কুষ্টিয়ার খোকসায় গৃহবধূকে লাগাতার হয়রানির অভিযোগে এক পুলিশ সোর্সকে পিটিয়ে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে এলাকাবাসী। রোববার (২৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে উপজেলা সদরের পৌরসভার কালীবাড়ি এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
Advertisement
পরিবারিক সূত্রে জানা গেছে, কয়েক বছর আগে উপজেলা সদরের রাজিনাথপুর গ্রামের এক ভ্যানচালক ও প্রান্তিক কৃষকের সঙ্গে বিয়ে হয় এই গৃহবধূর। তার স্বামীর বাড়ির পাশে এক মাদক কারবারী ধরাকে কেন্দ্র করে মুসলমান ওই গৃহবধূর সঙ্গে খোকসা থানা পুলিশের সোর্স সুমন শীলের সখ্য গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে এই সখ্য প্রেমের সর্ম্পক গিয়ে পৌঁছায়।
সম্প্রতি সোর্স সুমনের অত্যাচারের অতিষ্ট হয়ে গৃহবধূকে বাবার বাড়ি খোকসার কালীবাড়ি পাড়ায় পাঠিয়ে দেয় স্বামী। গৃহবধূ ও তার বাবা চার দফায় থানা পুলিশের কাছে সোর্স সুমনের বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগ করেন। তারা উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের কাছেও আবেদন করেন। তবে কোনো প্রতিকার পাননি।
অবশেষে রোববার দুপুরে সুমন থানা পুলিশের এক এসআই এর মোটরসাইকেল নিয়ে গৃহবধূর বাবার বাড়িতে এসে গৃহবধূকে তুলে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দেন। এসময় গ্রামবাসী পুলিশ সোর্সকে আটকে গণপিটুনি দেয়। খবর পেয়ে পুলিশের একটি দল সুমনকে হেফাজতে নিয়ে যায়।
Advertisement
এসময় গৃহবধূর পরিবারের লোকজন অভিযোগ দিতে থানায় যেতে চাইলে অভিযানের নেতৃত্বে থাকা পুলিশের এসআই রাজিব জানান পরে তাদের থানায় ডাকা হবে।
গৃহবধূর পরিবারসহ এলাকাবাসী অভিযোগ করেন, পুলিশ সোর্স সুমন হিন্দু সম্প্রদায়ের লোক। অথচ তিনি ওই গৃহবধূকে তুলে নিয়ে বিয়ে করার ঘোষণা দিয়েছে। এছাড়া গৃহবধূর দ্বিতীয় সন্তানটিকে নিজের বলেও দাবি করছেন সুমন। এলাকার পরিবেশ নষ্ট করায় গ্রামবাসী তাকে আটকে পুলিশে দিয়েছে।
গৃহবধূর মা অভিযোগ করেন, ইতোপূর্বে পুলিশ সোর্স সুমনের বিষয়ে থানায় অভিযোগ নিয়ে গেলে এএসআই গফুর মেয়ে সম্পর্কে অশ্রাব্য ভাষায় কথা বলেন।
সুমন জানান, রোববার দুপুরে তিনি কালিবাড়ী এলাকায় অন্য কাজে আসেন কিন্তু ওই গৃহবধূর বাপ-ভাই তাকে আটকে মারপিট করেছে।
Advertisement
সোর্স উদ্ধার অভিযানে নেতৃত্ব দেয়া পুলিশের এসআই রাজিব বলেন, থানা পুলিশের পক্ষ থেকে একাধিকবার সুমনকে কালিবাড়ি এলাকায় না যেতে নির্দেশ দেয়া হয়। তারপরেও সেখানে যাওয়ায় তাকে ধরে থানায় আনা হয়েছে। তিনি মোটরসাইকেলটি ধোয়ার জন্য সুমনকে দিয়েছিলেন। কিন্তু সুমন তা নিয়ে কোথায় গেছে তিনি জানতেন না।
এছাড়া অভিযোগ তদন্তের দায়িত্বে না থাকলেও নিজে উদ্যোগ নিয়ে স্থানীয় নেতাদের মাধ্যমে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করেছেন বলেও দাবি করেন পুলিশের এই এসআই।
আল-মামুন সাগর/এসএমএম/জেআইএম