স্বপ্ন-সীমানার পথ পেরিয়ে কঠিনতম রাস্তা পাড়ি দিয়ে উদ্যোক্তা হওয়ার প্রেরণা নিয়েছিলেন নিজের মনোবল থেকেই। তার নাম কামরুল হাসান। দেশের প্রথম স্বয়ংসম্পূর্ণ স্বাস্থ্য সুরক্ষাপণ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের নাম মেডিস্টোর। সম্প্রতি জাগো নিউজকে জানিয়েছেন তার স্বপ্ন ও সফলতার কথা। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বেনজির আবরার—
Advertisement
তার প্রতি প্রশ্ন ছিলো এমন—ক্যারিয়ারের শুরুতে আপনি এমএনসিতে ছিলেন, সেখান থেকে এখনকার উদ্যোগ কেমন লাগছে? উত্তরে কামরুল হাসান বলেন, ‘মাল্টিন্যাশনালে জব যখন সুখের আরেক নাম; তখনই আমি বুঝতে পারি আমার জন্য ‘স্বাস্থ্য সুরক্ষাপণ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান’ ব্যবসায়ই মূল পেশার নাম। ব্যবসার শুরুতেই সফলতা আসার কারণে ২০০৮ সালে চাকরি ছেড়ে দিয়ে পুরোপুরি ব্যবসায় মনোনিবেশ করি।’
এ তরুণ সফল উদ্যোক্তা বলেন, ‘সরকারি-বেসরকারি নানা প্রতিষ্ঠান, এনজিও, বড় বড় সব ব্যাংক, কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান আমার কর্পোরেট গ্রাহকসেবা নিচ্ছে কোনো ধরনের ভাবনা ছাড়াই। আমার ভাবনার কারণে বর্তমানে দেশের প্রতিষ্ঠিত ‘এন্টারপ্রেনার ক্লাব অব বাংলাদেশ’র নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদকও আমি।’
চাকরি ছাড়লেন কেন? এর পেছনে কী কাজ করেছে? প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বড় বড় সব স্বপ্ন দেখা শুরু করেছিলাম সেই ছোটবেলা থেকেই। স্বপ্ন দেখলাম নিজের ব্যবসা, নিজের অফিস, হাজারো লোকের আনাগোনা এসবই।’
Advertisement
তিনি জানালেন, এ সেক্টর সেন্সিটিভ সত্য, তবে লং টার্ম স্থায়ী ফিডব্যাক এই সেক্টরের মত করে আর কোথাও খুব একটা পাওয়া যায় না। এটা কিন্তু গ্রোসারি বেজড ই-কমার্সগুলোর মত নয়; এখানে ক্লায়েন্ট মূলত ডেভেলপ করেছে মুখের কথার ওপর ভিত্তি করেই। কারণ শুরুর দিনগুলো থেকে এখন অবধি অনলাইন প্রমোশন বলতে কিছুই করেনি মেডিস্টোর। শুধু নিশ্চিত করেছে প্রোডাক্টের গুণগত মান আর কাস্টমারের সন্তুষ্টি।
সমসাময়িক কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে এ সেক্টরের পরিবেশ কতটা বদলে গেছে, এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘করোনা কঠিন এক পরিবেশ তৈরি করে দিলেও আমরা একদম প্রথম থেকে সম্মুখসারিতে এ পরিবেশের মধ্যে যথাসাধ্য কাজ করে যাচ্ছি গুণগত পণ্য গ্রাহকের হাতে তুলে দিতে। একই মার্কেটে নানা ধরনের উদ্যোক্তা হয়ে যাওয়ায় গ্রাহক কোনো কোনো ক্ষেত্রে ভালো পণ্য থেকে বঞ্চিত হওয়ার ঝুঁকিও বেড়েছে।’
মেডিস্টোরের বর্তমান অবস্থা আর ভবিষৎ পরিকল্পনা জানতে চাইলে কামরুল বলেন, ‘আমাদের নিয়মিত গ্রাহকের মধ্যে ইউনিসেফ, ইউনেস্কো, এআইএসডি, টয়োটা বাংলাদেশ, আইসিডিডিআরবি, নাভানা লিমিটেড, শেয়ারআউট, ঢাবি, ইউএসএ অ্যাম্বাসি, কানাডিয়ান অ্যাম্বাসিসহ দেশের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলো রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘হেলথকেয়ার পার্টনার হিসেবে আছে- ইউনিসেফ, গ্রামীণফোন, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড, এনআরবি ব্যাংক, বেসিস, নেক্সপার্কসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। সিএমএইচ, আইসিডিডিআরবি ছাড়াও বিভিন্ন সরকারি মেডিকেল কলেজ, রেলওয়ে হাসপাতাল, র্যাব হেড কোয়াটার্স, কোস্টগার্ডের মত প্রতিষ্ঠান।’
Advertisement
কামরুল হাসানের পরিকল্পনা, মেডিস্টোরের নিজস্ব ব্র্যান্ডের প্রোডাক্ট মার্কেটে নিয়ে আসা। আরও বেশি মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা। মেডিস্টোরকে দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে বিদেশেও একটি প্রতিষ্ঠিত ব্র্যান্ড হিসেবে দাঁড় করানো।
এসইউ/এএসএম