সামরিক অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে অন্যতম বড় বিক্ষোভ কর্মসূচিতে রোববার অন্তত দশ হাজার মানুষ মিয়ানমারের বিভিন্ন রাস্তায় জড়ো হয়েছেন। আগের রাতে বিক্ষোভের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নেতা ও সরকারবিরোধী কর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযান চালিয়েছে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী। খবর রয়টার্সের।
Advertisement
রোববার মিয়ানমারের শান অঞ্চলের লাশিও শহরে বিক্ষোভকারীদের ওপর কাঁদানে গ্যাস ও স্টান গ্রেনেড ছুড়েছে নিরাপত্তা বাহিনী। ঐতিহাসিক মন্দিরের শহর বাগানে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে গুলি ছুড়েছে। তবে তারা রাবার বুলেট নাকি তাজা গুলি ছুড়েছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
এসব ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। অন্য ছয়টি শহরের বিক্ষোভ শান্তিপূর্ণ ছিল বলে জানা গেছে।
মান্দালয় শহরের বিক্ষোভে সবচেয়ে বেশি লোকের সমাগম হয়েছে। পুলিশ ও সেনাবাহিনীর গুলিতে নিহতদের স্মরণে বিক্ষোভকারীরা বসে দুই মিনিট নিরবতা পালন করেছেন।
Advertisement
ইয়াঙ্গুনের অন্তত তিনটি স্থানে বিক্ষোভ সংঘটিত হয়েছে। এসব অঞ্চলের অধিবাসীরা জানান, পুলিশ ও সেনা সদস্যরা আগের রাতে কয়েকটি জেলায় অভিযান চালিয়ে গুলি ছুঁড়েছে। কিয়াকতাদা এলাকা থেকে অন্তত তিনজনকে আটক করা হয়েছে। কেন তাদেরকে আটক করা হয়েছে তা জানা যায়নি।
গ্রেফতারের সময় এক নারী চিৎকার করে বলতে থাকেন, ‘তারা আমার বাবা ও ভাইকে নিয়ে যেতে চাচ্ছে। কেউ কি আমাদের সাহায্য করবে না? আপনারা আমার বাবা ও ভাইকে স্পর্শ করবেন না। ওদের নিয়ে যেতে চাইলে আমাদেরও নিয়ে যান।’ গ্রেফতার হওয়া এই দু’জনের একজন পেশায় অভিনেতা, আরেকজন তার ছেলে।
সেনাবাহিনী একজন আইনজীবীর খোঁজও করছিল যিনি অং সান সুচির দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) পক্ষে কাজ করেছিলেন। তবে সেনা সদস্যরা তাকে খুঁজে পায়নি।
এ বিষয়ে পুলিশের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। সেনা সরকারের মুখপাত্রকে রয়টার্স থেকে ফোন করা হলে তিনি সাড়া দেননি।
Advertisement
গত ১ ফেব্রুয়ারি সামরিক অভ্যুত্থানের পরপরই মিয়ানমারের সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী, শ্রমিক, শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ সর্বস্তরের পেশাজীবীরা কাজে ইস্তফা দিয়ে রাজপথে বিক্ষোভ শুরু করেন।
শান্তিপূর্ণ এই বিক্ষোভ অত্যন্ত সহিংসভাবে দমনের চেষ্টা চালাচ্ছে সামরিক সরকার। এ পর্যন্ত নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে ৫০ জনেরও বেশি বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন। শনিবার পর্যন্ত জান্তা সরকার ১৭শরও বেশি মানুষকে আটক করেছে।
এমকে/এমএস