অর্থনীতি

ধস থেকে শেয়ারবাজারে উল্লম্ফন

সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবস সোমবার লেনদেনের শুরুতে দেশের শেয়ারবাজারে ধস দেখা দিলেনও শেষ পর্যন্ত উল্লম্ফন ঘটেছে। দিনের লেনদেন শেষে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সবকটি মূল্য সূচকের বড় উত্থান হয়েছে।

Advertisement

এদিন ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া ১৮৮টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে মাত্র ৫৬টির। আর ১০৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

এমন ইতিবাচক প্রবণতার মধ্য দিয়ে শেয়ারবাজারের লেনদেন শেষ হলেও শুরুর চিত্র ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন। লেনদেনের শুরুতে ডিএসইর ওয়েবসাইটে চোখ রাখতেই ধাক্কা খান বিনিয়োগকারীরা। কারণ লেনদেন শুরুর প্রথম ২০ মিনিট ডিএসইর ওয়েবসাইটে বাজারের প্রকৃত চিত্র দেখা যাচ্ছিল না।

২০ মিনিট অন্ধকারে থাকার পর ডিএসইর ওয়েবসাইট সচল হলে আরও বড় ধাক্কা খান বিনিয়োগকারীরা। ওয়েবসাইটে দেখা যায়, দরপতন হচ্ছে একের পর এক প্রতিষ্ঠানের। দেখতে দেখতে ধসে রূপ নেয় শেয়ারবাজার। প্রথম ঘণ্টার লেনদেনে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৫৯ পয়েন্ট পড়ে যায়।

Advertisement

এতে আবার ধসের আতঙ্ক পেয়ে বসে বিনিয়োগকারীদের। কারণ আগের টানা দুই কার্যদিবসে ধস নামে শেয়ারবাজারে। গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার ও চলতি সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার পরপর দুদিন ধস নামায় ডিএসইর প্রধান সূচক ১৬৫ পয়েন্ট কমে যায়।

তবে টানা তৃতীয় দিনের মতো লেনদেনের শুরুতে ধসের মধ্যে থাকলেও পরে ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়ায় শেয়ারবাজার। সকাল সাড়ে ১১টার পর ধস থেকে বেরিয়ে আসার আভাস দিতে থাকে বাজার। আর শেষ দিকে পতন কাটিয়ে একের পর এক প্রতিষ্ঠান দাম বাড়ার তালিকায় নাম লেখালে উল্লম্ফনের দেখা মেলে।

এতে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৬২ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ৪১২ পয়েন্টে উঠে এসেছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসইর-৩০ আগের দিনের তুলনায় ৩২ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ৬৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ ৯ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ২৩৫ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

সূচকের উল্লম্ফনের পাশাপাশি বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণও। দিনভর ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৬৯৩ কোটি ১৭ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৬১৫ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় লেনদেন বেড়েছে ৭৭ কোটি ২০ লাখ টাকা।

Advertisement

টাকার অঙ্কে ডিএসইতে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকোর শেয়ার। কোম্পানিটির ৭৬ কোটি ৪২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা প্রিমিয়ার ব্যাংকের ৪৬ কোটি ৬৭ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ৪২ কোটি ৮৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে এনআরবিসি ব্যাংক।

এছাড়াও ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- রবি, বেক্সিমকো ফার্মা, লংকাবাংলা ফাইন্যান্স, জিবিবি পাওয়ার, লাফার্জ হোলসিম, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো ও স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস।

অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক মূল্য সূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ১৯১ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৩২ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেয়া ২১৭টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১২২টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৪৯টির এবং ৪৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

এমএএস/এসএস/এমএস