ভারতে প্রায় চার মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে। দেশটিতে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে প্রায় ৪১ হাজার মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, একদিনে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা ৪০ হাজার ৯৫৩। গত ২৯ নভেম্বরের পর এই সংখ্যা সর্বোচ্চ।
Advertisement
নতুন করে সংক্রমণ বাড়তে থাকায় বেশ কিছু রাজ্যে পুনরায় স্কুল বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এছাড়া গণসমাবেশ, অন্যান্য নিষেধাজ্ঞাসহ সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত জেলায় লকডাউনের বিষয়ও বিবেচনায় রাখা হয়েছে।
শনিবার ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, দেশটিতে এখন পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ১ কোটি ১৫ লাখ ৫৫ হাজার ২৮৪। দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছে ১ লাখ ৫৯ হাজার ৫৫৮ জন। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছে ১৮৮ জন।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, মহারাষ্ট্র, পাঞ্জাব, কেরালা, কর্নাটক, গুজরাট এই পাঁচ রাজ্যে দৈনিক সংকমণ সবচেয়ে বেশি। করোনা মহামারির শুরু থেকেই এই পাঁচ রাজ্যের পরিস্থিতি সবচেয়ে ভয়াবহ।
Advertisement
টানা তিনদিন ধরেই ভারতে প্রতিদিন নতুন করে ৩০ হাজারের বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। গতকালের চেয়ে আজ সংক্রমণের হার ৪ শতাংশ বেশি। গতকাল নতুন আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৩৯ হাজার ৭২৬। গত এক সপ্তাহে দেশটিতে ২০ হাজারের বেশি মানুষ প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, দৈনিক আক্রান্তের মধ্যে ৮০ শতাংশের বেশিই মহারাষ্ট্র, পাঞ্জাব, কর্নাটক, গুজরাট এবং ছত্তিশগড়ের।
শুক্রবার শুধমাত্র মহারাষ্ট্রেই মোট আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২৫ হাজার ৬৮১। অর্থাৎ দেশের ৬০ শতাংশের বেশি নতুন সংক্রমণ ছিল ওই এক রাজ্যেই। অপরদিকে, মহারাষ্ট্রের রাজধানী মুম্বাইয়ে দৈনিক সংক্রমণ ছিল ৩ হাজার ৬২। এদিকে, মধ্যপ্রদেশের রাজ্য সরকার রাজধানী ভুপাল, ইন্দোর এবং জয়পুরে লকডাউন ঘোষণা করেছে। ওই তিন শহরে শনিবার রাত ১০টা থেকে সোমবার সকাল ৬টা পর্যন্ত লকডাউন জারি থাকবে। এছাড়া সেখানকার স্কুল এবং কলেজ আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
পাঞ্জাবে আজ থেকে মাসের শেষ পর্যন্ত সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সেখানে সিনেমা হল এবং বিভিন্ন শপিংমলে লোকজনের চলাচলে সীমাবদ্ধতা আনা হয়েছে।
Advertisement
শুক্রবার রাজধানী দিল্লিতে নতুন করে ৭১৬ জন আক্রান্ত হয়েছে যা এ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ দৈনিক সংক্রমণ। এর আগে গত বছরের ডিসেম্বরে দেশটিতে সর্বোচ্চ সংক্রমণ ঘটে। সে সময় একদিনে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৭৫৭।
ওয়ার্ল্ডোমিটারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বিশ্বে এখন পর্যন্ত করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যুতে শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এই তালিকায় তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে ভারত। গত কয়েকদিনে দেশটিতে সংক্রমণ আশঙ্কাজনকহারে বাড়ছেই।
টিটিএন/এএসএম