করোনাভাইরাস বিশ্বব্যাপী তার তাণ্ডব শুরু করেছে এক বছরেরও বেশি সময় আগে। এই সময়ের মধ্যে অজস্র মৃত্যু, হতাশা আর অর্থনৈতিক সঙ্কটের গল্প উঠে এসেছে। তবে এই ভয়াবহ দুর্দশার মধ্যেও অজস্র ইতিবাচক ঘটনার কথাও জানা গেছে। উদারচিত্তে আত্মত্যাগের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন অনেক মানুষ।
Advertisement
এই মহামারির কারণেই অন্যকে সহায়তার মধ্য দিয়ে পৃথিবীর নানা প্রান্তে মানুষ নিজেকে আবিষ্কার করেছে নতুনভাবে। মানুষ শিখেছে হতাশ না হয়ে শক্ত হাতে হাল ধরতে।
এমনই এক গল্প বলিউডের উঠতি অভিনেত্রী শিখা মালহোত্রার। ২৫ বছর বয়সী এই অভিনেত্রী মহামারির আগে ছিলেন বিলাসী জীবনযাপনে অভ্যস্ত। তার হাতে ছিল একাধিক ছবির প্রস্তাব।
২০১৬ সালে বলিউড বাদশা শাহরুখ খানের হাত ধরে পথচলা শুরু। গত বছর মুক্তি পাওয়া ‘কাঞ্চলি’ ছবির মূল ভূমিকায় অভিনয় করেন শিখা। বোঝাই যাচ্ছে ক্যারিয়ারে বেশ ভালোভাবে এগিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি।
Advertisement
কিন্তু তার শহর মুম্বাইয়ে করোনাভাইরাস হানা দিলে লাইট-ক্যামেরা জগৎ থেকে বাস্তব জীবনে অ্যাকশনে নামার সিদ্ধান্ত নেন শিখা। নিজের নার্সিং ডিগ্রিকে মানুষের সেবায় কাজে লাগাতে ব্রতী হন তিনি।
সংক্রমণ ঠেকাতে গত বছরের মার্চে দেশজুড়ে লকডাউন আরোপ করে ভারত। তখন স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে শহরজুড়ে কাজ করতে শুরু করেন তিনি।
শিখার ভাষায়, ‘আমি প্রথমে একজন সেবাকর্মী, তারপরে অভিনেত্রী।’
‘মানুষের জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণ, শত আবেগ, দুঃখ, সুখ এসব আমাকে আরও পরিণত করেছে। মাটির আরও কাছে নিয়ে এসেছে।’
Advertisement
করোনাভাইরাস সংক্রমণে টালমাটাল অবস্থা ছিল মুম্বাইয়ের। শহর হিসেবে আক্রান্তের দিক দিয়ে বিশ্বে দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল ভারতের এই শহরটি।
মহামারির এই সময়ে একটি সরকারি হাসপাতালে নার্সিং অফিসার হিসেবে কাজ করেছেন শিখা। সেবা দিয়েছেন সব বয়সী রোগীকে।
এভাবে কাজ করতে করতে অক্টোবরে নিজেই আক্রান্ত হন করোনাভাইরাসে। সেরে উঠতে লেগে যায় প্রায় এক মাস। এরপর তিনি স্ট্রোক করেন এবং শরীরের ডান পাশ অবশ হয়ে যায়।
এর আগেও একবার তিনি প্যারালাইসিসে আক্রান্ত হয়েছিলেন।
শিখা বলেন, ‘আমি মনে করি এটা ছিল আমার জন্য বিরাট এক ফিরে আসার গল্প। দ্বিতীয়বার অ্যাটাক হওয়ার পরে আমার মনে হয়েছিল এবারই বুঝি সব শেষ।’
এরপর তিনি আবার পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠেছেন। এজন্য তিনি নিজের বাবা-মায়ের প্রতি সবচেয়ে বেশি কৃতজ্ঞ বলে জানিয়েছেন।
এখন আবার তার কাছে আসছে সিনেমার প্রস্তাব। শিখা জানান, অভিনয় পেশায় ফেরার পাশাপাশি প্রয়োজনে নার্স হিসেবে কাজ করার মানসিক প্রস্তুতিও নিয়ে রেখেছেন তিনি।
এসএস/জিকেএস