুটপাতে ফালি করে সাজিয়ে রাখা শসা, গাজর, তরমুজ ও পেপের দোকানেও ক্রেতাদের বেশ ভিড় লক্ষ্য করা যায়।

রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে গত কয়েকদিন ধরে মৃদু তাপপ্রবাহ চলছে। ফলে জীবন ও জীবিকার প্রয়োজনে যারা ঘরের বাইরে বের হচ্ছেন প্রখর সূর্যতাপে ও ভ্যাপসা গরমে ঘেমে অস্থির হচ্ছেন তারা। গরমে তেষ্টা মেটাতে অসংখ্য মানুষকে ডাব, শসা, গাজর ও বরফ মেশানো শরবতের দোকানে ভিড় জমাতে দেখা যায়। করোনা সংক্রমণের কারণে মুখে মাস্ক পরিধানের ফলে স্বাভাবিকভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস গ্রহণে সমস্যার কারণে সহজেই ঘামছেন মানুষ।

আবহাওয়া অধিদফতরের পূর্বাভাসে মঙ্গলবার সকাল নয়টা থেকে বুধবার সকাল নয়টা পর্যন্ত পূর্বাভাসে বলা হয়- ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগসহ রাজশাহী ও পাবনা অঞ্চল এবং নীলফামারী জেলার ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকবে। সারাদেশে দিনের ও রাতের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাবে। মঙ্গলবার দুপুর দেড়টা পর্যন্ত ঢাকায় সর্বোচ্চ ৩৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। সোমবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয় সীতাকুণ্ডে ৩৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

বিএসএমএমইউর আউটডোরে ডাক্তার দেখিয়ে বের হয়ে শাহবাগের আজিজ কো-অপারেটিভ মার্কেটের সামনের দোকানে ডাব খাচ্ছিলেন রাজধানীর লালবাগের গৃহবধূ শাহানা আক্তার ও তার ১০ বছর বয়সী ছেলে সায়মন। শাহানা আক্তার বলেন, অনেকক্ষণ সিরিয়ালে দাঁড়িয়ে থেকে গরমে অস্থির হয়ে গেছেন তাই ডাব কিনে খাচ্ছেন। কয়েকদিন আগেও যে ডাব ৫০ টাকায় খেয়েছেন গরম পড়ার কারণে সেই একই সাইজের ডাব একদাম ৭০ টাকায় কিনে খেতে হচ্ছে।

Advertisement

ধানমন্ডি লেকের অদূরে ফুটপাতে লেবুর শরবত বিক্রেতা হালিম মিয়া বলেন, গত কয়েকদিন ধরে তার বেচাকেনা খুব ভালো। প্রতি গ্লাস ১০ টাকা দামে বরফ মেশানো লেবুর শরবত বিক্রি করেন। ক্রেতার ভিড় বেশি হওয়ায় ছোট ভাইকে নিয়ে এসেছেন। এক ক্রেতা খাওয়ার পর সে দ্রুত গ্লাস ধুয়ে দিলে আরেক ক্রেতাকে শরবত ঢেলে দেন হালিম।

এমইউ/এমআরআর/জিকেএস