সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকসহ বিভিন্ন ওয়েবসাইটে সেক্স টয় বিক্রির অভিযোগে করা মামলায় ছয়জনের দুদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
Advertisement
রোববার (২৮ ফেব্রুয়ারি) তাদের ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় পল্টন থানায় করা মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাদের ১০ দিনের রিমান্ড নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম মইনুল ইসলাম প্রত্যেকের দুদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
আসামিরা হলেন- রেজাউল আমিন হৃদয় (২৭), মীর হিসামউদ্দিন বায়েজিদ (৩৮), মো. সিয়াম আহমেদ ওরফে রবিন (২১), মো. ইউনুস আলী (৩০), আরজু ইসলাম জিম (২২) ও চক্রের প্রধান মো. মেহেদী হাসান ভূঁইয়া ওরফে সানি (২৮)।
রোববার দুপুরে রাজধানীর মালিবাগে সিআইডির সদর দফতরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সিআইডির সাইবার ক্রাইম কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টারের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. কামরুল আহসান বলেন, গত ৭ জানুয়ারি রাজধানীর মাস্টারমাইন্ড স্কুলের ‘ও’ লেভেলের এক ছাত্রীর ধর্ষণের ফলে মৃত্যু হয়। ময়নাতদন্তে জানা যায়, বিকৃত যৌনাচারের ফলে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মৃত্যু হয় তার। বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুসারে, তাকে নির্যাতনের সময় এক ধরনের ফরেন বডি ব্যবহার করা হয়েছিল।’
Advertisement
তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে সিআইডির সাইবার মনিটরিং এবং সাইবার ইনভেস্টিগেশন টিম ব্যাপক অনুসন্ধান শুরু করে। অনুসন্ধানে জানতে পারে, কয়েকটি সংঘবদ্ধচক্র নিজেদের পরিচয় গোপন রেখে বিভিন্ন ওয়েবসাইট ও ফেসবুক পেজে যৌন উদ্দীপক বিভিন্ন পণ্যের ছবি এবং ভিডিওসহ বিক্রির বিজ্ঞাপন দিচ্ছে। সাইবার মনিটরিং এবং সাইবার ইনভেস্টিগেশন টিম এ ধরনের কয়েকটি ওয়েবসাইট ও ফেসবুক পেজকে শনাক্ত করতে সক্ষম হয়। অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, এসব পণ্য বিক্রির আর্থিক লেনদেন হয় বিকাশ ও রকেটে।’
অনুসন্ধানে জানা যায়, ‘তারা বিদেশ থেকে বৈধ পণ্য আমদানির আড়ালে এসব নিষিদ্ধ পণ্য বাংলাদেশে নিয়ে আসছে। পরে ফেসবুক ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লোভনীয় বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে উচ্চমূল্যে বিক্রি করছে।’
তিনি বলেন, ‘ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে এসব পণ্য বিক্রির কার্যক্রম চলছে। যেমন- লাইকি, টিকটক ব্যবহার করে একটি ক্লোজ গ্রুপ তৈরি করে হোটেল, রেস্টুরেন্ট এবং ডিজে পার্টির আড়ালে এ ধরনের কর্মকাণ্ড চলছিল।’
আমদানি নিষিদ্ধ এসব পণ্য দেশে আসার ক্ষেত্রে কাস্টম কর্তৃপক্ষ দায়ভার এড়াতে পারে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে ডিআইজি মো. কামরুল আহসান বলেন, ‘এ ব্যাপারে অনুসন্ধান শুরু করেছি। বিষয়টি তদন্ত চলছে।’
Advertisement
ডিএনএ টেস্টের প্রতিবেদন ছাড়া ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করা হয়েছে এবং তার শরীরে ফরেন বডির উপস্থিতি ছিল কীভাবে তারা বুঝেছেন, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সিআইডির ডিএনএ টেস্ট এখনো চলছে এবং ময়নাতদন্তের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন এখনো আসেনি। ময়নাতদন্ত শেষে ঢাকা মেডিকেল কলেজের চিকিৎসকরা প্রাথমিকভাবে জানিয়েছিলেন, ওই ছাত্রীকে নির্যাতন করার সময় ফরেন বডির উপস্থিতি ছিল। তাতে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়ে তিনি মারা যান।’
দারাজ এসব সেক্স টয় খোলামেলাভাবে বিক্রি করছে কীভাবে— জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তদন্ত মাত্র শুরু করেছি। ওয়েবসাইটে যারা এসব বিক্রি করছে তাদের ফুটপ্রিন্ট আছে। এ বিষয়গুলো আমরা ধরে ধরে কাজ করবো।’
গতকাল মিরপুর থেকে ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে সেক্স টয়, পাঁচটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ ও ৯টি সিম কার্ড জব্দ করা হয়েছে। গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে পল্টন থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইন ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা করা হয়েছে।
জেএ/এমএসএইচ/এমকেএইচ