ফিচার

অদ্ভুত যেসব কাজ করে তারা বিশ্বরেকর্ড গড়েছেন

বিশ্বে অনেকেই রয়েছেন, যারা অদ্ভুত সব কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বিশেষ খ্যাতি অর্জন করেছেন। সেসব কর্মকাণ্ড হয়তো সাধারণ মানুষের পক্ষে করা ততটা সহজ নয়। আর এ কারণেই নিজ নিজ কর্মগুণে এসব মানুষ গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ডেও নাম লিখিয়ে বিশ্বরেকর্ড গড়েছেন।

Advertisement

এদের মধ্যে একজন আছেন, যিনি নিজের শরীরের চামড়া ধরে টানতে পারেন। একজন দীর্ঘ নখ রেখে বিশ্বরেকর্ড গড়েছেন; আরেকজন দীর্ঘতম গোঁফ রেখে। এক দম্পতি টানা ২ দিন চুমু খেয়েছেন।

এক নারী তো বিশ্বের দীর্ঘতম পায়ের অধিকারীনি। এক পরিবারের সব সদস্যই লোমবহুল। নারী-পুরুষ ভেদে সে পরিবারের সবার মুখে এমনকি পুরো শরীরে অবাঞ্ছিত লোমে ঢাকা। তেমনই কয়েকজন দৃষ্টান্ত সৃষ্টিকারী ব্যক্তিদের সম্পর্কে জেনে নিন-

গ্যারি টার্নার

Advertisement

বিরল এক রোগে আক্রান্ত এ ব্যক্তি। এহলারস-ড্যানলস সিনড্রোম নামক বিরল রোগের কারণেই এ ব্যক্তি বিশ্বরেকর্ড গড়তে পেরেছেন। ব্রিটিশ নাগরিক গ্যারি টার্নার তার পেটের চামড়া ৬.২৫ ইঞ্চি পর্যন্ত টানতে পারেন। এ রোগটি মূলত সংযোজক-টিস্যুর ব্যাধি। যেখানে কোলাজেনটি ত্রুটিযুক্ত হয়ে ওঠে। যার ফলে শরীর থেকে চামড়া অনায়াসেই টেনে ধরা যায়।

এ বিষয়ে টার্নার বলেন, ‘যখন চামড়া অনেক জোরে টেনে থাকি; তখনও আমার ব্যথা লাগে না। ছোট থেকেই আমি এ ব্যাধিতে আক্রান্ত হওয়ায় বিশেষ এ দক্ষতা গ্রহণ করেছি। তবে শারীরিকভাবে আমি বিভিন্ন সমস্যায় ভুগে থাকি আমার বিরল রোগটির জন্য’।

ইলাইন ডেভিডসন

অসংখ্যবার শরীরে ফুটো করেছেন এ নারী। সাধারণ মানুষের পক্ষে এ বিষয়টি অতটা সহজ নয়। তবে ইলাইন তা করে দেখিয়েছেন। সর্বোচ্চ সংখ্যকবার তিনি নিজের শরীরে পিয়ার্সিং করিয়েছেন। ১৯৯৭ সালের জানুয়ারিতে তিনি প্রথম তার শরীরে ছিদ্র করেন। ব্রাজিলিয়ান এ নারী একসময় রেস্তোঁরার মালিককে ছিল।

Advertisement

৮ ই জুন ২০০৬ সাল পর্যন্ত মোট ৪,২২২ বার নিজের শরীরে ছিদ্র করেছেন এ নারী। এসব ছিদ্রে নানা ধরনের গয়না পড়ে থাকেন তিনি। শুধু ছিদ্রই নয়, শরীরে অসংখ্যবার ট্যাটুও করেছেন এ নারী। এমনকি জিহ্বার মধ্যেও বর একটি ছিদ্র করেছেন তিনি। এসব কারণেই তিনি গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ডে নাম লিখিয়েছেন।

লি রেডমন্ড

আমেরিকান লি রেডমন্ড বিশ্বের দীর্ঘতম নখ রেকর্ডধারী হিসেবে আখ্যা পান। টাসা ৩০ বছর তিনি নখ কাটেননি। এ সময়কালের মধ্যে তার নখ লম্বায় ২৮ ফুট, সাড়ে ৪ ইঞ্চি পর্যন্ত বেড়ে ওঠে। ২০০৮ সালে রেডমন্ড তার বিশালাকার নখের জন্য বিশ্বরেকর্ড গড়েন।

ব্যতিক্রমধর্মী এ ইচ্ছা প্রসঙ্গে রেডমন্ড জানান, ‘আমি ১৯৭৯ সাল থেকে নখ বড় করতে শুরু করি। যদিও অনেক কষ্ট সহ্য করতে হয়েছে। নখ যাতে ভেঙে না যায় এজন্য অনেক যত্ন করতে হয়েছে’। দুর্ভাগ্যক্রমে, ২০০৯ সালে এক গাড়ি দুর্ঘটনায় তার হাতের সব নখ ভেঙে যায়।

রাম সিং চৌহান

বিশ্বের সবচেয়ে লম্বা গোঁফের অধিকারী হলেন রাম সিং চৌহান। তিনি ভারতের নাগরিক। ২০১০ সালের ৪ মার্চ, ইতালির রোমে, ‘লো শো দেই রেকর্ড’ নামক একটি ইতালিয়ান টিভি শো’তে তার গোঁফ মাপা হয়। শুনে অবাক হবেন যে, তার গোঁফ লম্বায় ৪.২৯ মিটার বা ১৪ ফুট।

রাম সিংয়ের মতে, ‘অনেক মেহনত করে গোঁফগুলো বড় করতে হয়েছে। এজন্য বিশেষ সব তেল ব্যবহার করেছি গোঁফে। গোঁগুলো পরিষ্কার রাখতে হয় নিয়মিত। গোঁফগুলোর যত্ন নেওয়া বেশ কঠিন। তবে ঠিকই মানিয়ে নিয়েছি।’

 

স্বেতলানা পঙ্ক্রাটোভার

এ নারীর পা দু’টি অন্য সবার চেয়ে দ্বিগুণ। ছোটবেলা থেকেই তার পা সাধারণ শিশুদের তুলনায় অনেকটা বড় হতে শুরু করে। এ কারণে তিনি সমবয়স্কদের চেয়েও দ্রুত লম্বা হতে শুরু করেন।

রাশিয়ান এ নারী ২০০৩ সালের ৮ জুলাই, আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্বের দীর্ঘতম পায়ের অধিকারিনী হিসেবে বিশ্বরেকর্ড গড়েন। তার পায়ের উচ্চতা ৫১.৯ ইঞ্চি (প্রায় 4 ফুটেরও বেশি)।

ন্যান্সি সিফকার

পা দিয়েই নিশানা ছুঁড়েন এ নারী। বিরল এ দক্ষতার কারণে তিনি বিশ্বরেকর্ড গড়েছেন। ন্যান্সি সিফকার পা ব্যবহার করেই ২০ ফুট দূরের কোনো লক্ষ্যবস্তুতে তীর চালাতে পারেন। ২০১৩ সালের ২০ জুন, ক্যালিফোর্নিয়ার লস অ্যাঞ্জেলেসে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম লেখান তিনি।

দীর্ঘতম চুমু

প্রিয়জনকে ভালোবেসে তো চুম্বন করাই যায়! তাই বলে ৫৮ ঘণ্টা ৩৫ মিনিট ৫৮ সেকেন্ড। কখনো ভাবতে পারেন, দু’জন মানুষ এতো সময় ধরে টানা কীভাবে চুম্বন করতে পারেন। অবিশ্বাস্য হলেও সত্যিই এমন দুর্লভ ঘটনা ঘটিয়ে বিশ্বরেকর্ড গড়েছেন এক দম্পতি।

থাইল্যান্ডের এক দম্পতি এক্কাচায়ে এবং লাকসানা তিরনারত টানা ২ দিন চুম্বনরত ছিলেন। ২০১৩ সালের ১২-১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ‘রিপলির বিলিভ ইট অর নট’ অনুষ্ঠানে তারা বিশ্বের দীর্ঘতম চুম্বন করে রেকর্ড গড়েন।

স্কুপহুপ/জেএমএস/জেআইএম