নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে সংবাদকর্মী বোরহান উদ্দিন মুজাক্কির এবং যুবলীগ কর্মী আলা উদ্দিন হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ‘খুনি’ আখ্যায়িত করে বসুরহাট মেয়র আবদুল কাদের মির্জার গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন তার ভাগনে মাহবুবুর রশীদ মঞ্জু।
Advertisement
শুক্রবার (১২ মার্চ) সকাল ১০টায় নিজের ফেসবুক পেজ থেকে লাইভে এসে তিনি এ দাবি জানান।
মাহবুবুর রশীদ মঞ্জু কাদের মির্জার আপন বড় বোনের ছেলে এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য। তিনি উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। বর্তমানে মামা কাদের মির্জাবিরোধী বলয় থেকে বিভিন্ন বিস্ফোরক মন্তব্য করছেন ভাগনে মাহবুবুর রশীদ মঞ্জু।
তিনি বলেন, ‘আমরা একজন সংবাদকর্মী হারিয়েছি। আমরা দলের একজন নেতাকে হারিয়েছি। দুটো তাজা প্রাণ এ অপরাজনীতির হোতা (কাদের মির্জার) কারণে ঝরে গেছে। আমরা কোম্পানীগঞ্জের প্রশাসনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। কোম্পানীগঞ্জের মানুষকে আজকের জিম্মি দশা থেকে মুক্ত করতে হলেই একটিই পথ রয়েছে। সেটা হচ্ছে, এ খুনি আবদুল কাদের মির্জাকে গ্রেফতার করা।’
Advertisement
মাহবুবুর রশীদ মঞ্জু আরও বলেন, ‘যেহেতু মিজানুর রহমান বাদলকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তাহলে কার ইঙ্গিতে, কাদের ইঙ্গিতে, কিসের ইঙ্গিতে, কোন উদ্দেশ্যে এখনো পর্যন্ত নিরাপত্তা দিয়ে আবদুল কাদের মির্জাকে বসুরহাট পৌরসভার এখানে এ পাগলকে শুয়ে রাখা হয়েছে। আজকে আমাদের প্রশ্ন।’
তিনি আলা উদ্দিনের পরিবারের করা মামলা দ্রুত সময়ের মধ্যে রুজু করার জন্য কোম্পানীগঞ্জ থানাকে অনুরোধ জানান এবং মামলায় দেয়া আসামিদের দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রেফতারের দাবি জানান। অন্যথায় কোম্পানীগঞ্জে লাগাতার আন্দোলন এবং উদ্ভূত যে কোনো পরিস্থিতির জন্য প্রশাসনকে দায়ী থাকতে হবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন মাহবুবুর রশীদ মঞ্জু।
গত মঙ্গলবার উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা খিজির হায়াত খানের ওপর হামলার প্রতিবাদে বসুরহাট বাজারের রূপালী চত্বরে এক প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে উপজেলা আওয়ামী লীগ। পরে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ সভায় আবদুল কাদের মির্জার অনুসারীরা সভার একেবারে শেষ মুহূর্তে ককটেল ও গুলি ছোঁড়ে এবং সভার পার্শ্ববর্তী এলাকায় ব্যাপক ককটেল বিষ্ফোরণ ঘটে। এসময় সভাস্থল থেকে উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ এক হয়ে মির্জা কাদেরের অনুসারীদের প্রতিরোধ করতে গেলে মাকসুদাহ গার্লস স্কুল রোড এলাকায় দু’গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা, ককটেল বিস্ফোরণ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এসময় পুরো বসুরহাট বাজারজুড়ে থমথমে পরিবেশ বিরাজ করে।
থেমে থেমে মধ্যরাত পর্যন্ত ক্ষমতাসীন দলের দু’গ্রুপের অনুসারীরা বসুরহাট বাজারের বিভিন্নস্থানে ককটেল বিস্ফোরণ, গোলাগুলি ও ভাঙচুর চালায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে আহত হন ওসি মীর জাহিদুল হক রনিসহ চার পুলিশ। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ৫০ জন আহত হন। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গুলিবিদ্ধ সিএনজি চালক ও স্থানীয় যুবলীগ কর্মী মো. আলাউদ্দিন (৪০) মারা যান।
Advertisement
এসআর/এমকেএইচ