সৌরভ গাঙ্গুলিকে নিয়ে যে জল্পনা-কল্পনা চলছিল তার অবসান ঘটল মিঠুন চক্রবর্তীকে দিয়ে। কলকাতার ঐতিহাসিক ব্রিগেড ময়দানে বিজেপির সমাবেশে দলটিতে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগ দিয়েছেন ‘ফাটাকেষ্ট’ মিঠুন।
Advertisement
এনডিটিভি, টাইমস অব ইন্ডিয়ার মতো ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো জানায়, সমাবেশে যোগ দিয়ে রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির প্রচারাভিযান শুরু করছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। মোদির সমাবেশ শুরুর কিছু সময় আগে বিজেপিতে যোগ দেন মিঠুন।
নরেন্দ্র মোদির ব্রিগেড মঞ্চে ধুতি-পাঞ্জাবিতে ‘বাঙালিবাবু’ হয়েই আবির্ভূত হন মিঠুন চক্রবর্তী। মোদির সঙ্গে একই মঞ্চে ভাগ করে নেওয়াকে ‘জীবনের স্বপ্নের দিন’ হিসেবে ব্যাখ্যা করেন মিঠুন। সেই সঙ্গে ওই মঞ্চ থেকেই নিজের ছায়াছবির নাটকীয় সংলাপকে বিজেপির নতুন স্লোগান হিসেবেও তুলে ধরেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘আমি জলঢোড়াও নই, বেলেবোড়াও নই। আমি জাত গোখরো, এক ছোবলে ছবি।’ মিঠুন যখন বক্তৃতা করেন তখন মঞ্চে উপস্থিত হননি মোদি। পরে প্রধানমন্ত্রী বক্তৃতায় বলেন, ‘আজ এখানে বাংলার ছেলে মিঠুন চক্রবর্তী আছে। তার জীবনকাহিনি, সংঘর্ষ এবং সাফল্য চমকপ্রদ।’
Advertisement
কলকাতার আনন্দবাজার পত্রিকা জানায়, ব্রিগেডের মঞ্চে মিঠুনের ভাষণের আগাগোড়া ছিল নাটকীয়। তাকে দেখে চিৎকার করতে শুরু করেন উচ্ছ্বসিত বিজেপি কর্মী-সমর্থক। তা শুনে মিঠুন বলেন, ‘থোড়া খামোশ হো যাও, বোলনে তো দে।’ অর্থাৎ, একটু চুপ করুন, আমাকে বলতে দিন।
মিঠুনের বার্তায় শ্রোতারা চুপ করেন। এরপর নিজের উত্থানের ইতিহাস টেনে এনে আবেগে ঘা দেওয়ার চেষ্টা করেন তিনি। বলেন, ‘আজকের দিনটা আমার কাছে স্বপ্নের মতো। আমি আসছি, এমন একটা জায়গা থেকে যার দু’দিকটাই অন্ধ। আমি যেখানে থাকতাম, সেই জায়গার ঠিকানা লিখতে হতো— জোড়াবাগান থানার পিছনে। কিন্তু সে দিন স্বপ্ন দেখেছিলাম, আমি জীবনে কিছু করব। কিন্তু এই স্বপ্নটা দেখিনি যে, এই মঞ্চে, যেখানে দেশের বড় বড় নেতা রয়েছেন, যেখানে বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রের প্রধানমন্ত্রী আসছেন, সেখানে আমি উপস্থিত থাকব। এটা স্বপ্ন নয়তো কী?’
রাজনাীতিতে আসার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে মিঠুন বলেন, ‘আর একটা স্বপ্ন আমি দেখেছিলাম যে, আমি গরিবদের জন্য কিছু করব। আজ মনে হচ্ছে, কোথাও যেন সেই স্বপ্নটা দেখতে পাচ্ছি। এটা হবেই। কারণ স্বপ্ন শুধু দেখার জন্য নয়। তা সফল হওয়ার জন্যই আসে। কেউ যদি হৃদয় দিয়ে দেখে স্বপ্ন সফল হবেই।’
নিজেকে ‘গর্বিত বাঙালি’ হিসেবে তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন, রানি রাসমণি আসলে বাঙালি। যারা মানুষের হক কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করবে, সেখানে আমাদের মতো কিছু লোক বাধা হয়ে দাঁড়িয়ে যাবে।’
Advertisement
মিঠুনকে কাছে পেয়ে তার ছবির বিখ্যাত সংলাপ শুনতে চান অনেকেই। তা বুঝতে পেরে তিনি বলেন, ‘মারব এখানে লাশ পড়বে শ্মশানে, এই ডায়লগটা চলবে।’
উল্লেখ্য, ২৭ মার্চ পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচন শুরু হবে। আট দফার এই নির্বাচন শেষ হবে আগামী ২৯ এপ্রিল। ফলাফল ঘোষিত হবে আগামী ২ মে। এই নির্বাচন সামনে রেখে মিঠুনকে দলে ভিড়িয়ে চমক দিল বিজেপি।
এসএইচএস/জিকেএস