ঠাকুরগাঁও শহরের ঘোষপাড়া এলাকার মিন্টু আহমেদ। পেশায় ব্যবসায়ী। শহরের ২১০০ স্কয়ার ফিট আয়তনের ৫ তলা ছাদে ২০০টি টবে দেশি-বিদেশি ফুল, ফল ও সবজির গাছ লাগিয়ে ছাদকৃষি গড়ে তুলেছেন তিনি।
Advertisement
মিন্টুর মতো অনেকেই এখন ছাদকৃষিতে মনোযোগী হয়েছেন। সারাবছরই ফুল-ফল, শাক-সবজি চাষ করছেন তারা। শহরে শতাধিক ভবনে ছাদকৃষির তথ্য পাওয়া গেছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, ঠাকুরগাঁওয়ে শতাধিক ভবনে ছাদকৃষি আছে। প্রতিটি ছাদে ৬০-৩০০ ফুল ও ফলের গাছ আছে। তবে শহরের ঘোষপাড়া, হাজীপাড়া, শাহাপাড়া, সরকারপাড়া, ইসলামনগর এলাকায় ছাদকৃষিতে আগ্রহী মানুষের সংখ্যা বেশি।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক আফতাব হোসেন বলেন, ‘এতে ছাদ সব সময় ঠান্ডা থাকে। এছাড়া পরিবেশ রক্ষা, পারিবারিক চাহিদা পূরণ ও পুষ্টির জোগান হয়। যারা ছাদকৃষি শুরু করেছেন; তাদের জন্য কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছে। টবে পানি জমতে না দিয়ে নিয়মিত পরিচর্যার করতে হবে।’
Advertisement
সরেজমিনে জানা যায়, কয়েক রকমের আম, জাম, কমলা, মাল্টা, পেয়ারা, কামরাঙ্গা, জাম্বুরা, সফেদা, তেঁতুল, আঙুর, ড্রাগন, করমচা। শাক-সবজির মধ্যে লাউ, টমেটো, শসা, তরই, ক্যাপসিকাম, কারিপাতা, লেটুস পাতা ও ধনেপাতা।
ওষধি গাছের মধ্যে রয়েছে অ্যালোভেরা, তুলসি, আমলকি, অর্জুন। ফুলের মধ্যে আছে ক্যাকটাস, ডালিয়া, নাইটকুইন, অর্কিড, কাটামুকুট, অপরাজিতা ইত্যাদি। আঙুর ফলের মাচায় ঝুলছে শসা, লাউ আর তরই।
মিন্টু বলেন, ‘২০১৫ সালে কয়েকটি ফুলের গাছ দিয়ে শুরু করেছিলাম। তারপর আস্তে আস্তে সবজি ও ফল গাছ লাগাই। পরিমাণে কম হলেও বছরের সব সময়ই কোনো না কোনো গাছের ফল খেতে পারি।’
গোয়ালপাড়া এলাকার তুহিন প্রধান জানান, তিনি বেশ কিছুদিন ধরে বাড়িতে থাকায় ছাদ বাগানের যত্ন নিতে পারছেন।
Advertisement
ঠাকুরগাঁও পৌর মেয়র মির্জা ফয়সল আমিন বলেন, ‘ঠাকুরগাঁও শহরে দুই তলা থেকে শুরু করে পাঁচতলা ৩ শতাধিক ভবন আছে। ছাদকৃষি পরিবেশ রক্ষায় বড় ভূমিকা রাখে।’
জেলা প্রশাসক ড. কামরুজ্জামান সেলিম বলেন, ‘ইতোমধ্যে ছাদকৃষির ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। জেলার সব সরকারি অফিসের ছাদে এ ছাদকৃষি গড়ে তুলতে কাজ করছে জেলা প্রশাসন।’
তানভীর হাসান তানু/এসইউ/এমকেএইচ