স্বতন্ত্রের প্রার্থিতা অবৈধ ঘোষণার দাবিতে আ.লীগ প্রার্থীর আপিল

হলফনামায় মিথ্যা ও ভুল তথ্য দেয়ার পরও ঝালকাঠি পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী আফজাল হোসেনের প্রার্থিতা বৈধ ঘোষণা করেছেন রিটার্নিং অফিসার। তাই এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসকের কাছে আপিল করেছেন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বর্তমান মেয়র মো. লিয়াকত আলী তালুকদার।

রোববার (২১ মার্চ) লিয়াকত আলী তালুকদারের পক্ষে আপিল দায়ের করেন তার আইনজীবী আব্দুল মান্নান রসুল ও আ স ম মোস্তাফিজুর রহমান মনু।

দায়েরকৃত আপিল সূত্রে জানা যায়, ঝালকাঠি পৌরসভার মেয়র পদে নির্বাচন করার জন্য গত ১৭ মার্চ রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আরিফুল ইসলামের কাছে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী মো. লিয়াকত আলী তালুকদার। পরের দিন মনোনয়নপত্র দাখিল করেন আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত সাবেক মেয়র আফজাল হোসেন রানা।

গত ১৯ মার্চ যাচাই-বাছাইয়ের দিন আফজাল হোসেন রানার দাখিলকৃত হলফনামায় অনেক ভুল এবং মিথ্যা তথ্য রয়েছে উল্লেখ করে তার মনেয়নপত্র বাতিলের দাবি জানান লিয়াকত আলী তালুকদার।

হলফনামা এবং আয়কর রিটার্ন পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, আফজাল হোসেন রানার দাখিলকৃত নির্বাচনী হলফনামায় অস্থাবর সম্পদের পরিমাণে নগদ টাকা দেখানো হয়েছে ২৫ হাজার এবং ব্যাংকে জমাকৃত অর্থ দেখানো হয়েছে পাঁচ লাখ টাকা। অথচ আয়কর রিটার্নে গত ৩০ জুন ২০২০ পর্যন্ত নগদ অর্থের পরিমাণ দেখানো হয়েছে ৪৫ লাখ ৪৬ হাজার ৪৬৭ টাকা।

হলফনামায় অস্থাবর সম্পদের বিবরণে নিজের দুই ভরি স্বর্ণ, স্ত্রীর ১৩ ভরি স্বর্ণ এবং কন্যার নামে ২০ ভরি স্বর্ণ দেখানো হয়েছে। অপরদিকে আয়কর রিটার্নে নিজের এবং স্ত্রীর নামে ৩৫ ভরি স্বর্ণ দেখানো হয়েছে। হলফনামায় স্থাবর সম্পদের বিবরণে আফজাল হোসেনের নামে ১.৩৬৪৬ একর এবং স্ত্রীর নামে ০.০৩৫৭ একর জমি দেখানো হয়েছে। কিন্তু আয়কর রিটার্নে আফজাল হোসেনের নামে জমির পরিমাণ দেখানো হয়েছে ১৭২.৫০ একর। এছাড়া হলফনামার ১৪ পৃষ্ঠায় হলফকারীর স্বাক্ষরের নিচে কোনো তারিখ ছিল না।

আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী লিয়াকত আলী তালুকদারের অভিযোগ, এসব বিষয় রিটার্নিং কর্মকর্তা আরিফুল ইসলামের কাছে প্রমাণসহ উপস্থাপন করা হলেও তিনি আফজাল হোসেনের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেন। তাই আমি জেলা প্রশাসকের কাছে আপিল করেছি। আশা করছি তিনি আমার আপিল গ্রহণ করে আফজাল হোসেনের প্রার্থিতা অবৈধ ঘোষণা করবেন।

লিয়াকত আলী তালুকদারের আইনজীবী আ.স.ম মোস্তাফিজুর রহমান মনু বলেন, ‘ঝালকাঠি পৌরসভার নির্বাচনে রিটার্নিং অফিসার আরিফুল ইসলাম যাচাই-বাছাইকালে গত ১৯ মার্চ ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী মো. ফরিদ হোসেনের হলফনামায় ইতিপূর্বে নিষ্পত্তি হওয়া ফৌজদারি মামলার তথ্য না দেয়ায় তার মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করেন। কিন্তু মেয়র প্রার্থী আফজাল হোসেন মিথ্যা তথ্য দিলেও তার মনোনয়নপত্রটি বাতিল করেননি। যা পক্ষপাতমূলক বলে আমরা মনে করি।

জেলা প্রশাসক ও পৌরসভা নির্বাচনের আপিল কর্তৃপক্ষ মো. জোহর আলী বলেন, ‘সোমবার আপিলের শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। সবার বক্তব্য শুনে এবং কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে সিদ্ধান্ত দেয়া হবে।’

মো. আতিকুর রহমান/এসজে/জিকেএস