শিক্ষা

এমবিবিএস ভর্তিতে ‘অগ্নিপরীক্ষা’, দ্বিগুণ হচ্ছে ভেন্যু

দেশের ৩৭টি সরকারি মেডিকেল কলেজের এমবিবিএস কোর্সের প্রথম বর্ষের (২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষ) ভর্তি পরীক্ষা আগামী ২ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হবে। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতরের অধীনে কেন্দ্রীয়ভাবে রাজধানীসহ সারাদেশের ১৯টি কেন্দ্রের বিভিন্ন ভেন্যুতে সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত ১০০ নম্বরের নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।

Advertisement

করোনা মহামারি পরিস্থিতিতেও এবার রেকর্ডসংখ্যক শিক্ষার্থী এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে যাচ্ছেন। এবার আবেদন করেছেন এক লাখ ৮২ হাজার ৮৭৪ জন শিক্ষার্থী। গত বছর ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে আবেদন করেছিলেন প্রায় ৭২ হাজার শিক্ষার্থী।

চলতি শিক্ষাবর্ষে করোনার কারণে এখনও বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি। সর্বপ্রথম এতো বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এ ভর্তি পরীক্ষাকে কঠিন চ্যালেঞ্জ ও অগ্নিপরীক্ষা মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। ফলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সুষ্ঠুভাবে ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণে প্রস্তুতি নিচ্ছে শিক্ষা অধিদফতরের চিকিৎসা শিক্ষা ও স্বাস্থ্য জনশক্তি উন্নয়ন বিভাগ।

সূত্রে জানা গেছে, এর আগের কয়েক বছর ১৯টি পরীক্ষা কেন্দ্রে ভেন্যুর সংখ্যা মাত্র ৩২টি থাকলেও এবার বাড়ছে ভেন্যুর সংখ্যা। এবার ভেন্যুর সংখ্যা বেড়ে দ্বিগুণ হতে পারে বলে জানা গেছে। ভর্তি পরীক্ষা সামনে রেখে আগামী ১৪ মার্চ স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতরের পরিচালক বিভিন্ন মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষদের নিয়ে বৈঠক করবেন। বৈঠকে কোন পরীক্ষা কেন্দ্রের কোন ভেন্যুতে আসনবিন্যাস কীভাবে হবে, নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার মধ্যে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র কীভাবে বণ্টন করা হবে তা নিয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

Advertisement

দেশে বর্তমানে সরকারিভাবে পরিচালিত মেডিকেল কলেজের সংখ্যা ৩৭টি। এগুলোতে মোট আসন সংখ্যা চার হাজার ৩৫০। এ বছর এক লাখ ২২ হাজার ৮৭৪টি আবেদনের হিসাবে এ বছর আসনপ্রতি লড়বেন ২৮ জনের বেশি।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের চিকিৎসা শিক্ষা ও স্বাস্থ্য জনশক্তি উন্নয়ন শাখা সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা মেডিকেল কলেজে ১৬ হাজার, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড) হাসপাতালে সাত হাজার, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজে ১২ হাজার, ময়মনসিংহে ১১ হাজার ৫২৯, চট্টগ্রামে ১০ হাজার ৮৮৬, রাজশাহীতে ১০ হাজার ২৭৩, সিলেটের ওসমানী মেডিকেল কলেজে চার হাজার ৮৯৭, বরিশালে তিন হাজার, রংপুরে সাত হাজার, কুমিল্লায় পাঁচ হাজার, খুলনায় পাঁচ হাজার, বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজে পাঁচ হাজার, ফরিদপুরে তিন হাজার ৪৪৮, দিনাজপুরে তিন হাজার, পাবনায় দুই হাজার, কিশোরগঞ্জের সৈয়দ নজরুল ইসলামে এক হাজার ৮৪১, মুগদা মেডিকেল কলেজে পাঁচ হাজার, গোপালগঞ্জের শেখ সায়েরা খাতুনে দুই হাজার এবং ঢাকা ডেণ্টালে পাঁচ হাজার শিক্ষার্থীর আসন ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

সামগ্রিক প্রস্তুতির বিষয়ে চিকিৎসা, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য জনশক্তি উন্নয়ন বিভাগের অধ্যাপক ডা. আহসান হাবিব বলেন, দেশের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা সর্বপ্রথম অনুষ্ঠিত হচ্ছে। করোনার কারণে এ বছর এইচএসসিতে অংশগ্রহণকারী সব শিক্ষার্থীকে আগের ফলাফল অর্থাৎ জেএসএস ও এসএসসি পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে ফলাফল (অটো পাস) দেয়া হয়। ফলে এ বছর রেকর্ডসংখ্যক পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করছেন।

এমন পরিস্থিতিতে পরীক্ষা গ্রহণকে ‘অগ্নিপরীক্ষা’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, আবেদনকারী বেশি হওয়ায় ভেন্যুর সংখ্যা বাড়ছে। ১৯টি কেন্দ্রে সাধারণ ৩২টি ভেন্যু রেখে আসছি আমরা। এবার ইতোমধ্যে ৫২টির প্রস্তাব পাওয়া গেছে। এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

Advertisement

ডা. আহসান হাবিব আরও বলেন, ‘পরীক্ষার হলে প্রয়োজনীয়সংখ্যক পরিদর্শক ও শিক্ষকসহ অনেক জনবল প্রয়োজন। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে প্রশ্নপত্র পাঠানো নিশ্চিত করতে হবে। সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা গ্রহণের লক্ষ্যে তারা পরিকল্পনা অনুসারেই প্রস্তুতি গ্রহণ করছেন।’ আগামী ১৪ মার্চের বৈঠক থেকে বিস্তারিত নির্দেশনা আসবে বলেও জানান তিনি।

এমইউ/এএএইচ/এমকেএইচ