শিক্ষা

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের বছরপূর্তি, উদ্বেগে শিক্ষার্থী-অভিভাবকরা

বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাধারণ ছুটির একবছর পূর্ণ হলো। দেশে গত বছরের ৮ মার্চ প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার পর শিক্ষার্থীদের নিরাপদ রাখতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি ঘোষণা করা হয়। ১৬ মার্চ শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি দেশের সব স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও বিশ্ববিদ্যালয় ১৭ মার্চ থেকে বন্ধের ঘোষণা দেন।

Advertisement

প্রথম দফায় ১৭-৩১ মার্চ পর্যন্ত বন্ধের ঘোষণা দেয়া হলেও পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় সেই ছুটি দফায় দফায় বাড়তে থাকে। ছুটি এখনও চলছে। গত বছর জুন থেকে পর্যায়ক্রমে অন্যান্য খাত সচল হলেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের সিদ্ধান্তে অটল থাকে সরকার। তবে বন্ধের এ সময় অনলাইন, সংসদ টিভি, বেতারসহ বিভিন্ন ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে ক্লাস চলমান ছিল। মাঝে সংক্রমণ কমে আসায় ৩০ মার্চ থেকে স্কুল-কলেজ খুলে দেয়ার ঘোষণা দেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।

কিন্তু ইতোমধ্যে সংক্রমণ ফের ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় ৩০ মার্চ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা নিয়ে ফের অনিশ্চয়তা দেখে দিয়েছে। দীর্ঘ সময় পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার ঘোষণা দিলেও নতুন করে করোনা শনাক্তের ঊর্দ্ধগতির কারণে শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের মাঝে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বিরাজ করেছে।

এ নিয়ে সোমবার (১৫ মার্চ) দুপুরে সচিবালয়ে এক বৈঠক শেষে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ‘যেহেতু সংক্রমণ বাড়ছে, তাই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি পুনর্বিবেচনা করা হতে পারে।’

Advertisement

এর আগে শুক্রবার (১২ মার্চ) শিক্ষামন্ত্রীও জানিয়েছিলেন, ‘করোনা শনাক্তের হার বাড়তে থাকলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটির বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করা হবে।

তবে ঘোষিত তারিখেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে সব ধরনের প্রস্ততি নিচ্ছে শিক্ষা এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। এরমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ লাখ ৩০ হাজার আবাসিক শিক্ষার্থীসহ সব স্তরের শিক্ষক-কর্মচারীদের টিকার আওতায় নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

ইতোমধ্যে প্রাথমিক পর্যায়ে প্রায় ২ লাখ শিক্ষক-কর্মচারী টিকা গ্রহণ করেছেন। আগামী ২০ মার্চের মধ্যে বাকি সবাইকে টিকা নেয়ার জন্য বলা হয়েছে। একইভাবে অন্যান্য স্তরের শিক্ষক-কর্মচারীরাও টিকা নিচ্ছেন।

এ বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. সৈয়দ মোহাম্মদ গোলাম ফারুক বলেন, ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার যত ধরনের প্রস্তুতি প্রয়োজন, সবই আমাদের রয়েছে। সরকার ঘোষিত সময়সূচি অনুযায়ী শ্রেণিকক্ষে যেতে প্রস্তুত শিক্ষক-কর্মচারীরা। করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় সরকার যদি ছুটি বাড়ায়, তাহলে সেটি ভিন্ন বিষয়। তবে আমরা প্রস্তুত।’

Advertisement

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, করোনায় যে কয়টি খাত সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত, তারমধ্যে শিক্ষাখাতে ক্ষতি হয়েছে সবচেয়ে বেশি। ২০২০ শিক্ষাবর্ষের প্রাথমিক সমাপনি, জেএসসি পরীক্ষা বাতিল করে শিক্ষার্থীদের পরবর্তীতে শ্রেণিতে অটো প্রমোশন দেওয়া হয়েছে। এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা জেএসসি-এসএসসি গড় ফলাফলের ভিত্তিতে বিশেষ মূল্যায়ন করে ফল দেয়া হয়েছে। বাকি সব শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষা বাতিল করে পরের শ্রেণিতে অটোপাস দেয়া হয়েছে।

এমএইচএম/এমএইচআর/এমএস