সাহিত্য

আষাঢ়, তুই এবং মৃত্যু : হাহাকারের গভীরতা

সাকি সোহাগ

Advertisement

হৃদয় আঙিনা থেকে উঠে আসা বাক্যগুলো একসময় মিলে যায় কবিতার মায়াজালে। কবিতা হয়ে ওঠে কবির বেঁচে থাকার উৎস। সাজেদুর আবেদীন শান্ত বুক ফুলিয়ে নিশ্বাস নিতে কবিতাগুলো লিখেছেন ‘আষাঢ়, তুই এবং মৃত্যু’ বইতে। তার সবগুলো কবিতাই যেন হৃদয় ছুঁয়ে যায়। মনের গভীরে ভালো লাগা কাজ করে।

প্রথম বই হিসেবে কবিতাগুলো অনেক উঁচু স্তরের। ভাবিয়ে তোলার মতো কবিতা। তার কবিতার গভীরতা পাঠককে মুগ্ধ করবে নিশ্চয়ই। ‘ঈশ্বর- প্রেম না বন্ধুত্ব?’ কবিতায় কবি অজানা ভালোবাসার মানুষকে না পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা থেকে বলেছেন, ‘নষ্ট মগজ গলে পরতে থাকে চেতনা’। লাইনটি ভালো লেগেছে।

কবিতাগুলো লেখার সময় কবি হয়তো ব্যথাতুর হৃদয় নিয়ে প্রকৃতিকে দেখেছিলেন। কবির অধিকাংশ কবিতায় হাহাকার ফুটে উঠেছে। এক ফর্মা কাগজের আঙিনায় কবি যে কবিতাগুলো লিখেছেন তা সত্যিই মনোমুগ্ধকর। তার চিন্তা-চেতনায় মিশে ছিল কবিতার ভেতরের গল্প। কবি শেষ কবিতায় বলেছেন, ‘একদিন মৃত্যুকে সাথে নিয়ে ছেড়ে যাবো তোকে/কারণ আষাঢ়, তুই এবং মৃত্যু ভীষণ প্রিয় আমার।’

Advertisement

এখানে কবি মৃত্যুর কাছে সব প্রিয় বস্তুকে তুচ্ছ করে দেখেছেন। এক বৃষ্টিমুখর আষাঢ়ে কবির মৃত্যু চলে এলে তিনি সব প্রিয়কে ছেড়ে মৃত্যুকে বরণ করবেন। সব মিলিয়ে আমার ভালো লেগেছে কবিতাগুলো। কবির এ চিন্তাধারা, বিষয়বস্তু একজন পাঠককে নাড়া দেবে। তবে কবিতার বইয়ের প্রুফরিড আরও ভালো হওয়া উচিত ছিল।

বইতে কবির পরিচিতি নেই। এটি সাধারণ পাঠককে হতাশ করতে পারে। অনেক পাঠক বই কেনার আগে লেখকের পরিচিতি পড়েন। তারপর সিদ্ধান্ত নেন বইটি কিনবেন কি-না? তবে কবিতাগুলো পড়ে আমার মনে হয়েছে, বইটি কিনে পাঠক ঠকবেন না।

পাতা প্রকাশ থেকে প্রকাশিত বইটির প্রচ্ছদটি করেছেন প্রকাশক মইম সুমন। বইটি অমর একুশে বইমেলায় পাওয়া যাবে মাত্র ৬৫ টাকায়। আমি বইটির প্রচার ও বহুল পাঠ কামনা করছি।

আলোচক: লেখক ও গল্পকার।

Advertisement

এসইউ/জেআইএম