একদিনের ছুটিতে অনেকেই ঢাকার আশেপাশের দর্শনীয় স্থানে যাওয়ার জন্য মুখিয়ে থাকেন। তেমনই এক দৃষ্টিনন্দন স্থান হলো মৈনট ঘাট। মিনি কক্সবাজার হিসেবেও এর সুখ্যাতি আছে।
Advertisement
ঢাকার খুব কাছাকাছি হওয়ায় দুই ঘণ্টার মধ্যেই আপনি মিনি কক্সবাজারে যেতে পারবেন, তা-ও আবার মাত্র ৯০ টাকায়। সারাদিন ঘুরে সন্ধ্যায় আবার ঢাকায় ফিরেও আসতে পারবেন।
ঢাকার দোহার উপজেলার পশ্চিম প্রান্ত ঘেঁষে বয়ে যাওয়া পদ্মা নদীর কোলে মৈনট ঘাট। দোহার থেকে দূরত্ব প্রায় ৮ কিলোমিটার। নদীর ওপারে ফরিদপুরের চরভদ্রাসন। ঢাকার গুলিস্তান থেকে সরাসরি পাকা রাস্তা রয়েছে ঘাট পর্যন্ত।
এ রুটে বাস সার্ভিসও চালু আছে বহুদিন ধরে। জনপ্রতি ভাড়া ৯০ টাকা। ঢাকা থেকে বাসে যেতে সময় লাগে ২ থেকে ৩ ঘণ্টা। তবে ছুটির দিনে রাস্তা ফাঁকা থাকলে দ্রুত পৌঁছানো সম্ভব।
Advertisement
মৈনট ঘাটে গেলে মনে হবে, আপনার সামনে এক টুকরো কক্সবাজার। সারি সারি বাহারি রঙের ছাতার তলায় হেলানো চেয়ার সাজানো। দূরে তাকালে সমুদ্রের বেলাভূমির দৃশ্য। পদ্মার উত্তাল ঢেউ আপনার দিকে বারবার এগিয়ে আসবে।
বড় বড় নৌকা, ছুটে চলা স্পিডবোট- এসব দৃশ্য মুহূর্তেই আপনাকে মুগ্ধ করে তুলবে। ঘাটের কাছাকাছি দুই পাশে হোটেলের সারি। সেগুলোর সাইনবোর্ডে ঘাটের পরিচিতি ‘মিনি কক্সবাজার’।
আপনি চাইলেই মৈনট ঘাটে গিয়ে স্পিডবোটে পদ্মার বুকে ঘুরে বেড়াতে পারেন। একটি মাঝারি সাইজের ট্রলার প্রতিঘণ্টার জন্য ৩০০-৫০০ টাকা পর্যন্ত ভাড়া নিতে পারে। সেখানকার সূর্যাস্তের দৃশ্য আপনার সারাজীবন মনে থাকবে।
মৈনট ঘাটের বয়স কত, তা কেউ সঠিক বলতে পারে না। তবে মিনি কক্সবাজার হিসেবে তার পরিচিতি মূলত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জনপ্রিয়তার কারণে।
Advertisement
মৈনট ঘাটে যাওয়ার উপায়: ঢাকা থেকে মৈনট ঘাটে যাওয়ার সবচেয়ে সুবিধাজনক উপায় হচ্ছে- গুলিস্তানের গোলাপ শাহর মাজারের সামনে থেকে সরাসরি মৈনট ঘাটের উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া যমুনা পরিবহনে চেপে বসা। ৯০ টাকা ভাড়া আর দেড় থেকে দুই ঘণ্টা সময়ের বিনিময়ে আপনি পৌঁছে যাবেন মৈনট ঘাটে।
ফেরার সময় একই বাসে আবার ঢাকা চলে আসবেন। মৈনট থেকে ঢাকার উদ্দেশে শেষ বাসটি ছেড়ে আসে সন্ধ্যা ৬টায়। গুলিস্তানের একই স্থান থেকে এন মল্লিক পরিবহনেও যেতে পারবেন। এক্ষেত্রে আপনাকে নামতে হবে নবাবগঞ্জের মাঝিরকান্দায়। ভাড়া পড়বে ৭০ টাকা।
মাঝিরকান্দা থেকে লোকাল অটোতে দোহারের বাঁশতলা। ভাড়া ১৫ টাকা। চাইলে লক্ষ্মীপ্রসাদ নামক স্থানে নেমে পোদ্দারবাড়ি নামক পুরোনো বাড়িটিও দেখে নিতে পারেন। আর জজবাড়ি, উকিলবাড়ি, কোকিলপ্যারি দালান, খেলারাম দাতার বাড়ি; যাকে স্থানীয়ভাবে আন্ধার কোঠা বলা হয়, এসব দর্শনীয় স্থানগুলো ঘুরে দেখতে চাইলে মাঝিরকান্দার আগে কলাকোপা নামক স্থানেই নামতে হবে।
কোথায় খাবেন: মৈনট ঘাটে কিছু খাবারের হোটেল আছে। ইলিশ ৬০ থেকে ৯০ টাকা। বড় সাইজের ইলিশ খেতে চাইলে আগেই অর্ডার দিতে হবে। এ ছাড়াও বোয়াল ৮০ থেকে ১০০ টাকা, চিংড়ি ৬০ থেকে ৮০ টাকা। ভাত ২০ টাকা প্লেট।
সেখান থেকে অবশ্যই মিষ্টি খেয়ে আসবেন। নিরঞ্জন মিষ্টান্নভান্ডার, মুসলিম সুইটস, রণজিৎ মিষ্টান্নভান্ডারসহ কিছু মিষ্টির দোকান আছে সেখানে। চমচম ও কালোজাম ১৬০ টাকা কেজি।
সতর্কতা: একটি বিষয় সবার জানা দরকার, সাঁতার না জানলে গোসল করার সময় পদ্মার বেশি গভীরে যাবেন না। আপনার একটু অসচেতনতায় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।
জেএমএস/এসইউ/এএসএম