ফিচার

মানুষের সেবায় কাজ করছে সেইফ ফাউন্ডেশন

দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মানবসেবামূলক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী ও শিক্ষার্থীরা মিলে সামাজিক সংগঠন গড়ে তোলেন। সমাজের মানুষদের বিভিন্ন সমস্যায় সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয় তাদের গড়া এসব সংগঠন। তেমনই একটি সংগঠন ‘সেইফ ফাউন্ডেশন ফর সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট’।

Advertisement

এ সংগঠনের কাজের মধ্যে রয়েছে- অসহায়দের মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ, চিকিৎসা সহায়তা প্রদান, খাদ্যসামগ্রী বিতরণ, রক্তদান কর্মসূচি, বৃক্ষরোপণ ও শীতবস্ত্র বিতরণ। জাগো নিউজের সঙ্গে কথা হচ্ছিল সংগঠনের সভাপতি নিজামউদ্দিনের। তিনি শোনালেন তাদের এগিয়ে যাওয়ার গল্প।

সময়টি ছিল ২০১৪ সাল। বন্ধুদের নিয়ে নিজামউদ্দিন বেড়াতে যান নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার চর মহিউদ্দিন গ্রামে। সেখানে দেখতে পান অর্থের অভাবে অধিকাংশ শিশু পড়ালেখা থেকে বঞ্চিত। বিষয়টি তার মনে দাগ কাটে। তখনই সুবিধাবঞ্চিতদের মাঝে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে বন্ধুদের নিয়ে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন গড়ে তোলার উদ্যোগ নেন। শুরু হলো সংগঠনের যাত্রা। কাজের শুরু শিক্ষা উপকরণ বিতরণ দিয়ে।

রাজধানীর উত্তরায় সংগঠনটির অফিস। কাজ করেন ২০ জন স্বেচ্ছাসেবক। সবাই চাকরিজীবী। তাদের দেওয়া চাঁদায় চলে সব কার্যক্রম। ২০১৪ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ৬৩২ জন শিক্ষার্থীর মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণে করেছে সংগঠনটি। এ বিষয়ে নিজামউদ্দিন বলেন, ‘আমরা প্রতিটি শিক্ষার্থীকে একবছর মেয়াদী শিক্ষা উপকরণ দিয়েছি। যারা সত্যিকারের সুবিধাবঞ্চিত, তাদেরই আমরা সহায়তা করেছি।’

Advertisement

নিজামের ভাষ্যমতে, ‘করোনাকালে অর্থের অভাবে খুব বেশি কাজ করতে পারেনি সংগঠনটি। তারপরও ২৫০টি পরিবারের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। সদস্যদের চাঁদা ৫০ টাকা। তবে আমরা কোনো ইভেন্ট করতে গেলে সামর্থ অনুযায়ী নির্ধারিত চাঁদার বাইরেও টাকা দিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করি। করোনাকালে আমরা অসহায়দের সাধ্যমতো সহায়তা করেছি।’

চিকিৎসা সহায়তা সম্পর্কে তিনি জানান, কোনো রোগী দীর্ঘমেয়াদী চিকিৎসা নিতে চাইলে তাদের সংগঠন থেকে অর্থনৈতিক সহায়তার পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের সাথে আলোচনা করে কম খরচে চিকিৎসা নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। রোগবালাই হলে অনেকের ওষুধ কিনে খাওয়ার সামর্থ থাকে না। তাদের ওষুধ কিনতেও সহয়তা করে সেইফ ফাউন্ডেশন।

এ ছাড়াও সামাজিক এ সংগঠনের মাধ্যমে বেকারদের চাকরির ব্যবস্থা, নতুন উদ্যোক্তাদের অর্থনৈতিক সহায়তা দেওয়া হয়। এ সম্পর্কে নিজামউদ্দীন বলেন, ‘অনেকেই আছেন গ্রাজুয়েশন শেষ করে চাকরি পান না। তাদের আমরা চাকরি পেতে সাধ্যমতো সহায়তা করি। তাছাড়াও অসহায় অনেক কৃষক আছেন, তাদের গরু কিনে দেই। যাতে তারা দুধ বিক্রি করে স্বাবলম্বী হতে পারেন।’

এখন পর্যন্ত সেইফ ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে শীতকালে উষ্ণতার পরশ পেয়েছে ১ হাজারেরও বেশি মানুষ। মুমূর্ষু রোগীদের রক্তের ব্যবস্থা করে দিতেও সরব ভূমিকা পালন করেছে সংগঠনটি। তাদের মাধ্যমে ৫১ জন রোগী রক্ত পেয়েছে। ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে নিজামউদ্দীন বলেন, ‘আমরা সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে চাই। বৃদ্ধাশ্রম, পাঠাগার, দাতব্য চিকিৎসালয়, অনাথ স্কুল, প্রতিবন্ধীদের কর্মসংস্থান নিয়ে পরিকল্পনা আছে।’

Advertisement

এসইউ/এমএস