নৌকার ব্যাজ পরে ব্যালেট পেপারে সিল মেরে তা বাক্সে ফেলার আগে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি করেছেন এক ইউপি চেয়ারম্যান। ফেসবুকে এ নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। জেলা নির্বাচন অফিস বলছে বিষয়টি তদন্ত করা হবে।
Advertisement
ওই ইউপি চেয়ারম্যান জেলার দেবিদ্বার উপজেলার গুনাইঘর (দক্ষিণ) ইউনিয়নের দুইবারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান আবদুল হাকিম। তিনি একই ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সভাপতি।
গত রোববার (২৮ ফেব্রুয়ারি) ওই উপজেলার চেয়ারম্যান পদে উপ-নির্বাচন চলাকালে এ ঘটনা ঘটে। ছবিটি চেয়ারম্যানের নামে থাকা ফেসবুক আইডিতে পোস্ট করার পরই বিতর্কের ঝড় ওঠে। সোমবার বিকেলে চেয়ারম্যান বিষয়টি স্বীকারও করেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত রোববার দেবিদ্বার উপজেলার ১১৪টি ভোট কেন্দ্রে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। গুনাইঘর (দক্ষিণ) ইউনিয়নের দুইবারের নির্বাচিত ও বর্তমান চেয়ারম্যান আবদুল হাকিম আওয়ামী লীগের দুই নেতাকে সাথে নিয়ে গলায় নৌকা মার্কার ফিতা ও ব্যাজ পরে তার ইউনিয়নের মাশিকাড়া উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট প্রদান করতে যান। এ
Advertisement
সময় তিনি নির্বাচনী বিধি ভেঙে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের সামনেই সিলমারা ব্যালট পেপারের ছবি তুলে তার তার নামে থাকা ফেসবুক আইডিতে আপলোড করেন। এতে লেখা হয় ‘আলহামদুলিল্লাহ। প্রাণের নৌকায় ভোট দিলাম।’
এ সময় তার সাথে ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য বাদল মুন্সী ও ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আমির হোসেন ভূইয়া। এর মধ্যে বাদল মুন্সীর হাতে সিল মারা ব্যালট পেপার ছিল।
এদিকে বিধি লংঘন করে দলীয় নেতাদের নিয়ে ভোট কক্ষে প্রবেশ করে এভাবে ফটোসেশনসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নৌকার সিল মারা ছবি ফেসবুকে আপলোডের বিষয়টি নিয়ে অনেকেই নেতিবাচক মন্তব্য করেছেন।
স্থানীয় সাংবাদিক সাহিদুল ইসলাম লিখেছেন, ‘এখনতো আপনার বিরুদ্ধে মামলা হবে, ভোট একটি গোপন মতামত প্রকাশের মাধ্যম, তাহা প্রকাশ্যে প্রদর্শন আইনগত দণ্ডনীয় অপরাধ।’
Advertisement
সোহেল গাজী নামের এক ব্যক্তি লিখেছেন, ‘কাকা কয়বার দিলেন?’
ওই কেন্দ্রে নৌকা প্রতীক ৩৪৭ ও ধানের শীষ পায় ১২শ।
ভোটকক্ষে দাঁড়িয়ে সিল মারা ব্যালট পেপার নিয়ে ছবি তোলা প্রসঙ্গে আবদুল হাকিম মুঠোফোনে বলেন, সাথে থাকা দলের দুই সিনিয়র নেতার অনুরোধে তিনি ছবি তুলেছেন। তার ভাতিজা ফয়সাল ছবিটি ফেসবুকে পোস্ট করেছে। তিনি ফেসবুক চালাতে পারেন না বলেও জানান।
এ বিষয়ে সোমবার বিকেলে জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, গোপন কক্ষে ব্যালট পেপারে সিল মেরে তা নির্ধারিত বাক্সে ফেলার বিধান। কিন্তু প্রকাশ্যে এনে ছবি তুলে তা আবার ফেসবুকে পোস্ট করা আইনগতভাবে দণ্ডনীয় অপরাধ। একজন নির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান তা করে থাকলে তা নিশ্চিত দণ্ডনীয় অপরাধ করেছেন। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।
কামাল উদ্দিন/এফএ/জেআইএম