উলিপুর পৌরসভায় নির্বাচনী আমেজ বইতে শুরু করেছে। দলীয় প্রতীক দিয়ে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে প্রচারণায় নতুন মাত্রা যুক্ত হয়েছে। দলীয় মনোনয়ন পেতে সম্ভাব্য মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা জোর লবিং করছেন। পাড়া- মহল্লা, রাস্তার মোড় এবং মার্কেটে ডিজিটাল ব্যানার-ফেস্টুনে ছেঁয়ে গেছে। এ নির্বাচনে বিএনপির সাবেক সভাপতি তারিক আবু আলা চৌধুরীকে একক প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দিলেও উপজেলা আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টিতে একাধিক প্রার্থী থাকায় এখনো দলীয় প্রার্থী নির্বাচন করা হয়নি। এক্ষেত্রে বিএনপি ভোটের মাঠে প্রচার প্রচারণায় এগিয়ে থাকলেও পিছিয়ে রয়েছে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি। ২০১১ সালে কুড়িগ্রামের উলিপুর পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী আব্দুল হামিদ সরকার বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী বর্তমান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি হায়দার আলী মিঞাকে পরাজিত করে মেয়র নির্বাচিত হন। আওয়ামী লীগের মেয়র পদে মনোনয়ন প্রত্যাশীরা হলেন- পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ সরকার, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্মলীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক সাজ্জাদুর রহমান তালুকদার (সাজু), উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কুদ্দুস এবং বর্তমান মেয়র আব্দুল হামিদ সরকার। এ পর্যন্ত দলীয় মনোনয়ন না পেলেও তারাও ভোট প্রার্থনা করে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রচারণা চালাচ্ছেন। জাতীয় পার্টি থেকে নির্বাচিত বর্তমান সংসদ সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী একেএম মাঈদুল ইসলাম মুকুল এর চাচাতো ভাই একেএম সফিকুল ইসলাম দারা প্রার্থী হওয়ার ঘোণো দিয়ে প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। অন্যদিকে গত পৌর নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী জাতীয় পার্টির পৌর শাখার সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হক মানিক জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেতে আগ্রহী। তিনিও মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। এদিকে পৌর নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রার্থীরা ভোটারদের বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। জনসংযোগের সময় তারা বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান এবং হঠাৎ গজিয়ে উঠা কিছু ক্লাবকে আর্থিক অনুদান দিচ্ছেন। বর্তমান পৌর মেয়র আব্দুল হামিদ সরকার বলেন, দল তাকে মনোনয়ন দিলে এবং তিনি পুনরায় নির্বাচিত হলে উলিপুরকে একটি মডেল শহরে পরিণত করবেন।বিএনপির প্রার্থী তারিক আবু আলা চৌধুরী বলেন, নির্বাচিত হলে উলিপুরকে সমস্যামুক্ত আধুনিক শহরে পরিণত করবো। পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ সরকার বলেন, দল তাকেই মনোনয়ন দিবেন এবং নির্বাচিত হলে তিনি দূরুনীতিমুক্ত পৌরসভা ও নাগরিক সেবা নিশ্চিত করবেন। বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্মলীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক সাজ্জাদুর রহমান তালুকদার সাজু বলেন, তিনি নির্বাচিত হলে মানুষের স্বপ্ন পূরণে কাজ করবেন। জাতীয় পার্টির একেএম সফিকুল ইসলাম দারা নির্বাচিত হলে পৌরবাসীর সেবা নিশ্চিত করার পাশাপাশি উলিপুরকে যানজটমুক্ত আধুনিক শহরে পরিণত করার ঘোষণা দেন।জাতীয় পার্টির পৌর শাখার সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হক মানিক বলেন, জাতীয় পার্টি থেকে তাকেই মনোনয়ন দিবেন এবং তিনি নির্বাচিত হলে পৌরবাসীকে সঙ্গে নিয়ে পরিচ্ছন্ন পৌরসভা গড়ে তুলবেন। ১৯৯৮ সালে উলিপুর পৌরসভা গঠিত হয়। এই পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে ২০১১ সালে মোট ভোটার সংখ্যা ছিল ২৯ হাজার ৯শ ৩৮ জন। এদের মধ্যে পুরুষ ১৪ হাজার ২শ ৮৮ জন এবং নারী ১৫ হাজার ৬শ ৬০ জন। ২০১১ সালে উলিপুর পৌরসভা নির্বাচনে ৮ জন প্রার্থী মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। বর্তমান মেয়র আব্দুল হামিদ সরকার আনারস প্রতীক নিয়ে ৮ হাজার ৯শ ৪৫ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীরা হলেন- আব্দুল বাকী বীল দোয়াতকলম প্রতীক নিয়ে ভোট পান ৩শ৮৪, আমিনুল ইসলাম কাপ-পিরিচ প্রতীকে ২শ ৭ ভোট, আবু সাইদ সরকার ৩ হাজার ৮শ ৪০ ভোট, গোলাম মোস্তফা তালা প্রতীকে ৮শ ৮৯ ভোট, মোজাম্মেল হক মানিক টেলিভিশন প্রতীকে ১ হাজার ৬শ ৫০ ভোট, সাজ্জাদুর তালুকদার সাজু জাহাজ প্রতীকে ২ হাজার ৩শ ১৮ ভোট, হায়দার আলী মিঞা দেয়াল ঘড়ি প্রতীকে ৬ হাজার ৯শ ৮১ ভোট পেয়ে পরাজিত হন। এসএস/এমএস
Advertisement