আকাশে উড়ে পাহাড়, সমুদ্র দেখার ইচ্ছে সবার মনেই কমবেশি আছে! ঠিক পাখির মতো উড়ে বেড়ানো সম্ভব প্যারাসেইলিংয়ের মাধ্যমে। বর্তমানে মানব এ ঘুড়ির জনপ্রিয়তা বেড়েছে। রংধনুর মতো সাতরঙে রঙিন এ ঘুড়িতে চড়ে দিব্যি উড়ে বেড়ানো যায় আকাশে।
Advertisement
যদিও বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে প্যারাসেইলিংয়ের কদর অনেক। দেশের ভেতরে প্যারাসেইলিং করার চমৎকার ব্যবস্থা আছে একমাত্র কক্সবাজারের দরিয়ানগর সমুদ্র সৈকতে। বেশ কয়েক বছর ধরে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে পর্যকটরা প্যারাসেইলিংয়ের আনন্দ নিচ্ছেন।
কক্সবাজার শহর থেকে প্রায় ৬ কিলোমিটার দূরে সৈকতের হিমছড়ি দরিয়ানগর পয়েন্টে মেরিন ড্রাইভের দক্ষিণ পাশে সৈকতে প্যারাসেইলিং করা হয়। সেখানে গেলেই চোখে পড়বে মানব ঘুড়ি আকাশে কীভাবে উড়ে বেড়াচ্ছে।
প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত প্যারাসেইলিংয়ের সৌন্দর্য উপভোগ করতে দরিয়ানগরে ভিড় করেন পর্যটকরা। এ আনন্দ পেতে ব্যয় করতে হবে দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা।
Advertisement
প্যারাসেইলিং কীভাবে করা হয়? একটি প্যারাসুটে বেঁধে দেওয়া হবে আপনাকে, একটি স্পীড-বোট আপনাকে টেনে নিয়ে যাবে সমুদ্রে, আর সেই তীব্র গতিতে আপনি ঠিক একটা ঘুড়ির মতই উড়ে যেতে থাকবেন।
পানির মতো সমুদ্রের উপর দিয়ে উড়ে বেড়ানোর একমাত্র উপায় বোধ হয় প্যারাসেইলিং। রোমাঞ্চকর এ প্যারাসেইলিং এর স্বাদ নেওয়ার সবচেয়ে সুন্দর স্থান হলো সৈকত। বর্তমানে দরিয়ানগরে দু’টি প্রতিষ্ঠান থেকে প্যারাসেইলিং করার ব্যবস্থা আছে।
প্যারাসেইলিং করার কয়েকটি প্যাকেজ আছে। খরচ পড়বে- ১৫০০, ২০০০ ও ২৫০০। ১৫০০ টাকার রাইডে আপনি শুধু আকাশে উড়তে পারবেন। ২০০০ টাকার রাইডে আপনি আকাশেও উড়তে পারবেন আবার নামার সময় সমুদের পানিতে হালকা পা স্পর্শও করতে পারবেন।
৫ থেকে ১২ মিনিট পর্যন্ত আপনি প্যারাসেইলিংয়ের মাধ্যমে পাখির মতো আকাশে উড়তে পারবেন। ৩০০-৫০০ ফুট পর্যন্ত উপরে ভেসে বেড়াতে পারবেন।
Advertisement
প্যারাসেইলিংয়ের পর কক্সবাজার থেকে টেকনাফগামী রাস্তা দিয়ে সামান্য হাঁটলেই সামনে পাবেন বড়ছেড়া গ্রাম। ৫টি পাহাড়ের সমন্বয়ে গড়ে ওঠা দরিয়ানগর বিনোদন কেন্দ্র। মনোরম পাহাড়ি পরিবেশ ও সূর্যাস্ত উপভোগ করতে চাইলে দরিয়ানগর হতে পারে আপনার জন্য সেরা একটি স্থান।
দরিয়ানগরে উঁচু পাহাড়ের নিচ দিয়ে আঁকাবাঁকা একটি সুড়ঙ্গ পথ আছে, যা শাহেনশাহ গুহা নামে পরিচিত। আরও আছে ছোট কিছু ঝিরি ঝরনা। সময় পেলে ঘুরে আসতে পারেন এ গুহা থেকেও।
যেভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে কক্সবাজারগামী বিভিন্ন এসি ও নন-এসি বাস সার্ভিস রয়েছে। এদের মধ্যে সৌদিয়া, এস আলম এর মার্সিডিজ বেঞ্জ, গ্রিন লাইন, হানিফ এন্টারপ্রাইজ, শ্যামলী পরিবহন, সোহাগ পরিবহন ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। ভাড়া পড়বে জনপ্রতি ৯০০ থেকে ২০০০ টাকা পর্যন্ত।
এ ছাড়াও ঢাকা থেকে ট্রেনে করে চট্টগ্রাম হয়ে আপনি কক্সবাজার যেতে পারেন। আর যদি বাজেট বেশি হয়ে থাকে তবে কক্সবাজার যেতে আকাশপথ বেছে নিতে পারেন। কক্সবাজারের যেকোনো স্থান থেকে দরিয়া নগর যেতে পারবেন খুব সহজেই।
অটোরিকশা/ ইজিবাইক/ বা সিএনজি দিয়ে মেরিন ড্রাইভ রোডের সৌন্দর্য দেখতে দেখতে চলে যান দরিয়া নগরে। লোকাল অটোরিকশায় গেলে ভাড়া নিবে ২০ টাকা।
কোথায় থাকবেন?
কক্সবাজারে পর্যটকদের জন্য অসংখ্য আবাসিক হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট ও কটেজ রয়েছে। ঢাকা থেকেই ফোন দিয়ে বুকিং দিতে পারবেন। তবে সেখানে পৌঁছে বিভিন্ন হোটেল দেখে শুনে দরদাম করে রুম ভাড়া নিতে পারবেন। তাহলে কম খরচেই থাকতে পারবেন।
জেএমএস/জেআইএম