হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজার তথ্য গোপন করে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন বরিশালের গৌরনদী উপজেলার বাটাজোর ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য (মেম্বর) প্রার্থী জামাল মৃধা।
Advertisement
শুক্রবার (১৯ মার্চ) বিকেলে নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং অফিসার পলাশ সরদার তার মনোনয়ন পত্র বাতিল ঘোষণা করেন। এসময় জামাল মৃধা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন। কৌশলে পুলিশকে খবর দিলে পরে তারা জামাল মৃধাকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যান।
জামাল মৃধা ওই ইউনিয়নের বাসুদেবপাড়া গ্রামের আবুল কাসেম মৃধার ছেলে। বৃহস্পতিবার (১৮ মার্চ) সাজার বিষয়টি গোপন করে মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছিলেন।
সহকারী অফিসার কর্মকর্তা পলাশ সরদার বলেন, ‘ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আজ (শুক্রবার) প্রার্থীদের মনোনয়ন যাচাই-বাছাইয়ের দিন ধার্য ছিল। বিকেল ৫ টার দিকে একটি সূত্রে জানতে পারি হত্যা মামলায় জামাল মৃধার যাবজ্জীবন সাজা রয়েছে। তাৎক্ষণিক বিষয়টি উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে অবহিত করি। এরপর নির্বাচন বিধিমালা অনুযায়ী তার মনোনয়ন পত্র বাতিল ঘোষণা করি। পাশাপাশি পুলিশকে খবর দিয়ে তাকে তাদের হাতে জামাল মৃধাকে সোপর্দ করা হয়।'
Advertisement
গৌরনদী উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান তালুকদার বলেন, ‘ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন বিধিমালা অনুযায়ী কোন ব্যক্তির বিরুদ্ধে দুই বছরের অধিক সাজা থাকলে তিনি নির্বাচনে প্রার্থীতা করতে পারবেন না। দুইবছরের কম সাজা থাকালে সাজা ভোগের পর পাঁচবছর অতিবাহিত হলে ওই ব্যক্তি নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন। তবে জামাল মৃধা হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি। বিষয়টি গোপন করে নির্বাচনে তিনি প্রার্থী হয়েছিলেন।’
গৌরনদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) মো. তৌহিদুজ্জামান বলেন, ‘উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে থেকে জামাল মৃধাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে জামাল মৃধা জানান, ১৯৮৮ সালে ধান কাটা নিয়ে সংঘর্ষে বাটাজোর ইউনিয়নের বাসুদেবপাড়ার বাসিন্দা শাহ আলম সরদার নিহত হন। এ ঘটনায় তাকেসহ বাসুদেবপাড়ার ১১ জনকে আসামি করা হয়। মামলার পরপরই তিনি পালিয়ে বাহরাইন চলে যান। ১৯৯৫ সালে তিনি বাহরাইন থাকাকালীন সময় বরিশালের জজ আদালত তাকেসহ ১১ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। ২০১৮ সালের মাঝামাঝি সময় দেশে ফিরে এসে আদালতে আত্মসমর্পণ করলে সাজা ভোগের জন্য তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। ওই বছরের নভেম্বর মাসে তিনি উচ্চ আদালত থেকে জামিন পান। এরপর কয়েক দফায় আদালতে আবেদন করে তিনি জামিনের মেয়াদ বাড়িয়ে ছিলেন। ২০২০ সালের মে মাস পর্যন্ত তার জামিনের মেয়াদ ছিল। ওই সময় করোনার কারণে আদালত বন্ধ থাকায় তিনি জামিনের মেয়াদ বাড়ানোর সুযোগ পাননি। পরবর্তীতেও তিনি আর আদালতে হাজির হননি।
পরিদর্শক (তদন্ত) মো. তৌহিদুজ্জামান বলেন, ‘তাকে আদালতে সোপর্দ করা হবে। আদালতই তার বিষয়য়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নিবেন।’
Advertisement
সাইফ আমীন/আরএইচ/এএসএম