দেশজুড়ে

পাবনায় দলীয় মনোনয়ন পেতে সম্ভাব্য প্রার্থীদের দৌড়ঝাঁপ

তফসিল ঘোষণা না হলেও পাবনায় পৌরসভা নির্বাচনের হাওয়া বইছে জোরে সোরে। রাজনৈতিক দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা দলীয় মনোনয়ন পেতে শুরু করেছেন দৌড়ঝাঁপ। পাশপাশি ভোটারদের মনোযোগ আকর্ষণের জন্য নির্বাচনী এলাকায় বিভিন্ন রংয়ের ব্যানার, ফেস্টুনে ছেঁয়ে গেছে। ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের মেয়র ও কাউন্সিলারদের ভাবনা কোনো রকমে দলীয় মনোনয়ন পেলে নির্বাচনে জয় নিশ্চিত। বিএনপি নেতাকর্মীরাও আশা করছেন নির্বাচন সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ হলে তাদের জয় নিশ্চিত। বড় দুটি দলের পাশাপািশ জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় পার্টি ও ওয়াকার্স পার্টির নেতাদেরও নির্বাচনী ব্যস্ততায় দেখা যাচ্ছে। সব মিলে জেলার সর্বত্র নির্বাচনী আমেজ বিরাজ করছে। এদিকে দলীয় প্রতীকে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার খবরে সরকারি দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। একই দলে একাধিক প্রভাবশালী প্রার্থী নিজেকে পৌর নির্বাচনের প্রার্থী হিসেবে প্রচার করায় মাঠ পর্যায়ে কর্মীদের মধ্যে বিভক্তিও দেখা দিয়েছে। আর এই সুযোগে সরকারি দলের বাইরে অন্য দলের প্রার্থীরা একে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিতে প্রস্ততি নিচ্ছেন। পাবনা জেলার ৯টি পৌরসভার মধ্যে আইনি জটিলতার কারণে বেড়া এবং মেয়াদ পূর্তি না হওয়ায় আটঘরিয়া পৌরসভায় নির্বাচন হচ্ছে না। পাবনা পৌরসভা (সদর) : ১৮৭৬ সালে প্রতিষ্ঠিত পাবনা পৌরসভা নানা কারণেই এতিহ্যবাহী এবং জেলাবাসীর কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পৌরসভাটি জেলা সদরে ও প্রথম শ্রেণির পৌরসভার কারণে দীর্ঘদিন ধরেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের হেভিওয়েট প্রার্থীরা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। কাজেই জেলার অন্য সব পৌরসভার চেয়ে সদরের নির্বাচনের দিকে ভোটারসহ সব মানুষের কৌতুহল একটু বেশি থাকে। আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জামায়াত ও জাতীয় পার্টির জেলা পর্যায়ের নেতারা এই পৌরসভার প্রার্থী হন। পাবনা পৌরসভার বর্তমান মেয়র কামরুর হাসান মিন্টু। বিএনপির মধ্যে দ্বন্দ্ব কোন্দলের জের ধরে মিন্টুকে বিএনপি থেকে বহিষ্কার করা হয়। এই বহিষ্কারাদেশ মাথায় নিয়েই তিনি গত নির্বাচনে ২য় বারের মত মেয়র নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে মিন্টু তার সমর্থকদের নিয়ে গঠন করেন পাবনা জেলা বিএনপি রক্ষা কমিটি। এবারের নির্বাচনে এখনও তফশিল ঘোষণা না হলেও নির্বাচনে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে অনেকের নাম শোনা যাচ্ছে। এছাড়া ব্যানার ফেস্টুন দেখা যাচ্ছে অনেকের।  সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর তালিকায় রয়েছেন- পাবনা পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট তসলিম হাসান সুমন। তিনি এক সময়ের অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং তুখোর ছাত্র নেতা এবং সরকারি এডওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি ও জিএস। এছাড়া যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেন- জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক প্রচার সম্পাদক কামিল হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবু ইসহাক শামীম, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সোহেল হাসান শাহিন, আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল বারী বাকি, জেলা যুবলীগের সভাপতি শরীফ উদ্দিন প্রধান ও সাধারণ সম্পাদক রাকিব হাসান টিপু। বিএনপির প্রার্থী হিসেবে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান তোতা, যুগ্ম সম্পাদক নুর মোহাম্মদ মাসুম বগা, পৌর বিএনপির সভাপতি তৌফিক হাবিব এবং বর্তমান মেয়র কামরুল হাসান মিন্টুর নাম শোনা যাচ্ছে। জামায়াতের প্রার্থী হিসেবে অধ্যক্ষ মাওলানা ইকবাল হুসাইন, অধ্যাপক আবিদ হাসান দুলাল, জামায়াত নেতা ও পাবনার সাবেক এমপি মাওলানা আব্দুস সুবহানের ছেলে নেছার আহমেদ নান্নুর নাম শোনা যাচ্ছে। তবে জাতীয় পার্টি ও ওয়ার্কার্স পার্টির কোনো প্রার্থীর নাম এখন পর্যন্ত শোনা যায়নি। তথ্যাভিজ্ঞ মহল মনে করছেন, এবারের নির্বাচনে লড়াই হবে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি প্রার্থীর মধ্যে। তবে বর্তমান মেয়র কামরুল হাসান মিন্টু যদি বিএনপির টিকেট না পান তাহলে মিন্টুর সঙ্গে আওয়ামী লীগ প্রার্থী এবং বিএনপি প্রার্থীর প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। সম্ভাব্য প্রার্থীরা এলাকায় ব্যানার ফেস্টুন বিলবোর্ড লাগিয়ে ভোটারদের মনোযোগ আকর্ষণের চেষ্টা করছেন। এছাড়া তারা দলীয় মনোনয়ন পেতে লবিং করছেন কেন্দ্রে।  ঈশ্বরদী পৌরসভা : ভূমিমন্ত্রী ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামসুর রহমান শরীফ ডিলু এমপির নিজ পৌরসভা ঈশ্বরদী পৌরসভা। এখানে বরাবরই ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির শক্ত অবস্থান রয়েছে। তফসিল ঘোষণার আগেই মন্ত্রীর জামাতা পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক পৌর চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী হিসেবে নিজের নাম ঘোষণা করে ব্যানার ফেস্টুন সাঁটিয়েছেন। বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে গত নির্বাচনে মেয়র পদে বিজয়ী মোখলেছুর রহমান বাবলু এবারও নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়া সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকায় বিএনপি নেতা জাকারিয়া পিন্টুর নাম ও জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী হিসেবে মাওলানা জোবায়ের আহমেদ এর নাম শোনা যাচ্ছে।আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী হিসেবে সেপ্টেম্বর মাসে উপজেলা পরিষদের সমন্বয় কমিটির এক সভায় ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহজেবিন শিরিন পিয়া নিজেকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দিলেও কয়েকদিন পর আবার তা প্রত্যাহার করে নেন। পিয়া ভূমি মন্ত্রীর মেয়ে এবং ঈশ্বরদী পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক পৌর চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ মিন্টুর স্ত্রী। তিনি এবারও সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। গত ৩ অক্টোবর পৌর আওয়ামী লীগের এক সভায় মিন্টুকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়। পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি ও বর্তমান মেয়র মকলেছুর রহমান বাবলু পুনরায় প্রার্থী হচ্ছেন এ কথা এখন ওপেন সিক্রেট। কেননা তিনি নিজে ভোটারদের কাছে দোয়া চাওয়ার পাশাপাশি তার ঘনিষ্ঠজনরা প্রচারণা চালাচ্ছেন। দলের মধ্যে দ্বন্দ্ব কোন্দলের জের ধরে বাবলুকেও সে সময় বহিষ্কার করা হয় বিএনপি থেকে। গত নির্বাচনে পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া পিন্টু দলের সমর্থনে প্রার্থী হলেও বাবলু নির্বাচনে জয়লাভ করেন। এদিকে, নানা মামলা-মোকদ্দমায় জড়িয়ে থাকায় এবার জাকারিয়া পিন্টুর নির্বাচনে প্রার্থী না হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সেক্ষেত্রে তার সমর্থকরা দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ভোট প্রয়োগ করবেন বলে একটি সূত্রে জানা গেছে। বাবলু তৃতীয়বারের মতো মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এদিকে পৌর ছাত্রদলের সভাপতি ইমরুল কায়েস সুমন দলের কাছে মনোনয়ন চাইবেন বলে জানিয়েছেন। তিনিও এলাকায় মানুষের মধ্যে জনসংযোগ করছেন। দল মনোনয়ন দিলে শক্তভাবেই নির্বাচনে অংশ নেবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।চাটমোহর পৌরসভা :তফসিল ঘোষণার আগেই চাটমোহরে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির একাধিক মেয়র প্রার্থী প্রচার প্রচারণা শুরু করেছেন। সেই সঙ্গে পিছিয়ে নেই কাউন্সিলর প্রার্থীরাও। দোয়া ও আশীর্বাদ চেয়ে পোস্টারে ছেঁয়ে গেছে চাটমোহর পৌর সদরের প্রতিটি এলাকা। দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হবে এমন সংবাদে দলীয় মনোনয়ন পেতে ব্যস্ত সময় পার করছে বড় দুই দলের নেতারা। সেই সঙ্গে পৌরসভার ভোটারদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মেয়র প্রার্থীরা। চাটমোহর পৌরসভায় মেয়র পদে নির্বাচন করবেন বলে প্রচার প্রচারণা করছেন এমন প্রার্থীর সংখ্যা আওয়ামী লীগে ৩, বিএনপেতে ৩ এবং স্বতন্ত্র ১। আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন প্রার্থীরা হলেন- বর্তমান মেয়র মির্জা রেজাউল করিম দুলাল, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাড. সাখাওয়াত হোসেন সাখো, সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল হোসেন ধনী। অপরদিকে বিএনপি থেকে সাবেক মেয়র ও উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর আ. মান্নান, সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আ. রহিম কালু, পৌর বিএনপির সভাপতি এএম জাকারিয়া । স্বতন্ত্র প্রাথী হিসেবে মেয়র পদে নির্বাচন করবেন মো. তারা মিয়া। এছাড়া কাউন্সিলর পদে প্রায় ৭০ জন প্রার্থীর পোস্টার বিভিন্ন এলাকায় দেখা গেছে। পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র প্রার্থীরা জানান, যেহেতু দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হবে তাই দল থেকে মনোনয়ন পেলেই তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন। সাঁথিয়া পৌরসভা :নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা না হলেও সম্ভাব্য মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের শুভেচ্ছা পোস্টার, ফেস্টুনে ছেঁয়ে গেছে পৌর এলাকার অলিগলি। নির্বাচনী প্রচারণার অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে তারা বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডে যোগদানসহ এলাকাবাসীর সঙ্গে যোগাযোগ করে চলেছেন। নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন নিজের পক্ষে নিশ্চিত করতে দলের উচ্চ পর্যায়ের নেতাদের কাছে ধর্না দেয়াসহ নানাভাবে দৌড় ঝাঁপ শুরু করে দিয়েছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা। এদিকে মেয়র-কাউন্সিলর পদে কোনো দলের কে মনোনয়ন পাবেন, কাকে মনোনয়ন দেয়া হচ্ছে ভোটারদের এসব আলোচনায় সরব হয়ে উঠেছে ক্লাব, চায়ের দোকানপাটসহ সর্বত্র। সব মিলিয়ে জেলার অন্যান্য পৌরসভার মত নির্বাচনী আমেজ বিরাজ করছে সাঁথিয়া পৌরসভায়। তবে নির্বাচনী প্রচারণায় বিএনপি প্রার্থীর তুলনায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা বেশি সরব। বিএনপি সমর্থক প্রার্থীরা নতুন করে মামলার ভয়ে কৌশল করে প্রচারণায় চালিয়ে যাচ্ছেন। উপজেলা জামায়াতের নেতৃত্বের অভাবে তারা এখনও পৌর নির্বাচনে নিজেদের প্রার্থীর বিষয়ে মুখ না খোলায় সম্ভাব্য প্রার্থীরাও রয়েছে গোপনে। ১৯৯৭ সালে সাঁথিয়া পৌরসভা প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর ৩ বার নির্বাচন হয়েছে। এর মধ্যে দুই দুই বার মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা মিরাজুল ইসলাম মিরাজ। আসন্ন পৌর নির্বাচনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রায় ১ ডজন মেয়র প্রার্থী ও শতাধিক কাউন্সিলর প্রার্থী নির্বাচনের জন্য গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। বর্তমান মেয়র মিরাজুল ইসলাম প্রামানিক দু’বার নির্বাচিত হয়ে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের টিকিটে নির্বাচন করায় তিনি বিপুল ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হয়েছিলেন। এবারও তিনি আশাবাদী আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েই নির্বাচন করবেন। তার দাবি পর পর দু’বার নির্বাচিত হওয়ায় ‘গ’ শ্রেণির পৌরসভাকে ‘ক’ শ্রেণিতে উন্নীত করা অর্থাৎ তৃতীয় শ্রেণির পৌরসভাকে প্রথম শ্রেণিতে উন্নীত করায় দল তাকেই মনোনয়ন দেবেন। তাছাড়া এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন করায় জনগণ পুনরায় তাকে নির্বাচিত করবেন বলে তিনি আশাবাদী।এছাড়াও আওয়ামী লীগের পক্ষে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ দেলোয়ার সম্ভাব্য দলীয় প্রার্থী হিসেবে এলাকায় ব্যাপক গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি একজন পরিছন্ন মেয়র প্রার্থী হিসেবে ইতোমধ্যে এলাকায় নিজেকে প্রকাশ করতে সমর্থন হয়েছে। তিনি বলেন, দলীয় হাই কমান্ডের গ্রিন সিগন্যালের ফলেই আমি আওয়ামী লীগ প্রার্থী হিসেবে গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছি। আমি মেয়র নির্বাচিত হলে দুর্নীতি, মাদক ও সন্ত্রাসমুক্ত আধুনিক পৌরসভা এবং পৌরবাসীর প্রাপ্য সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করব। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তপন হায়দান সান দলীয় মনোয়ন লাভের জন্য চেষ্টা করছেন। তিনি ইতোমধ্যে প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে মনোভাব ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেন, দলীয় মনোনয়ন পেলেই নির্বাচন করবো। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী আরেক প্রার্থী উপজেলা বিআরডিবির চেয়ারম্যান ও পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম বাচ্চু। আওয়ামী লীগের হয়ে দলের প্রবীণ নেতা সাবেক উপজেলা আ. লীগের কৃষকলীগ সভাপতি নফিজউদ্দিন সরকার দলবল নির্বিশেষে সকলের দোয়া চেয়ে গণসংযোগ করে বেড়াচ্ছেন। তিনি জনগণের ভোটে বিজয়ী হওয়ার আশাবাদী।বিএনপি থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী সাবেক পৌর কাউন্সিলর ও বর্তমান পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় ও জেলা বিএনপির গ্রিন সিগনাল পাওয়ার পর আমি জনগণের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ভোট ও দোয়া চাচ্ছি। সিরাজুল বলেন, আমি তাঁতী সম্প্রদায়ের সন্তান। পৌরসভায় তাঁতী সম্প্রদায়ের ভোটার সংখ্যা প্রায় শতকরা ২৫ ভাগ। এদের সমর্থন পাব বলে আমার বিশ্বাস। সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন হলে বিজয় আমার সুনিশ্চিত। সাঁথিয়া উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও পৌর বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মরহুম মকবুল হোসেন মুকুল এর ছেলে পৌর ছাত্রদলের সাবেক নেতা ও সাংবাদিক আশিক ইকবাল রাসেলও মেয়র প্রার্থিতা ঘোণিা করে গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, পৌরসভায় আমার বাবার যথেষ্ট অবদান রয়েছে। তার ছেলে হিসেবে গণসংযোগে আমি ভোটারদের যথেষ্ট সাড়া পাচ্ছি। বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী মকবুল হোসেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ভোট ও দোয়া প্রার্থনা করছেন। এছাড়া সাঁথিয়া ইউনিয়নের সাবেক প্রেসিডেন্ট মরহুম আব্দুল জব্বারের ছেলে নুরুজ্জামান সরকার ইঞ্জিলও গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। সুজানগর পৌরসভা :পাবনার সুজানগর পৌরসভা নির্বাচনে সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থীদের প্রচারণায় নির্বাচনী মাঠ সরগরম হয়ে উঠছে। নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা না হলেও ডিসেম্বর মাসের শেষ দিকে নির্বাচন অনুষ্ঠানের সম্ভাবনাকে মাথায় নিয়ে প্রার্থীরা ব্যাপকভাবে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন। সম্ভাব্য প্রার্থীরা পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে পোস্টার, ব্যানার এবং বিলবোর্ড টাঙ্গিয়ে প্রচারণা চালানোর পাশাপাশি ব্যাপকভাবে গণসংযোগ করেছেন। এদের মধ্যে দু’একজন প্রার্থীকে আবার মাঝে মধ্যেই পৌরসভার প্রধান প্রধান সড়কে শো-ডাউন করতে দেখা যাচ্ছে। বিশেষ করে এ নির্বাচন দলীয়ভাবে হওয়ায় সরকারি সিদ্ধান্তের পর প্রার্থীরা শো-ডাউনের মাধ্যমে তাদের জনসমর্থন এবং জনপ্রিয়তা প্রদর্শন করছেন। সেই সঙ্গে তারা বিভিন্ন ওয়ার্ডে ছোটখাট নির্বাচনী সভা-সমাবেশও করছেন। পাশাপাশি প্রার্থীরা দলীয় মনোনয়নের জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্য ও দলের হাইকমান্ডের কাছে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। তবে নির্বাচনী প্রচারণায় আওয়ামী লীগ সমর্থক প্রার্থীরা অন্যান্য দলের প্রার্থীদের চেয়ে এগিয়ে রয়েছেন। বিশেষ করে আওয়ামী লীগ সমর্থক ৩জন প্রার্থীর পাল্টা-পাল্টি শো-ডাউন ও প্রচারণায় নির্বাচনী মাঠ সরগরম হয়ে উঠছে। নির্বাচনে এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের ৭জন, বিএনপির ৩জন এবং জাতীয় পার্টির (এরশাদ) ১জন সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে। আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থীরা হলেন- বর্তমান মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন তোফা, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওহাব, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রেজাউল করিম রেজা, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহমুদুজ্জামন মানিক, সাধারণ সম্পাদক শাহীনুজ্জামান শাহীন, আওয়ামী লীগ নেতা আফছার আলী মোল্লা ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক সরদার রাজু আহমেদ। বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজম আলী বিশ্বাস, পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর মেয়র কামাল হোসেন বিশ্বাস এবং উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক শফিউল আলম বাবু প্রচারণা চালাচ্ছেন। জাতীয় পার্টির আলহাজ্ব মমতাজ উদ্দিনকে ইতোমধ্যে দলীয় প্রার্থী হিসেবে নাম ঘোষণা করা হয়েছে।  ভাঙ্গুড়া পৌরসভা : ভাঙ্গুরা পৌরসভার অলিগলিতে শোভা পাচ্ছে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নানা রংয়ের ব্যানার পোস্টার এবং বিলবোর্ড। হাটেঘাটে চা স্টলে সর্বত্র নির্বাচনী হাওয়া বইছে জোরে সোরে। এ পৌরসভায় আওয়ামী লীগ এর একাধিক প্রার্থী থাকলেও বিএনপির রয়েছেন একক প্রার্থী। এজন্য দলটি এখন পর্যন্ত ফুরফুরে মেজাজে। এখানে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকায় রয়েছেন পৌরসভার বর্তমান মেয়র আওয়ামী লীগের ইঞ্জিনিয়ার আবদুর রহমান প্রধান। এবারও তিনি প্রার্থী থাকবেন বলে ঘোষণা করেছেন। তবে নির্বাচনে আওয়ামী লীগে দলীয় সমর্থন প্রত্যাশীর তালিকায় রয়েছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য মকবুল হোসেনের ছেলে গোলাম হাসনায়েন রাসেল। রাসেল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। এছাড়া সাংগঠনিক সম্পাদক আজাদ খান প্রার্থিতার তালিকায় রয়েছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আব্দুল মালেক নান্নুর নাম শোনা যাচ্ছে। তবে বিএনপির একক প্রার্থী হিসেবে উপজেলা কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট মুজিবুর রহমান নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন বলে দলীয় সূত্র জাগো নিউজকে জানিয়েছেন। ফরিদপুর পৌরসভা : জেলার অন্যান্য পৌরসভার মত ফরিদপুরেও নির্বাচনী হাওয়া লেগেছে জোরে সোরে। ভাঙ্গুরার মত এ পৌরসভায় আওয়ামী লীগ এর একাধিক প্রার্থী থাকলেও বিএনপির রয়েছেন একক প্রার্থী। এজন্য এখানেও বিএনপি এখন পর্যন্ত ভাল মেজাজে। ফরিদপুর পৌরসভায় বর্তমান মেয়র আওয়ামী লীগ প্রার্থী খ ম কামরুজ্জামান মাজেদ দায়িত্ব পালন করছেন। আসন্ন নির্বাচনে মেয়র পদে তিনি আবারও প্রার্থী হচ্ছেন। মাজেদ উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি। তিনি ছাড়াও ক্ষমতাসীন দলের সমর্থনে প্রার্থী হতে চান পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল এহসান জন, আওয়ামী লীগ সমর্থক জাহাঙ্গীর আলম এবং উপজেলা কমিটির ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক আলহাজ্ব আসাদুজ্জামান আলাল। বিএনপির প্রার্থী হিসেবে পৌর বিএনপির সভাপতি আবদুল হাকিম খান প্রার্থিতা ঘোষণা করলেও পরে তিনি তা প্রত্যাহার করেন। সেক্ষেত্রে জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে এই পৌরসভায় এনামুল হককে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করা হবে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।  এসএস/এমএস

Advertisement