সম্প্রতি ব্রিটিশ-সুইডিশ ফার্মাসিউটিক্যাল জায়ান্ট অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি করোনাভাইরাসরোধী ভ্যাকসিন নেওয়ার পর বেশ কয়েকজনের শরীরে রক্ত জমাট বাঁধার অভিযোগে এর ব্যবহার আপাতত বন্ধ রেখেছে বেশ কিছু দেশ। কিন্তু অ্যাস্ট্রাজেনেকা বলছে, তাদের ভ্যাকসিন নেয়ার পর শরীরে রক্ত জমাট বাঁধার ঝুঁকি তৈরি হয় এমন কোনো কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
Advertisement
তাদের তৈরি ভ্যাকসিন গ্রহণ করেছেন এমন লোকজনের ওপর নিরাপত্তা তথ্য পুনঃমূল্যায়ন করে সংস্থাটির পক্ষ থেকে এমন দাবি করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত যুক্তরাজ্য এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেড় কোটির বেশি মানুষ অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন গ্রহণ করেছে। কিন্তু ভ্যাকসিন নেয়ার পর শরীরে রক্ত জমাট বাঁধার অভিযোগ ওঠার পরপরই এ বিষয়ে সংস্থাটির পক্ষ থেকে পুনঃমূল্যায়ন সম্পর্কে জানানো হলো।
অ্যাস্ট্রাজেনেকার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং যুক্তরাজ্যে ভ্যাকসিন গ্রহণ করা দেড় কোটির বেশি মানুষের নিরাপত্তা তথ্য খুবই যত্ন সহকারে পুনঃমূল্যায়ন করা হয়েছে। অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন থেকে পালমোনারি এমবোলিজমের ঝুঁকি বাড়া, রক্তনালীতে রক্ত জমাট বাঁধা বা থ্রোম্বোসাইটোপেনিয়ার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। বিভিন্ন বয়স, লিঙ্গ এবং প্রায় সবগুলো দেশের পুনঃমূল্যায়ন একই রকম বলে জানানো হয়েছে।
আয়ারল্যান্ড, ডেনমার্ক, নরওয়ে, আইসল্যান্ড এবং নেদারল্যান্ডস কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন ব্যবহার আপাতত বন্ধ করে দিয়েছে। এর আগে গত সপ্তাহে ভ্যাকসিন নেয়া একজনের মৃত্যুর ঘটনায় অস্ট্রেলিয়ায় এই ভ্যাকসিন ব্যবহার বন্ধ রাখা হয়।
Advertisement
এশিয়ার প্রথম দেশ হিসেবে অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিন ব্যবহার স্থগিত করেছে থাইল্যান্ড। শুক্রবার দেশটির প্রধানমন্ত্রী নিজে ভ্যাকসিন গ্রহণের মাধ্যমে এই কর্মসূচি শুরু করার কথা ছিল। তবে সেই পরিকল্পনা আপাতত বাতিল করা হয়েছে। এই তালিকায় সবশেষ যোগ হয়েছে বুলগেরিয়া।
সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণে ব্রিটিশ সরকারের অবসরপ্রাপ্ত পরামর্শদাতা পিটার ইংলিশ বলেন, এটি অত্যন্ত দুঃখজনক যে বিভিন্ন দেশ এই ধরনের ‘সতর্কতা’র ভিত্তিতে ভ্যাকসিন প্রদান বন্ধ করেছে। ভাইরাসের বিস্তার ধীরগতিতে পরিণত করতে এবং মহামারির সমাপ্তি ঘটাতে পর্যাপ্ত মানুষকে টিকা দেওয়ার যে লক্ষ্য সে ক্ষেত্রে এটা সত্যিকার অর্থেই ঝুঁকি তৈরি করবে।
ইউরোপীয় মেডিসিন এজেন্সি জানিয়েছে, রক্ত জমাট বাঁধার ঘটনা টিকা দেওয়ার কারণে ঘটেছে এমন কোনও ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও শুক্রবার একই ধরনের ইঙ্গিত দিয়েছে।
ওষুধ প্রস্তুতকারক এজেন্সি জানিয়েছে, রক্তনালীতে রক্ত জমাট বাঁধার ১৫টি ঘটনা এবং পালমোনারি এম্বোলিজমের ২২টি ঘটনা এখন পর্যন্ত সামনে এসেছে যা, কোভিড-১৯য়ের অন্যান্য লাইসেন্স পাওয়া ভ্যাকসিনের ক্ষেত্রেও হয়েছে।
Advertisement
টিটিএন/জেআইএম